নিজস্ব প্রতিনিধি
শুধুমাত্র ১ জন দালালের মাধ্যমে ৫৯ টি অটোরিকসা স্ক্যাপকরণে বিআরটিএ অফিস বিপুল ঘুষ বাণিজ্যে করার গুরুতর অভিযোগ উঠেছে । ওই দালাল প্রতিটি অটোরিকসা গাড়ী থেকে ৫-৭ লাখ টাকা বিআরটিএ’ র উপ পরিচালক তৌহিদুল হোসেনের নামে আদায় করেছে।প্রকৃত অটোরিকসা মালিকেরা দালালের এই মহা অপকর্মে অসহায় হয়ে প্রতিকারের আশায় দিনক্ষণ ক্ষেপন করলেও কুলকিনারা পাচ্ছে না এরা। বিআরটিএ অফিসে মালিকের চেয়ে দালালের মূল্যায়ন বেশী বলে ভুক্তভোগীদের এন্তার অভিযোগ রয়েছে।দালালের ইশারায় এখানে সব কাজ হয়। দালাল টাকা নেয় কাজ করে দেয়, অনিয়মই এখানে নিয়ম ।বিআরটিএ’র কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা এখানে যেন দালালের হয়ে যত সব কাজ করে । সরকারী বেতন -ভাতা নেয় কিন্তু সরকারী নিয়মের তোয়াক্কা না করেই দালালের নিয়মেই কাজ করে ওরা ।সচেতন গাড়ী মালিকদের কাছে বিষয়টি দিবালোকের মতই সত্য।এসব যন্ত্রণা রেহাই অনেক শিক্ষিত ও প্রবাসী পরিবহন খাতে টাকা বিনিয়োগে আগ্রহ হারিয়ে ফেলছে ।দিনদিন দালালের দৌরাত্ব বাড়ছে, বাড়ছে ঘুষের পরিমাণও।
খবর নিয়ে জানা গেছে, ‘নিউ আল্লাহর দানের’ মালিক পরিচয়ে বিআরটিএ’র খাস দালাল জাহাঙ্গীর আলম ।আগে আকবর ও আলমগীর নামক দুই ব্যাক্তির সাথে ‘আল্লাহ দান’ প্রতিষ্ঠানে এই শীর্ষ দালাল জাহাঙ্গির কাজ করত।এরও আরো আগে রাজা মিয়ার হয়ে গাড়ী বেচাবিক্রি করত।একদিন হঠাৎ করে সে ‘নিউ আল্লাহ দান’ খুুলে বসে।ওই ‘নিউ আল্লাহ দান’ নামে বিআরটিএ অফিসে দালালী করে সে এখন কয়েক কোটি টাকার মালিক।
গত ২৬মে ১৫১ টি অটোরিকসা বিআরটিএ স্ক্যাপকরণ করা হয়।এখানেই একাই জাহাঙ্গীর স্ক্যাপকরণে করে ৫৯ টি।ওই স্ক্যাপকরণে অটোরিকসাতে চোরাই গাড়ী, ডকুমেন্টে বিশাল গোজামিল রয়েছে।একটি গাড়ী স্ক্যাপকরণে গড়ে ৬ লাখ টাকা করে নেয় সে।গত ২০মে থেকে ২৬ মে তার মোবাইল নাম্বারের সকল কথাবার্তা শুনলে বিআরটিএ’র দূর্নীতিবাজ কর্মকর্তা-কর্মচারী ও যেসব মালিকদের ৫-৭ লাখ টাকা ঘুষ নিয়েছে তাদের তথ্য বের হয়ে আসবে।একদিনেই ১৫১ টি গাড়ী স্ক্যাপকরণে ১০কোটি টাকার উপর লেনদেন হয়েছে বলে একটি সুত্র দাবী করছে। দুদকসহ বিভিন্ন সংস্হা এসব অনুসন্ধান চালালে তলের বিড়াল হয়ে আসবে বিভিন্ন সুত্র বলছে।
বিআরটিএ’র কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের কাউকে কত টাকা দিয়েছে তার সঠিক তথ্য সে কাউকে বলেনি।একেক জনকে একেক কথা বলেছে।সকল কাগজপত্র ঠিক থাকার পরও ৫-৭ লাখ ঘুষের টাকা দিতে না পারায় অসংখ্য মালিক গাড়ী স্ক্যাপকরণ করতে পারেনি এই ভয়াবহ অভিযোগ দালাল জাহাঙ্গীরের প্রতি। এইসব বিষয় জানার জন্য দালাল জাহাঙ্গিরকে পূর্ব বাংলা অফিস থেকে ফোন করা হয়। সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে তিনি বলেন ‘আমি এখন মসজিদে, মসজিদ থেকে বের হয়ে আপনাকে ফোন করব’ ।এর থেকে ফোনটি বিজি করে রাখা হয়। ২দিন পর অন্য নাম্বার থেকে ফোনে তাকে পাওয়া গেলেও তিনি কোন তথ্য দেবেন না বলে সাফ জবাব দেন এবং বলেন বিআরটিএ লোকজন বললেই আমি কথা বলব নইলে নয়।বার বার বলতে থাকেন আমি কেন জবাব দেব ? বিআরটিএ থেকে জবাব নেন।
জানা গেছে, এই জাহাঙ্গীরের বাড়ী চট্টগ্রামে নয়। তিনি ভোটার হয়েছেন পাহাড়তলী থানার সরাই পাড়া থেকে।তাজুল ইসলামের পুত্র এই জাহাঙ্গিরের মাতার নাম আমেনা বেগম। সে চট্টগ্রামে হালিশহর এলাকায় ৬ শত জায়গা কিনেছে ও তার রয়েছে দিনে লাখ টাকা আয়ের হোটেল ।ব্যাংকে রয়েছে বিপুল টাকাও।
জানা গেছে, এই দালাল জাহাঙ্গীর অবৈধ বিপুল টাকা কামিয়ে ধরাকে সরা জ্ঞান মনে করছে। এই বিষয়ে বিআরটিএ উপ পরিচালক তৌহিদুল ইসলামের মুঠোফোনে বার বার ফোন ও হোয়াটস আপে মেসেজ দিলেও কোন সাড়া পাওয়া যায়নি ।সরকারী চাকুরীজীবিরা ফোন রিসিভ না করলে সেবা প্রার্থীরা হয়রানী শিকার হবে স্বাভাবিক । অফিসে গিয়ে তোহিদুল ইসলাম সাহেবকে পাওয়া যায়নি ।প্রতি বিষুদবার তিনি অফিস করেন না বলে একাধিক সুত্রে জানা গেছে । এসব দেখার যেন কেউ নেই।