মো. আবদুর রহিম
বিশ্বের ইতিহাসে বহু রাষ্ট্রনায়ক তাদের কর্মগুণে স্মরণীয় ও বরণীয়। বাংলাদেশের সফল রাষ্ট্রনায়ক জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ও ইতিহাসে অমর কাব্যের রচয়িতা। তিনি স্বাধীন বাংলার ৫২ বছরের মধ্যে ২০ বছর রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসীন। এছাড়াও এ রাষ্ট্রনেতা ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ২০০১ এ তিন মেয়াদে মহান জাতীয় সংসদে প্রধান বিরোধী দলীয় নেতা হিসাবে মন্ত্রীর মর্যাদায় দায়িত্ব পালন করেন। ১৯৮১ এর ১৭ মে’র পর ২০০৪ সালের ২১ আগস্ট পর্যন্ত সফল এই রাষ্ট্রনায়ক ২১ বার মৃত্যুর মুখোমুখি হন। অলৌকিকভাবে প্রাণে বেঁচে থাকা জননেত্রী শেখ হাসিনা বিশ^ ইতিহাসে একজন কিংবদন্তীতুল্য সফল রাষ্ট্র নায়ক। তিনি মানবতার মা, দেশরত্ন ও নারীর ক্ষমতায়নে একজন মডেল ব্যক্তিত্ব। জননেত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে উন্নয়নশীল দেশের স্বীকৃতি আদায় করে বিশ্বের উন্নয়নের ‘রোল মডেল’ ও বিশে^র বিস্ময় খ্যাতি অর্জনে সক্ষম হয়েছেন। বর্তমানে জননেত্রী সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বাংলাদেশকে ‘স্মার্ট বাংলাদেশ’ এবং ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত বাংলাদেশ হিসাবে গড়ার লক্ষ্যে কর্ম পরিকল্পনা গ্রহণ এবং ২১০০ সালের উপযোগী বাংলাদেশ গড়ার লক্ষ্যে ব-দ্বীপ পরিকল্পনা, সুনীল অর্থনীতির পরিকল্পনা প্রণয়ন করে প্রজন্মের সামনে তুলে ধরেছেন। মানুষ মরণশীল, রাষ্ট্রীয় ক্ষমতা ও চিরস্থায়ী নয়। সে বিবেচনায় তিনি এত সব পরিকল্পনা করে রেখেছেন, যাতে আগামীর বাংলাদেশ গড়তে কারোর কোন সমস্যা না হয়। দার্শনিক রাষ্ট্রনায়ক শেখ হাসিনা দেশকে অর্থনৈতিকভাবে স্বাবলম্বী করতে অর্থনীতির নতুন চালক অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তোলার কাজে তিনি ব্যস্ত। জননেত্রী শেখ হাসিনার সরকার দেশের বিভিন্ন প্রান্তে ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ার লক্ষে কাজ করে চলেছেন। তাঁর লক্ষ্য পূরণে কাজ করছে বাংলাদেশ অর্থনৈতিক অঞ্চল কর্তৃপক্ষ (বেজা)। এই বেজা’র চেয়ারম্যান মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। বর্তমানে নির্বাহী চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন শেখ ইউসুফ হারুন। তাঁর থেকে প্রাপ্ত তথ্যে দেখা যায় ১০০টি অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সোমবার ১৭ এপ্রিল ২০২৩ খ্রি. পর্যন্ত অনুমোদিত অর্থনৈতিক অঞ্চল ৯৭টি। বেজার জমির পরিমাণ প্রায় ৬২ হাজার একর। উৎপাদনরত অর্থনৈতিক অঞ্চল ১০টি। বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল ২৯টি। সক্রিয় বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল ১২টি। ইতোমধ্যে বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলে বিনিয়োগ হয়েছে ৪.৫ বিলিয়ন ডলার। অর্থনৈতিক অঞ্চলে উৎপাদনশীল শিল্প-কারখানা ৩৮টি। অর্থনৈতিক অঞ্চলে নির্মাণাধীন শিল্প কারখানা ৭৮টি। আর কর্মসংস্থান প্রায় ৫০ হাজার।
বেজার নির্বাহী পরিচালক শেখ ইউসুফ হারুণের তথ্যে জানা যায়, বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চলগুলোর মধ্যে ৮টি এখন পর্যন্ত উৎপাদনে গেছে। তন্মধ্যে মেঘনা গ্রুপের অর্থনৈতিক অঞ্চলের মধ্যে সবচেয়ে বড় যে কারখানাটি হয়েছে সেখানে সাড়ে ৪ হাজার কোটি টাকা বিনিয়োগ হয়েছে। জাপানের বড় কোম্পানি হোন্ডাও বিনিয়োগ করেছে আবদুল মোনেম ইকোনমিক জোনে। সিটি গ্রুপের যে অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে উঠেছে, সেখানেও অনেক কারখানা স্থাপন হয়েছে, সেখানেও বিদেশি বিনিয়োগকারী রয়েছেন।
গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশ সরকার প্রধান সফল প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভিশন অর্থনৈতিক জোনে ২০৪১ সালে এককোটি মানুষের কর্মসংস্থান এবং ৪০ বিলিয়ন ডলারের সেবা ও পন্য উৎপাদন। বেজার বড় অর্থনৈতিক অঞ্চল চট্টগ্রামের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব শিল্পনগরী সেখানে ৪টি সহ ১০টি শিল্প প্রতিষ্ঠানের উৎপাদন এগিয়েছে। মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা এসব প্রতিষ্ঠান উদ্বোধন করেছেন। শ্রীহট্ট ইকোনমিক জোনে একটি প্রতিষ্ঠান উৎপাদনে গেছে। জি টু জি পদ্ধতিতে নারায়নগঞ্জের আড়াই হাজারে জাপানের যে অর্থনৈতিক অঞ্চলটি হচ্ছে সেখানেও কাজ চলছে। বেসরকারী ইকোনমিক জোনের মধ্যে আবুল মোনেম বিশ্বমানের সুবিধা দেয়ার লক্ষে কাজ করছে। রফতানি খাতে বৈচিত্র আনয়নে কাজ করছে মেঘনা অর্থনৈতিক অঞ্চল। ‘সিরাজগঞ্জে ইকোনমিক জোন’ সর্ববৃহৎ বেসরকারি অর্থনৈতিক অঞ্চল। এছাড়া দেশের শিল্পায়নে অনেক বড় ফুটপ্রিন্ট রাখতে সচেষ্ট সিটি গ্রুপ। এ সিটি গ্রুপের রয়েছে ৩টি অর্থনৈতিক অঞ্চল। মোট কথায় সরকারী ও বেসরকারি উদ্যোগে বাংলাদেশ চতুর্থ শিল্প বিপ্লবের দিকে হাটছে। বাংলাদেশের বর্তমান গণতান্ত্রিক ধারা অব্যাহত থাকলে এবং আসন্ন দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে সরকার গঠনে সক্ষম হলে চলমান মেগা প্রকল্পগুলো সমাপ্ত হলে এবং শিল্পজোনগুলোর উন্নয়ন যে এগিয়ে চলছে দার্শনিক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পরিকল্পনার বাস্তবায়ন আরো সহজ হবে এবং বাংলাদেশ অভিষ্ট লক্ষ্যে পৌঁছবে। দেশ ও জাতির স্বার্থে আসুন আমরা সব ভেদাভেদ ভুলে জননেত্রী শেখ হাসিনার সাথে ঐক্যবদ্ধ থাকি।