নোয়াখালীতে ছোট ভাইয়ের স্ত্রীর পরিকল্পিত হত্যাকান্ডের শিকার ভাসুর আমেরিকা প্রবাসী আকবর হোসেন বাবুল। হত্যকান্ডের ১৪দিন পর লাকসামে একটি জলাশয় থেকে উদ্ধারকৃত বস্তাবন্দী অজ্ঞাতনামা লাশটি আমেরিকা প্রবাসী আকবর হোসেন বাবুল (৫৫) নামে এক ব্যক্তির। তাকে পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী নির্মম হত্যা করা হয়েছিল। নিহত ওই ব্যক্তি নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার উলুপাড়া গ্রামের আলী আহম্মদের ছেলে। গত ২০১৭ সালে ১৪ আগষ্ট কুমিল্লার লাকসাম উপজেলার মুদাফফরগঞ্জ সড়কের নোয়াপাড়া এলাকার একটি জলাশয় থেকে অজ্ঞাতনামা বস্তাবন্দি একটি গলিত লাশ উদ্ধার করে লাকসাম থানা পুলিশ। এ হত্যাকান্ডের রহস্য উদঘাটনে পুলিশ প্রযুক্তি ব্যবহার করে চাঞ্চল্যকর তথ্য বের করেন। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা লাকসাম থানার ওসি আবদুল্লাহ আল মাহফুজ লাশের পরিচয় নিশ্চিত হওয়ার পর তারই সূত্র ধরে সন্দেহভাজনদের একটি তালিকা তৈরী প্রযুক্তির সহযোগীতা নিয়ে ওই হত্যাকান্ডের চাঞ্চল্যকর মোটিভ উদ্ধার করে মূল আসামীদের সনাক্ত করা হয়। আসামীদের স্বীকারোক্তিতে জানা যায়, ওই হত্যাকান্ডের দিন ১ আগষ্ট জায়গা জমি নিয়ে তাদের মধ্যে ঝগড়া বিবাদ হলে একই দিন রাতে লিপি আক্তার নিজে এবং তার নিয়োজিত ২০ হাজার টাকা চুক্তিতে নিয়োজিত সন্ত্রাসীদের নিয়ে একটি সিএনজি অটো রিক্সায় করে বাড়ীর সামনে থেকে ওই প্রবাসীকে কৌশলে অপহরণ করে পাশ্ববর্তী চাটখিল থানাধীন হালিমা দিঘীর উত্তর পাড়ে নির্জন স্থানে নিয়ে ছরিকাঘাত এবং কিল ঘুষি ও গলা চেপে ধরে হত্যা করে। পরে তার লাশ বস্তায় ভরে ওই স্থান থেকে কুমিল্লার মনোহরগঞ্জ থানাধীন চিতোষী রোড হয়ে লাকসাম মুদাফফরগঞ্জ সড়কের নোয়াপাড়া এলাকার একটি জলাশয়ে ফেলে চলে যায়।
লাকসাম থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা আবদুল্লাহ আল মাহফুজ জানান, গত ১৫ সেপ্টেম্বর এ ঘটনায় জড়িত ৫ আসামীর মধ্যে মূল পরিকল্পনাকারী ও বাস্তবায়নকারী লিপি আক্তার কাজল, অপর আসামী কামাল ও সিএনজি চালক সজিবকে লাকসাম থানা পুলিশ গ্রেপ্তার করে কুমিল্লা আদালতে প্রেরন করে। ঘটনার বিষয়ে কুমিল্লার আদালতে আসামীরা স্বীকারোক্তি মূলক জবানবন্দি দিলে আদালত তাদেরকে জেল হাজতে প্রেরন করে। যুক্তরাষ্ট্র প্রবাসী আকবর হোসেন বাবুল হত্যাকাণ্ডের ঘটনায় ৫ আসামির ফাঁসির রায় দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ আদালতের বিচারক নাসরিন জাহান এ আদেশ দেন।
দণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন— লিপি আক্তার, রহমত উল্লাহ রনি, কামাল হোসেন, তাজুল ইসলাম ও সজিব। তারা সবাই নোয়াখালী জেলার সোনাইমুড়ি উপজেলার উলুপাড়া গ্রামের বাসিন্দা। এ হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা নিহতের ছোট ভাইয়ের বউ লিপি আক্তার। অন্যরা এ হত্যাকাণ্ডের সহযোগী।