বারবার তাগাদা দেয়া সত্বেও ব্যবস্থা নেই , আশ্বাস দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে , জড়িতরা ঘুরছে বুক ফুলিয়ে
এতিমের টাকা মেরে দিয়ে উল্টো জমির প্রকৃত মালিকদের ফাঁসানোর চেষ্টা করা হচ্ছে বলে গুরুতর অভিযোগ উঠেছে। একই অভিযোগ চট্টগ্রাম এলএশাখার বিরুদ্ধেও। সার্ভেয়ারকে বসে নিয়ে আলোচিত নুরুল ইসলাম সহযোগি নবী হোসেন, আবদুর রহিম, শহীদরা জাল-জালিয়াতের মাধ্যমে চট্টগ্রাম এলএ শাখা হতে ৩৭ লক্ষ টাকার অধিক আত্মসাত করে। বিপুল পরিমান এই টাকা আত্মসাতের ব্যাপারে বারবার তাগাদা দেয়া সত্বেও জমির মালিকদের শুধু আশ্বাস দিয়ে ফিরিয়ে দেয়া হচ্ছে। জড়িত নবী হোসেনরা পার পেয়ে যাওয়ায় উল্টো জমির প্রকৃত মালিকদের নানাভাবে মিথ্যা মামলা দিয়ে সীমাহীন হয়রানী করা হচ্ছে বলে অভিযোগে জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।সহযোগি নুরুল ইসলাম জেলহাজতে থাকায় বর্তমানে নবী হোসেনরা বেপরোয়া ও বেসামাল হয়ে পড়ে।নবী হোসেন একজন ঝানু প্রতারক মাদক ব্যবসার সাথেও জড়িত বলে জানায় এলাকার লোকজন।রহিম বিদেশে পালিয়ে গেছে।ফোরকান জেলে থাকায় মফিজ সিন্ডিকেটের নেতৃত্বে সোলেমান আর্থিক সহায়তা দিচ্ছে বলে অভিযোগে জানায় ভুক্তভোগিরা।
সুত্র জানায়,বঙ্গবন্ধু কর্ণফুলী টানেল নির্মানের জন্য সরকার কর্ণফুলী নদীর পূর্ব প্রান্তে বন্দর, বৈরাগ, বেলচুড়া ও চাতরী মৌজায় বেশ কিছু জমি অধিগ্রহণ করা হয়। মুহাম্মদপুর গ্রামের বাসিন্দা মৃত আবদুল হামিদের পরিবারের কিছু জমিও অধিগ্রহণ করা হয়। এলএ ৩৫/২০১৭-১৮ মামলায় উক্ত পরিবারের ৮৮০ শতাংশ জমি অধিগ্রহণ করা হয়। মৃত আবদুল হামিদের কোন ছেলে নেই আছে তিন মেয়ে। এই সুযোগে তাদের মালিকানাধীন এই জমির প্রতি লোলপ দৃষ্টি পড়ে স্থানীয় টাউট নবীদের। বর্তমানে তেইন্যাপুত্রসহ চাঞ্চল্যকর আদালতের ডিক্রি জালিয়াতি মামলায় চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারাগারে বন্দি আছে বলে জানা গেছে। প্রতারক নবীরাএলএ শাখার দালাল ও সার্ভেয়ার কমল কান্তি দে’র সহায়তায় বেলচুড়া মৌজার ২৬০ দাগের জমির ক্ষতিপুরণের টাকা আত্মসাত করে বলে ভুক্তভোগি পরিবারের অভিযোগ।
গত বছরের ১৪মার্চ চট্টগ্রাম এলএ শাখা হতে নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা পুত্র ফোরকান,নবী হোসেন, আবদুর রহিমসহ অপরাপর সদস্যরা সুকৌশলে ওই দাগের জমির ক্ষতিপুরণের টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করে। এ ঘটনার পর জমির প্রকৃত মালিকদের বিরুদ্ধে উল্টো চার চারটি মিথ্যা ফৌজদারী মামলা দায়ের করে তেইন্যরা। আত্মসাতের এই টাকা দিয়ে তেইন্যা চারটি গরু জবাই করে মেজবানি উৎসব করে নিজেরাও খেয়েছেন অপর লোকজনকেও খাওয়াইছেন বলে জানা গেছে। ৩৪০শতাংশ জায়গার সমপরিমান টাকা ১৩লক্ষ ৯হাজার টাকা এবং সেতু মন্ত্রণালয় কর্তৃক মঞ্জুরীকৃত তিনগুন ক্ষতিপুরণের টাকাও গ্রহণ করে তেইন্যারা।তারা সর্বমোট ৩৭লক্ষ টাকার অধিক ভাগ ভাটোয়ারা করে আত্মসাত করেছে বলে অভিযোগ।বিপুল অংকের টাকা আত্মসাতের ঘটনাটি এলএ শাখার সার্ভেয়ার কমল কান্তি দে বারবার ধামাছাপা দেয়ার ব্যর্থ চেষ্টা চালায়। পরে বিষয়টি প্রকাশ হওয়ার পর জমির মালিকরা টাকা উদ্ধারের জন্য চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক এর মাধ্যমে এলএ শাখার ভুমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তার বরাবরে লিখিত অভিযোগ দায়ের করা হয়। যার স্মারক নং-২৫১২ তারিখ ৭/১১/২২ ইং। ক্ষতিগ্রস্থ ব্যক্তিদের অভিযোগের প্রেক্ষিতে কর্তৃপক্ষ টাকা উদ্ধার এর বিষয়টি তদন্তের ভার ন্যস্ত করা হয় সার্ভেয়ার শাখাওয়াত হোসেনকে। তিনি অদ্যবদি কোন ধরনের ব্যবস্থা নেয়নি বলে জানায় ক্ষতিগ্রস্থরা। চট্টগ্রাম এলএ শাখা হতে অবৈধভাবে টাকা আত্মসাত করা হলেও মুহাম্মদপুর গ্রামের মৃত মোঃ ইব্রাহিম প্রকাশ কালু মিয়ার পুত্র নবী হোসেন দলবল নিয়ে প্রায় সময় এলএ শাখায় সদর্পে বিচরন করছে নানা তদবির করছে। সন্ত্রাসী দিয়ে নানা জনকে হুমকি ধমকিও দিয়ে যাচ্ছে বলে জানিয়েছেন ক্ষতিগ্রস্থ বাবুল মিয়া।তার কোন জমিজমা নেই অধিগ্রহণও করা হয়নি। আবারও অন্যের জমি জাল-জালিয়াতের মাধ্যমে আত্মসাত করার জন্য এই প্রতারকের আনাগোনা বলে জানায় স্থানীয়রা।
স্থানীয় সুত্র জানায়, এক সময় নুরুল ইসলাম পরিবারের অন্যান্য সদস্যদের ওই দাগের কিছু জমির মালিকানা ছিল। তারা ওই জমি বিভিন্ন জনের কাছে রেজিষ্ট্রিযুক্ত কবলামুলে বিক্রি করে দেয় বহু আগে। সেটি গোপন করে দালাল চক্রের মাধ্যমে সার্ভেয়ার কমলকে বসে নিয়ে জাল-জালিয়াতের মাধ্যমে বিপুল পরিমান টাকা হাতিয়ে নেয় তারা। নুরুল ইসলাম ১৯৭৫সালে ৪৯ নম্বর ভুয়া রেজিষ্ট্রিযুক্ত কবলা দেখিয়ে প্রথমে এলএ শাখা হতে পুরো জমির টাকা হাতিয়ে নেয়ার চেষ্টা করে। জালিয়াতির ঘটনা প্রকাশ হলে এই নিয়ে বাপ-বেটার বিরুদ্ধে কবলা জালিয়াতি মামলা যার জিআর নং-২০৪/২১ দায়ের করা হলে নুরুল ইসলাম জেল হাজতে যায়। জামিনে মুক্ত হওয়ার কিছুদিনের মধ্যেই তারা এলএ শাখা হতে সুকৌশলে টাকা উত্তোলন করে আত্মসাত করে বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়। চট্টগ্রাম এলএ শাখার ভুমি অধিগ্রহণ কর্মকর্তা(এলও) এহসান মুরাদ এর কাছে এ বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি এই মুহুর্তে ডাক্তারের কাছে আছেন উল্লেখ করে ফোন কেটে দেয়ায় বক্তব্য নেয়া সম্ভব হয়নি। টাকা উদ্ধার এবং প্রতারক নবীরা ভবিষ্যত যাতে চট্টগ্রাম এলএ শাখা হতে টাকা আত্মসাত করতে না পারে সেজন্য তড়িৎ ব্যবস্থা নেয়ার দাবী জানিয়েছেন ভুক্তভোগিরা।