এই রাজনীতিকের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ত্রাণ ও সমাজ কল্যাণ সম্পাদক আমিনুল ইসলাম আমিন।
তাঁর মৃত্যুর খবরে রাজনৈতিক ও সামাজিক অঙ্গনে গভীর শোকের ছায়া নেমে এসেছে। বিভিন্ন মহল থেকে তাৎক্ষণিক শোক জানানো হয়েছে। সামাজিক মাধ্যমেও শোক প্রকাশ অব্যাহত আছে।
চট্টগ্রামের এই প্রবীণ নেতার মৃত্যুতে গভীর শোক জানিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা , সেতুমন্ত্রী ওবায়দুল কাদের এমপি, আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ও সাবেক মন্ত্রী ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন, তথ্য ও সম্প্রচার মন্ত্রী ড. হাছান মাহমুদ, ভুমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ, আওয়ামী লীগের অর্থ ও পরিকল্পনা সম্পাদক ওয়াশিকা আয়েশা খান, চট্টগ্রাম মহানগর আওয়ামী লীগ ভারপ্রাপ্ত সভাপতি বীর মুক্তিযোদ্ধা মাহতাব উদ্দিন চৌধুরী ও সাধারণ সম্পাদক সাবেক মেয়র আ জ ম নাছির উদ্দিন ।
এ ছাড়াও শোক প্রকাশ করেছেন চট্টগ্রাম উত্তর জেলা আওয়ামী লীগ সভাপতি এম এ সালাম ও সাধারণ সম্পাদক আতাউর রহমান, চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক মফিজুর রহমান, পেশাজীবী সমন্বয় পরিষদ, চট্টগ্রামের সভাপতি প্রফেসর ডা. এ কিউ এম সিরাজুল ইসলাম, সাধারণ সম্পাদক ও চট্টগ্রাম নাগরিক উদ্যোগ আহ্বায়ক সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী, চট্টগ্রাম শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক প্রফেসর আবু তাহের চৌধুরী, প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির সাধারণ সম্পাদক অঞ্চল চৌধুরী, সিইউজে সভাপতি তপন চক্রবর্তী ও সাধারণ সম্পাদক ম. শামসুল ইসলাম প্রমুখ নেতৃবৃন্দ।
জানা গেছে, মোছলেম উদ্দিন আহমদ ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের সরকারি কমার্স কলেজ চট্টগ্রাম শাখার সহ-সভাপতি হন। পরের বছর অর্থাৎ ১৯৭০ সালে তিনি ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম শহর শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব নেন।
‘৭১ সালে তিনি মুক্তিযুদ্ধে অংশ নেন। দেশ স্বাধীন হওয়ার পর ১৯৮২ সালে তিনি ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক হন।এর আগে তিনি লালখান বাজার ওয়ার্ড কাউন্সিলর ও চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের সিনেট সদস্য ছিলেন।
মোছলেম উদ্দিন আহমেদ মৃত্যুর আগ পর্যন্ত বোয়ালখালীর ঐতিহ্যবাহী স্যার আশুতোষ কলেজ, সিরাজুল ইসলাম ডিগ্রি কলেজ, চট্টগ্রাম শহীদ নগর সিটি করপোরেশন গার্লস হাইস্কুল, গোমদন্ডী পাইলট হাইস্কুল, কদুরখীল স্কুল এন্ড কলেজ, পূর্ব কদুরখীল স্কুল এন্ড কলেজসহ বিভিন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের গভর্নিং বডির সভাপতি ও সদস্য হিসেবেও দায়িত্ব পালন করছেন।
প্রসংগত মোছলেম উদ্দিন আহমদ ১৯৬৯ সালে ছাত্রলীগের সরকারি কমার্স কলেজ, চট্টগ্রাম শাখার সহ সভাপতি হিসেবে নিযুক্ত হন। পরবর্তীতে, তিনি চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করেন। তিনি ১৯৭০ সালে ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম শহর শাখার ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবেও দায়িত্ব পালন করেছিলেন। মোছলেম উদ্দিন আহমদ ১৯৭১ সালে বাংলাদেশের স্বাধীনতা যুদ্ধে অংশগ্রহণ করেছিলেন। বাংলাদেশ স্বাধীন হবার পর তিনি ১৯৭২ সালে ছাত্রলীগের চট্টগ্রাম শাখার সাধারণ সম্পাদক হিসেবে নিযুক্ত হন।
যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি শেখ ফজলুল হক মনি মোছলেম উদ্দিন আহমেদকে ১৯৭৪ সালে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা যুবলীগের প্রতিষ্ঠাতা সাধারণ সম্পাদক মনোনীত করেন এবং ১৯৭৭ সাল থেকে ১৯৮২ সাল পর্যন্ত দক্ষিণ জেলা যুবলীগের সভাপতির দায়িত্বও পালন করেন তিনি। স্বাধীনতা সংগ্রামের প্রাক্কালে মোছলেম উদ্দিন ছাত্রদের সংগঠিত করার লক্ষ্যে কাজ করেছিলেন নগরজুড়ে। ১৯৭৭ সালে তিনি বোয়ালখালী থানা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হন। পরবর্তীতে তিনি দীর্ঘ ২৫ বছর ধরে দায়িত্ব পালন করেছেন চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে। তিনি বর্তমানে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পালন করছিলেন। ২০১২ সালের ৪ নভেম্বর আখতারুজ্জামান চৌধুরী বাবুর মৃত্যুর পর ২০১৩ সালে তৎকালীন সাধারণ সম্পাদক মোছলেম উদ্দিন আহমদকে চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলার সভাপতি করা হয়।
মোছলেম উদ্দীন আহমেদ ১৯৯৬ ও ২০০১ সালে পটিয়া থেকে নৌকা প্রতীকে সংসদ নির্বাচন করে অল্পে ভোটে পরাজিত হন। পরে মাঈনুদ্দিন খান বাদলের মৃত্যুর পর ২০২০ সালের ১৩ জানুয়ারি চট্টগ্রাম–৮ আসনের উপ নিবূাচনে আওয়ামী লীগের মনোনয়নে প্রথমবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হন। তিনি চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের তিনবার সাধারণ সম্পাদক, দুইবার সভাপতির দায়িত্ব পালন করেন। সর্বশেষ গত ১২ ডিসেম্বর অনুষ্ঠিত সম্মেলনে দ্বিতীয়বারের মতো সভাপতি হন। তিনি বঙ্গবন্ধুর সাথে রাজনীতি করেছেন।
মৃত্যুকালে তার বয়স হয়েছিল ৭৪ বছর। তিনি স্ত্রী, ৪ কন্যা, এক ভাই, আত্মীয়স্বজন ও বহু রাজনৈতিক শুভানুধ্যায়ী রেখে গেছেন।