চট্টগ্রামের কর্ণফুলী উপজেলার প্রত্যন্ত এক জনপদের নাম ডাঙারচর। বন্দর নগরী চট্টগ্রাম থেকে দক্ষিণ চট্টলার প্রবেশদ্বার কর্ণফুলী উপজেলার একটি ইউনিয়ন জুলধায় অবস্থিত এই ডাঙারচর। সবুজে ভরপুর এই ডাঙারচরের অধিকাংশ মানুষ কৃষির সাথে জড়িত। কর্ণফুলী নদীর তীর ঘেষে গড়ে উঠা এই গ্রামটি শহরের কাছাকাছি হলেও অনেকটা প্রত্যন্ত অঞ্চলে রয়ে গেছে। কয়েকটি বিদ্যুৎ কেন্দ্র স্থাপিত হলেও নেই কোনো উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান।আবার অধিকাংশ মানুষ কৃষক পরিবারের হওয়ায় আর্থিক অস্বচ্ছলতার কারণে শহর কাছে হওয়ার শর্তেও উন্নত শিক্ষা অর্জনের জন্য তাদের সন্তানদেরকে শহরে লেখাপড়া করাতে পারছেন না। অপরদিকে যাতায়াত ব্যবস্থাও উন্নত না হওয়ায় রয়েছে বিরাট সমস্যা। যার কারণে শিক্ষার দিকে পিছিয়ে রয়েছে এলাকার বিশাল এক জনগোষ্ঠী। আর এই সমস্যা থেকে উত্তরণের জন্য প্রত্যন্ত এই অঞ্চলে দ্বীন ও আধুনিক শিক্ষার আলো ছড়িয়ে দিতে চট্টগ্রাম দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীল পীর আল্লামা ছৈয়দ জাফর ছাদেক শাহ (মা.জি.য়া) প্রতিষ্ঠিত করলেন একটি উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পন্ন শিক্ষা প্রতিষ্ঠান। বলছিলাম উপজেলার জুলধা ইউনিয়ন এর ডাঙারচর ৩নং ওয়ার্ডে অবস্থিত সুলতানুল আরেফীন ক্যাডেট মাদ্রাসার কথা।
২০২০সাল থেকে নির্মাণ কাজ শুরু হলেও মাদ্রাসাটির শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয় চলতি বছরের জানুয়ারী মাসে। বর্তমানে এই মাদ্রাসায় নার্সারি থেকে পঞ্চম শ্রেণীর প্রায় শতাধিক ছাত্রছাত্রীকে জাতীয় শিক্ষাক্রমের পাশাপাশি দ্বীন ও আধুনিক শিক্ষা প্রদানে নিয়োজিত রয়েছে ৭জন শিক্ষক-শিক্ষিকা।
সরেজমিনে গিয়ে এলাকাবাসী ও ছাত্রছাত্রীদের অভিভাবকদের সাথে কথা বলে জানা যায়, এ এলাকায় তেমন কোনো উন্নত শিক্ষা ব্যবস্থা সম্পন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান না থাকায় তাঁরা অনেক দুচিন্তায় ছিল। কিন্তু এ মাদ্রাসাটি হয়ে তাদের সে দুচিন্তা দূর হয়েছে, তারা তাদের সন্তানদেরকে স্বল্প খরছে লেখাপড়া করাতে পেরে অনেক খুশি। প্রতিষ্ঠানটির প্রতিষ্ঠাতা চট্টগ্রাম দরবার শরীফের সাজ্জাদানশীল পীর আল্লামা ছৈয়দ জাফর ছাদেক শাহ (মা.জি.য়া) বলেন, তিনি মূলত এই রকম একটি আধুনিক শিক্ষা থেকে পিছিয়ে পড়া জনপদে মাদ্রাসাটি স্থাপন করার অন্যতম লক্ষ্য হলো এলাকার হত-দরিদ্র ও সুবিধা বঞ্চিত শিশুকিশোরদেরকে দ্বীন ও আধুনিক শিক্ষায় শিক্ষিত করে মুক্তিযুদ্বের চেতনায় বিশ্বাসী সম্পন্ন আধুনিক মানুষ হিসেবে গড়ে তোলা।
তিনি আরো বলেন, এলাকাবাসী ও প্রশাসনিক সহযোগিতা পেলে এই প্রতিষ্ঠানকে একটি আন্তর্জাতিক মানের বিশ্ব বিদ্যালয়ে রুপান্তর করবেন। এ বিষয়ে মাদ্রাসার প্রিন্সিপাল আল্লামা মুফতি মো. আবুল কাশেম (মাঃ) বলেন, যুগোপেযোগী সব ধরনের শিক্ষা সুবিধা রয়েছে এই প্রতিষ্ঠানে। এই মাদ্রারাসার সকল শিক্ষার্থী পাবে আধুনিকতার ছোঁয়া। মাদ্রারাসার ভাইস প্রিন্সিপাল আল্লামা মুফতি মো. তানবীরুল ইসলাম বলেন, মাদ্রাসাটি প্রত্যন্ত অঞ্চলে হলেও সব ধরনের আধুনিক সুবিধা এখানে পাওয়া যাবে। বর্তমানে অভিজ্ঞ শিক্ষক-শিক্ষিকা দ্বারা এই প্রতিষ্ঠান পরিচালিত হচ্ছে। ভবিষ্যতে মাদ্রাসা নিয়ে আরও সুদূর প্রসারী চিন্তা ভাবনা রয়েছে।