প্রযুক্তির উৎকর্ষতা আর সময়ের আবর্তে জীবনযাপনে এসেছে আমূল পরিবর্তন। ইন্টারনেট, স্মার্টফোন ছাড়া যেন একটি মুহূর্তও চলে না। হাতের ছোট্ট ডিভাইসটি মানুষকে যোগাযোগ ও তথ্য আদান-প্রদানের অপার সুযোগ করে দিয়েছে বটে, কিন্তু এর বিপরীতে ক্ষতিরও কারণ হচ্ছে।
সম্প্রতি ভারতে চালানো একটি মোবাইল ফোন কোম্পানির সমীক্ষায় উঠে এসেছে সে তথ্যই। এতে বলা হয়, অধিকাংশ দম্পতি মনে করেন, স্মার্টফোনের অতিরিক্ত ব্যবহার স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে সম্পর্কের গভীরতা কমিয়ে দাম্পত্য জীবনে ক্ষতি করছে। খবর ইন্ডিয়া টুডের।
স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের ওপর স্মার্টফোনের প্রভাব কতটা, এ নিয়ে সমীক্ষাটি চালিয়েছে মুঠোফোন নির্মাতা প্রতিষ্ঠান ভিভো। ভারতের সাইবার মিডিয়া রিসার্চও এর সঙ্গে যুক্ত। দেশটির রাজধানী নয়াদিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, চেন্নাই, হায়দরাবাদসহ দেশটির বড় বড় শহরে ওই সমীক্ষা চালানো হয়। এসব এলাকার এক হাজারের বেশি দম্পতিকে স্বামী-স্ত্রীর সম্পর্কের ক্ষেত্রে স্মার্টফোনের প্রভাব নিয়ে প্রশ্ন করে জবাব নেওয়া হয়।
অনেক দম্পতি বলছেন, যখন তাঁরা বিশ্রাম করেন, তখন সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠে ফোন। প্রায় ৭০ ভাগ স্বামী বা স্ত্রীর মত হলো, স্মার্টফোন চালানো অবস্থায় কিছু জিজ্ঞেস করলে তাঁরা বিরক্ত হন। বিবাহিতদের মধ্যে ৬৭ ভাগ বলেছেন, তাঁরা স্ত্রী বা স্বামীর সঙ্গে সময় কাটানোর সময়ও স্মার্টফোন ছাড়তে পারেন না। এই ফোনের কারণে দাম্পত্য সম্পর্ক দুর্বল হয়ে পড়েছে বলেও মনে করেন ৬৬ ভাগ উত্তরদাতা।
৭০ শতাংশ দম্পতি বলেছেন, এতে কমেছে প্রিয়জনের সঙ্গে সময় কাটানোর পরিমাণও। ৬৯ ভাগ বলেছেন, দাম্পত্য সম্পর্ক ব্যাহত হচ্ছে। অবশ্য ৮৪ ভাগ বলেছেন, তাঁরা তাঁদের স্বামী বা স্ত্রীর সঙ্গে আরও বেশি সময় কাটাতে চান। ফোনে জীবনসঙ্গীর সঙ্গে সম্পর্ক ক্ষতিগ্রস্ত করছে বলে মনে করেন ৮৮ ভাগ। জীবনসঙ্গীর সঙ্গে ভালো সময় কাটাতে চান ৯০ ভাগ মানুষ।
স্মার্টফোনে আসক্তির ফলে এমন বিরূপ প্রভাবের মধ্যেও কিছু ভালো দিক উঠে এসেছে সমীক্ষায়। ৮০ ভাগের বেশি উত্তরদাতা মনে করেন, স্মার্টফোন ব্যবহারে সংবাদ ও তথ্যের মাধ্যমে তাঁরা নিজেদের জ্ঞান বাড়াতে পেরেছেন। এ সংখ্যক মানুষই মনে করেন, ফোন তাঁদের জীবনের মান ও ব্যক্তিগত স্বাধীনতা অনেকাংশে বাড়িয়েছে। ৬০ ভাগ মনে করেন, ফোনের ব্যবহারে প্রিয়জনের সঙ্গে যুক্ত থাকতে পারছেন। আর ৫০ ভাগ বলছেন, এতে কেনাকাটা সহজ হয়েছে।