মাহমুদুল হক আনসারী
মানুষ সমাজবদ্বজীব। সামাজিক ভাবে শান্তিপূর্ণ পরিবেশে বাস করতে ভালোবাসে মানুষ। পারিবারিক শান্তি, সামাজিক দায়িত্ববোধ নিরাপদ জীবন ভোগ করতে চায় মানুষ। মানুষের মধ্যে বিভিন্ন পেশা শ্রম রয়েছে। কেউ ব্যবসায়ী, কেউবা কৃষক, আবার কেউ সরকারী চাকুরীজীবী, কেউ সাংবাদিক, লেখক ও সমাজ গবেষক। বিভিন্ন পেশার মানুষের সম্মেলনের মাধ্যমে পরিবার, সমাজ, রাষ্ট্র তৈরী হয়। একটা রাষ্ট্রে ধর্ম , গোত্র, থাকবে। সকলের মধ্যে সামাজিক শৃংখলা বোধ পালনে সচেষ্ট থাকবে।
যেখানে লেখক সাংবাদিকদের রাষ্ট্রের চতুর্থ স্তম্ভ হিসেবে দেখা হয়। তারা সমাজের নিয়ম, অনিয়ম, ঘুষ, দূর্নীতি অপরাধ, সম্পর্কে সমাজ ও সমাজের নাগরিকদের সচেতন করেন। লেখক সাংবাদিকগন, রাষ্ট্রের বিভিন্ন সেক্টরের অনিয়ম দেখলে তথ্য সহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে জানিয়ে থাকেন। জানানোর পর সংশোধন না হলে অথবা দুর্নীতি, ঘুষ অপরাধ কর্মকান্ড বন্ধ না করলে দৈনিক, সাপ্তাহিক, নিউজ প্রিন্ট অথবা নিউজ পোর্টালে তা ছাপিয়ে প্রকাশ করেন। সে সংবাদ রাষ্ট্রের সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের নজরে আসে। তখন কোনো কোনো সময় নিউজের কারনে অপরাধের সুষ্ঠ তদন্ত পূর্বক আইনানুগ বিচার হয়।অপরাধীদের বিচারের সম্মোখীন হতে হয়, শাস্তি ভোগ করতে হয়।
কারণ কেউই আইনের উর্ধে নয়, রাষ্ট্রের সংবিধান আছে। বিচার ব্যবস্থা আছে। কোর্ট আদালত রয়েছে। ফলে ভুক্তভোগী যে বা যারাই আইনের আশ্রয় নিতে চায়,রাষ্ট্র আইনানুগ ভাবে ভূক্তভোগীর আইনের আশ্রয় দিতে প্রস্তুত। রাষ্ট্রের বিভিন্ন পদে অধিষ্ঠিত থেকে সরকারী সুযোগ সুবিধা গ্রহণ করে রাষ্ট্র বিরোধী অপরাধ, ঘুষ, দুর্নীতির সাথে যারা জড়াবে তাদের বিরুদ্ধে সচেতন নাগরিক অথবা লেখক সাংবাদিক অনিয়মের সংবাদ প্রচার করতে পারেন এবং প্রতিকারও চাইতে পারে।
রাষ্ট্রের সম্পদ ধ্বংস, নষ্ট, আত্মসাত কোনোটাই করতে পারে না। সে যেই হউক না কেন, সরকারী কর্মকর্তা থেকে জন প্রতিনিধি, মেম্বার, চেয়ারম্যান, এমপি, মন্ত্রী তিনি যে পদেই থাকুক না কেন, অনিয়ম দুর্নীতি করতে পারে না। কথা হলো কোনো অনিয়ম দুর্নীতি অব্যবস্হাপনা পেলে সে ক্ষেত্রে পত্রিকায় লেখালেখী হবে। সেটা সাংবাদিক, লেখক রিপোর্টারের নৈতিক কর্তব্য ও দায়িত্ব। রাষ্ট্রের স্বার্থে, জন স্বার্থে পত্রিকায় এসব নিউজ করা হয়। নিউজ করার জন্যই সাংবাদিক সমাজের সৃষ্টি। সাংবাদিক তৈরি, এটা তাদের পেশা ও কর্তব্য। এ জন্য অনেক সাংবাদিক কোনো কোনো জায়গায় নিউজের কারনে জেল জুলুমের শিকার হচ্ছেন। সেক্ষেত্রে সাংবাদিক নেতৃবৃন্দ, সমিতি ও সাংবাদিক ইউনিয়ন সোচ্ছার রয়েছে। অনেক মামলা, নির্যাতন জেল জুলুমের পর ও বাস্তব সাংবাদিক লেখক তাদের নিউজ লেখা ও প্রকাশ করা বন্ধ করেনি। দেশ জাতি ও সমাজের স্বার্থে তাদের লেখনী অব্যাহতি রেখেছে।
বাংলাদেশে সাংবাদিক লেখকদের লেখনী বন্ধ করার জন্য যারাই ক্ষমতায় থাকে, সব সরকার ই-কম বেশী আইন করে কলম বন্ধ করার চেষ্টা করে যায়।
তবুও সাংবাদিকগন কলম চালিয়ে যান। তাদের দায়িত্ব্ ও কর্তব্য পালন অব্যাহত আছে। কিন্তু তাদের কলম বন্ধ করার জন্য কোনো এতো চেষ্টা। সেটা হলো যারা দুর্নীতিবাজ নিয়ম মানতে চায়না অনিয়মের জীবন যাপনে অভ্যস্ত তারা কোনো দিনই সাংবাদিকদের লেখনী সহ্য করেনা ।
তাই বলে লেখা বন্ধ হবে না।পত্রিকা ছাপানো প্রকাশ করা বন্ধ হবে না। মানুষ পত্রিকা পাঠ ও ক্রয় বন্ধ করবে না। সাংবাদিকের সাথে পত্রিকার প্রচার প্রচারণা অব্যহত থাকবে। পৃথিবী যতদিন থাকবে, মানুষ ততদিন সমাজ, রাষ্ট্র হিসেবে ঠিকে থাকবে সে পর্যন্ত সাংবাদিকতা পত্রিকার প্রকাশ ও প্রচার থাকবে এবং চলবে।
কথা হচ্ছে লেখক সাংবাদিকদের নিয়ে যারা সমাজের ও রাষ্ট্রের অতন্দ্র প্রহরীর হয়ে দায়িত্ব পালন করছে, তাদের সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় মূল্যায়ন কোথায় ? তাদের খবর কে রাখছে? বহু লেখক সাংবাদিক জীবনভর লেখে লেখে শেষে সময় ক্রমে থেমে গেছে। তাদের নেই কোনো ঘর বাড়ি, নেই আশ্রয় নেওয়ার জমি, নেই কোনো টাকা পয়সা। বৃদ্ধ বয়সে পরন্ত সময়ে তাদের খবরা খবর কেউ নিতে দেখছি না, যাদের লেখনির মাধ্যমে সমাজ নেতা হয়েছে। চেয়ারম্যান , মন্ত্রী , এম পি হয়েছেন। তারা আজ বড্ড ভাবে অবহেলিত। তাদের কথা কেঊ ভাবার সময় পর্যন্ত পায় না। অবহেলায় আর অর্থ কষ্টে নানা রোগে কষ্টের জীবন কাটাচ্ছে অনেক পরিচিত লেখক ও সাংবাদিক, তাদের পাশে সমাজ,রাষ্ট্র, প্রতিষ্ঠান কেউই আসতে দেখছি না। সমাজ কেন এতো নিষ্ঠুর হলো। যারা রাত দিন শ্রম দিয়ে খেয়ে না খেয়ে দেশ ও জনগণ কে সচেতন সজাগ রেখেছে তাদের এই করুণ দুর্দশা জাতির জন্য কখনোই মঙ্গল বয়ে আনবে না।
নির্লোভ নিষ্ঠাবান দায়িত্বশীল পরপোকারী এসব মানুষ গুলোর জীবন সংগ্রামের খবর নেয়া রাষ্ট্র ও বিত্তবানদের দরকার মনে করছি। রাষ্ট্রের এক কালীন প্রনোদনা ও সহায়তায় তাদের পরন্ত জীবন যেন হাসি খুশির হয় সেটা রাষ্ট্র ও সমাজ কে ভাববার জন্য আমি দাবি করব। দেখা যায়, অনেক সাংবাদিক লেখক ৪০-৫০ বছর বিভিন্ন পত্রিকায় দায়িত্ব পালন করে ও শেষ বয়সে
মালিক তাদের কে ওই প্রতিষ্টান থেকে ছাটায় করে দেয়। কোনো কারণ ছাড়া মালিক পক্ষ তাদের চাকরী খেয়ে ফেলে। অমানবিক আচরণ বন্ধ করা দরকার। খেয়ে ধেয়ে সম্মানের সাথে বেঁচে থাকার মতো বেতন ভাতা প্রদান সময়ের গুরুত্বপূর্ণ দাবী। লেখকদের সাথে জনগন ওপ্রতিনিধি রাষ্ট্রের কর্মকর্তা কর্মচরিীদের সম্প্রীতি ও আন্তরিকতা থাকা দরকার।
সাংবাদিক লেখকদের সাথে সংঘাতে না গিয়ে আপোষ মিমাংসার মাধ্যমে সমস্যার সমাধান উত্তম , সাংবাদিকগন কারো শত্রু নয়। জনগন ও দেশের স্বার্থে তাদের লেখনী।
তাদেরকে প্রশাসন জনপ্রতিনিধি প্রশাসনের প্রতিটি সেক্টরে কার্যকর সহযোগিতা করা রাষ্ট্রের দায়িত্ব। সমাজ ও দেশকে শৃংখলা পূর্ণ নিয়মে পরিচালনা ও সঠিক ভাবে রক্ষা করতে লেখক সাংবাদিকদের ভুমিকার শেষ নেই । সমাজ ও প্রশাসনকে সাংবাদিকদের ভুমিকার শেষ নেই। সমাজ ও প্রশাসনকে সাংবাদিক বান্দব পরিবেশ তৈরির সব ধরনের সহযোগিতার
প্রত্যাশা করছি।