1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ১১:৫৪ পূর্বাহ্ন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিল

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ২৯ ডিসেম্বর, ২০২২
  • ৮৯ বার পড়া হয়েছে

 মো. আবদুর রহিম

২৪ জানুয়ারি ২০২২ খ্রি. ঢাকার সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে অনুষ্ঠিত হলো বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০ তম কাউন্সিলের প্রথম অধিবেশন। কাউন্সিলারদের দ্বিতীয় অধিবেশন অনুষ্ঠিত হলো ইঞ্জিনিয়ারস ইনস্টিটিউশন মিলনায়তনে। উপস্থিত কাউন্সিলারদের সর্বসম্মত মতামতের ভিত্তিতে গঠিত হয়েছে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জাতীয় কার্যনির্বাহী কমিটি। ৮১ সদস্যের নির্বাহী কমিটি, ৫১ সদস্যের উপদেষ্টা কমিটি, ১৮০ সদস্যের জাতীয় কমিটি, ১০ সদস্যের সংসদীয় বোর্ড এবং ১৭ সদস্যের স্থানীয় সরকার জনপ্রতিনিধি মনোনয়ন বোর্ড। এ কাউন্সিল সভাপতি পদে জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুযোগ্য কন্যা শেখ হাসিনাকে দশমবারের মতো সভাপতি এবং ওবায়দুল কাদেরকে তৃতীয় বারের মত সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত করে। কাউন্সিলারদের সর্বসম্মত সিদ্ধান্তে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি শেখ হাসিনা সভাপতিম , উপদেষ্টামণ্ডলী, সম্পাদকমণডলী ও জাতীয় কমিটি ঘোষণা করেন। আওয়ামী লীগের গঠনতন্ত্রে প্রদত্ত ক্ষমতা বলে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগে সভাপতি সভাপতি মণ্ডলীর ২৬/১২/২০২২ খ্রি. প্রথম সভায় কার্যনির্বাহী কমিটির সদস্য ও অন্যান্য খালিপদ পুরনের সিদ্ধান্ত নেন। ২০২০ থেকে করোনা মহামারি, রাশিয়ান-ইউক্রেন যুদ্ধ এবং যুদ্ধ ঘিরে নিষেধাজ্ঞা পাল্টা নিষেধাজ্ঞায় গোটা বিশে^র টালমাটাল অবস্থা। বৈশি^ক সংকটের কারণে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিল দুই দিনের স্থলে একদিনে সম্পন্ন করা হয়েছে। এই জাতীয় সম্মেলন অনেকটা সাদামাটা বলেই ধরে নেয়া যায়। জাতীয় সংসদের আসন্ন দ্বাদশ-নির্বাচন সামনে রেখে আওয়ামী লীগের ২০তম জাতীয় কাউন্সিল ও নতুন কমিটি গঠন করা হয়েছে। গণতান্ত্রিক পদ্ধতিতে আওয়ামী লীগের গঠিত কমিটিতে বিদায়ী কমিটির পুরোনোরা বেশির ভাগই নির্বাচিত হয়েছে। জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা তিনি ১৯৮১ সালের ১৭ মে আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব নিয়ে দীর্ঘ ৪১ বছরের প্রতিকূলতা, বৈরি পরিবেশ পরিস্থিতি, জীবনের ঝুঁকি মাথায় নিয়ে গণতন্ত্র, ভাত ও ভোটের লড়াই করে করে তিনি ১৯৮৬, ১৯৯১ ও ২০০১ এ অনুষ্ঠিত ৩টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিরোধী দলীয় নেতার আসনে ছিলেন। ১৯৯৬, ২০০৮, ২০১৪ ও ২০১৮ এ অনুষ্ঠিত ৪টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগকে বিজয়ী করে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা মোট ৪ মেয়াদে রাষ্ট্র পরিচালনায় একজন সফল সরকার প্রধান, রাষ্ট্রনায়ক ও বিশ^নেতার আসনে অধিষ্ঠিত হন। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৭৫ এরপর ৪ মেয়াদে ২০ বছর রাষ্ট্র পরিচালনার একটি রাজনৈতিক দল। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা টানা ৪১ বছর আওয়ামী লীগ পরিচালনা করে দেশের মানুষের মনের ভাষা, আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীদের মনের ভাষা ও আকূতি তিনি বোঝেন। সে অনুযায়ী তিনি আওয়ামী লীগের নতুন নেতৃত্ব নির্বাচন করেছেন। জাতির পিতার কন্যা শেখ হাসিনা ১০ বারের মতো দলের সভাপতি নির্বাচিত হয়ে আওয়ামী লীগের সর্বস্তরের নেতা-কর্মীর ভালোবাসায় সিক্ত হয়েছেন। তিনি ২৫ ডিসেম্বর জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের প্রতিকৃতিতে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন। দেশ ও বিদেশে জানে ১৯৭৫ সালে ১৫ আগস্ট জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে স্বপরিবারে এবং ৩ নভেম্বর জেলখানায় জাতীয় চারনেতাকে হত্যা করে ১৯৯০ সালের ৬ ডিসেম্বর পর্যন্ত বাংলাদেশে দখলদার সামরিক জ্যান্তার জেনারেলরা সামরিক শাসন, স্বৈরশাসন পরিচালনা করে নতুন দল গঠন করেছিল। তাদের গড়া বিএনপি ও জাতীয় পার্টি যতদিন ক্ষমতায় ছিল ততদিন তারা নিজেদের ভাগ্য গড়ার কাজে লিপ্ত ছিল। বাংলাদেশের মানুষের ভাগ্য ছিল অনিশ্চিত অন্ধকারে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা ভোট, ভাত ও গণতন্ত্রের লড়াই করে দেশে গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। আওয়ামী লীগের প্রচেষ্টায় দেশের মানুষ ভাগ্য পরিবর্তনের সুযোগ পায়। বাংলাদেশে রাজনৈতিক দল বলতে একমাত্র আওয়ামী লীগকেই বুঝায়। আওয়ামী লীগের অতীত ইতিহাস আন্দোলন, সংগ্রাম ও মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার ইতিহাস। আওয়ামী লীগ ১৯৭০ এ নির্বাচনে জয়ী হয়েছিল বলেই বাংলাদেশ নামের একটি দেশ পৃথিবীর বুকে স্থান করে নিয়েছে। আওয়ামী লীগ বাংলার মাটি ও মানুষ থেকে গড়ে উঠা একটি আদর্শ রাজনৈতিক দল। ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন থেকে আওয়ামী লীগ মানুষের আস্থা-বিশ^াসের ঠিকানা। আওয়ামী লীগের শক্তি দেশের জনগণ। বাংলাদেশে ৩৯টি নিবন্ধিত রাজনৈতিক দল বিদ্যমান এবং বাহিরেও ব্যঙ্গের ছাতার মত একজনের একদল আছে বহু যাদের কোন ঠিকানা নেই, নিবন্ধন নেই, নেই কোন জনভিত্তি। ৩৯টি নিবন্ধিত দলের মধ্যে বিএনপি ও জাতীয় পার্টি তো অবৈধভাবে সংবিধান লংঘন করে ক্ষমতা দখলকারী মিলিটারি শাসকদের পকেট থেকে বের হওয়া সংগঠন। এরা ভাসমান। এদের কোন জনভিত্তি নেই। এদের দায়-দায়িত্ব জনগনের ওপর নেই। আওয়ামী লীগের দায়-দায়িত্ব আছে। আওয়ামী লীগ বাংলাদেশ স্বাধীন করেছে সুতরাং মাদার সংগঠন আওয়ামী লীগ। মা যেমন সন্তান প্রসব যন্ত্রণা ভোগ করে কষ্ট করে সন্তানকে লালন-পালন করে বড় করে, ঠিক তেমনি আওয়ামী লীগ মায়ের মমতায় দেশ গড়ে তুলছে। আমাদের জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলে গেছেন, ‘কেউ আমাদের দাবায়ে রাখতে পারব না।’ বর্তমানে আমাদের দেশকে নিয়ে চলছে দেশ-বিদেশী ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, গুজব, মিথ্যাচার। এ সব মাথায় নিয়ে সফল প্রধানমন্ত্রী, দশম বারের মত নির্বাচিত আওয়ামী লীগের সভাপতি মানবতার মা শেখ হাসিনা দলের দায়িত্ব নিয়ে বলেছেন, ‘দোয়া করবেন, আপনারাই নির্বাচিত করেছেন আবারও। আমার মনে হয়, এই এতবার একটা দলের দায়িত্ব থাকা ঠিক নয়। তারপরও এখন যেহেতু বিশ্বব্যাপী একটা দুঃসময় চলছে, অর্থনৈতিক মন্দা চলছে, সেজন্যই আমি হয়তো মানা করিনি। কিন্তু আমার বয়স হয়েছে, এটাও মনে রাখতে হবে। সংগঠনটা যেন ঠিকভাবে চলতে থাকে, সেই ব্যবস্থা করতে হবে।’ বড়ই অনুতাপ ও দুঃখের বিষয় যে, বিগত ১০ ডিসেম্বর বিএনপি’র কর্মসূচি ও বিশ^ মানবাধিকার দিবস সামনে রেখে ৬ ডিসেম্বর ২০২২ খ্রি. তারিখে যে তারিখে স্বৈরাচার এরশাদের পতনের দিন সেই দিনটিকে বেঁচে নিয়ে ১৫ দেশের কুটনৈতিকদের একটি বিবৃতি প্রকাশ হয়েছে। যা যে কোনো স্বাধীন দেশের জন্য চরম অস্বস্তিকর। এ নিয়ে নানান ধরনের আশংকা রয়েছে। ১৫টি পশ্চিমা দেশের দূতাবাস থেকে দেওয়া বিবৃতিতে বলা হয়, ‘অর্থপূর্ণ অংশগ্রহণ, সমতা, নিরাপত্তা, ও অন্তর্ভূক্তিমূলক মানবিক ও অর্থনৈতিক উন্নয়নের জন্য অনুসরণীয় মুল্যবোধ ও নীতি হিসেবে আমরা গণতান্ত্রিক শাসনকে সমর্থ ও উৎসাহিত করি। আমরা বাংলাদেশের বন্ধু ও অংশীদার হিসেবে এ দেশের সাফল্যকে আরও উৎসাহিত করতে আগ্রহী এবং মানবাধিকারের সর্বজনীন ঘোষণা চেতনায় উদ্বুদ্ধ হয়ে অবাধ, সুষ্ঠু ও অন্তর্ভূক্তিমূলক ও শান্তিপূর্ণ নির্বাচনী প্রক্রিয়ার গুরুত্ব পূর্ণ ব্যক্ত করি।’ এই বিবৃতি পড়ে মনে হয় তারা যেন যাত্রাগানের বিবেক এবং এ পৃথিবীতে এসেছেন অন্য কোনো গ্রহ থেকে। বিশ^ মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিবৃতি তা এসেছে দিবসের চারদিন আগে এবং এতে অপ্রাসঙ্গিকভাবে বক্তব্য এসেছে যাতে মানবাধিকার দিবসের কোন তাৎপর্য নেই। আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেন্দ্র করে জট পাকানোর অপচেষ্টা যে চলছে তা তাদের বিবৃত্তিতে অনেকটা খোলাসা হয়ে গেছে। বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সুদক্ষ নেতৃত্বে বাংলাদেশ এখন খুবই গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে আছে। আর এ অবস্থানগত গুরুত্ব অনেক সময় বিপদ ডেকে আনতে পারে। বাংলাদেশের বিষয়ে বিদেশিদের এত ভালোবাসা উত্তলে ওঠার কারণ কী ? বিএনপি হয়তো ভাবছে বিদেশি হস্তক্ষেপে কোনো অঘটন ঘটলে তাতে তাদের কোনো ফায়দা হবে। তা হবে না। অতীতের মীর জাফরের আখেরে ফায়দা হয়েছে ? আমরা ১৯৭১ দেখেছি, ১৯৭৫ দেখেছি, ২০০১ দেখেছি, তাই আশঙ্খা হয়, আমেরিকা ভয়ংকর কোনো সিদ্ধান্তকে ভিত্তি দেওয়া বাহানা করছে। তাদের আস্তিনের আড়ালে চাকুওতো থাকতে পারে ? তাইতো সেই আমেরিকা নামক দেশটিতে বাংলাদেশ ও শেখ হাসিনার সরকার নিয়ে অবিরাম চলছে গুজব আর মিথ্যার প্রচার। অনেক সমস্যার মধ্যেও জাতির পিতার কন্যা সুদুর প্রসারি চিন্তার নায়ক শেখ হাসিনার হাত ধরে বাংলাদেশ মাথা উঁচু করে দাঁড়ানোর অব্যাহত ধারা অনেক রাষ্ট্রের চক্ষুশূল হওয়াই স্বাভাবিক। তবুও আমেরিকা, চীন ও ভারতের স্বার্থের মাঝখানে পড়েও অদম্য বাংলাদেশ এগিয়েছে এবং এগোচ্ছে। বাংলাদেশে আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির সামনে বহু চ্যালেঞ্জ তা হলো ষড়যন্ত্র, চক্রান্ত, গুজব ও মিথ্যাচার তা সামাল দিয়ে প্রকৃত সত্য প্রকাশ করা, বিএনপি ও তাদের মিত্রদের আন্দোলনকে সুকৌশলে সামাল দেয়া। কুটনৈতিক চাপ সামলানো এবং তাদের কাছে প্রকৃত সত্য তুলে ধরে তাদের নিয়ন্ত্রণ করা। আওয়ামী লীগে লুকিয়ে থাকা মোস্তাকদের চিহ্নিত করা, জঙ্গিবাদ ও সাম্প্রদায়িক শক্তিকে নিয়ন্ত্রণ এবং জনমত গড়ে তোলা। আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ৩০০ শত আসনে যোগ্যপ্রার্থী বাছাই করে মনোনয়ন দেয়া, সকল প্রকার গুজব, অপপ্রচার ও মিথ্যাচারের জবাব দেয়া এবং নিবন্ধিত রাজনৈতিক দলগুলোকে দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে নিয়ে আসার ব্যবস্থা করা। আওয়ামী লীগের নতুন কমিটির মূল দায়িত্ব হবে প্রভাবশালী দেশের কুটনৈতিকদের আস্থায় আনা, নির্বাচনকে সামনে রেখে যেন জঙ্গিবাদ সাম্প্রদায়িকতা মাথাচাড়া দিয়ে উঠতে না পারে সেজন্য গ্রামে-গঞ্জে-পাড়া মহল্লায় ব্যাপক জনমত গড়ে তোলা। বিশ্ব মন্দার ফলে অর্থনীতি স্থিতিশীল রেখে দেশকে এগিয়ে নিতে সরকারকে সহায়তা করা। যেসব নেতা-কর্মী ডিজিটাল প্লাটফরম ব্যবহার করছেন, তাদের সকলকে যাবতীয় অপপ্রচারের জবাব দেয়া। আসন্ন দ্বাদশ নির্বাচনের মাধ্যমে আওয়ামী লীগকে রাষ্ট্রীয় ক্ষমতায় আসতে হবে এ কারণে যে, সরকার যেসব উন্নয়ন কাজ হাতে নিয়েছে সেসব উন্নয়ন কাজ সমাপ্ত করা, সরকারের ভিশন স্মার্ট বাংলাদেশের পরিকল্পনা ২০৪১ বাস্তবায়ন এবং ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০ এগিয়ে নিয়ে ৪র্থ শিল্প বিপ্লবের উপযোগী করে দেশকে গড়ে তোলা। আওয়ামী লীগের সামনে অনেক বাধা ও চ্যালেঞ্জ। এসব বাধা ও চ্যালেঞ্চ মোকাবিলা করেই বর্তমান কমিটিকে আগাতে হবে সামনে দৃঢ়পদে। আমাদের বিশ্বাস ষড়যন্ত্র-চক্রান্ত পরাজিত হবে বাংলাদেশ এগিয়ে যাবে এবং দ্বাদশ নির্বাচনেও আওয়ামী লীগ জয়ী হয়ে টানা চতুর্থবারের মত রাষ্ট্র পরিচালনা করবে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla