বন্দর প্রতিনিধি
দেশের প্রধান সমুদ্র বন্দরের মূল জেটিতে ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের (জাহাজের পানির নিচের অংশ) বড় বড় জাহাজ ভিড়ানোর উদ্যোগ নিচ্ছে কর্তৃপক্ষ। এর ফলে কনটেইনার ও পণ্য পরিবহনে ভাড়া কমবে ২০ শতাংশ, লাভবান হবে দেশ।
বন্দর সূত্রে জানা গেছে, যুক্তরাজ্যের বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠান এইচআর ওয়েলিংফোর্ড স্টাডি করে গত সেপ্টেম্বরে প্রতিবেদন দিয়েছে কর্ণফুলী নদীর বন্দর চ্যানেল ও বিদ্যমান জেটি ব্যবহার করেই ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ হ্যান্ডলিং করতে পারবে। বিষয়টি বন্দরের বোর্ড সভায় অনুমোদনও হয়েছে।
ওয়ালিংফোর্ডের প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, বন্দরের বহির্নোঙর (সাগর ও নদীর মিলিত স্থানের কাছে), গুপ্তা বেন্ড (গুপ্তা খালের কাছের বাঁক), কাটিং বেন্ড (নেভাল জেটির কাছের বাঁক), বাকলিয়ার চর ও সদরঘাট এলাকায় ড্রেজিং করলে সর্বোচ্চ ২২৫ মিটার দীর্ঘ ও ১১ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভেড়ানো যাবে।
বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বলেন, ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের বড় জাহাজ বন্দর জেটিতে আনার প্রক্রিয়া চলছে। শিগগির ট্রায়াল রান, আনুষঙ্গিক পরীক্ষা-নিরীক্ষা, সার্কুলার জারিসহ প্রয়োজনীয় ধাপগুলো সম্পন্ন করা হবে।
এক প্রশ্নের উত্তরে তিনি বলেন, বড় জাহাজ ভেড়ানোর ট্রায়াল রানের দিনক্ষণ এখনো চূড়ান্ত হয়নি। নতুন বছরের শুরুতে এটা কার্যকর হবে আশাকরি।
বাংলাদেশ শিপিং এজেন্ট অ্যাসোসিয়েশনের (বিএসএএ) পরিচালক খায়রুল আলম সুজন বলেন, বড় জাহাজে বেশি পণ্য বা কনটেইনার এলে পরিবহন ভাড়া, সময় সাশ্রয় হবে। এটি বন্দরের একটি যুগান্তকারী সিদ্ধান্ত। এখন সর্বোচ্চ যদি একটি জাহাজে ২ হাজার ২০০ টিইইউস (২০ ফুট লম্বা) কনটেইনার আসে বড় জাহাজে ২ হাজার ৮০০ থেকে ৩ হাজার কনটেইনার আসবে।
বিএসএএ সভাপতি সৈয়দ মোহাম্মদ আরিফ বলেন, ১০ মিটারের ড্রাফটের জাহাজ জেটিতে আসার অনুমতি পেলে বর্তমানে এ রুটে যে জাহাজগুলো চলাচল করে তাতেই বেশি পণ্য ও কনটেইনার আনা সম্ভব হবে। একটি কনটেইনার জাহাজের তলা যদি সমতল হয় তবে ১৯০ মিটার ড্রাফটের জাহাজেই ২০০ টিইইউ’স কনটেইনার বেশি আনা সম্ভব। পর্যায়ক্রমে এ রুটে নতুন করে ২০০ মিটার লম্বা ও ১০ মিটার ড্রাফটের জাহাজ ভিড়লে তখন অনেক বেশি কনটেইনার একসঙ্গে আসবে।
তিনি বলেন, বন্দর বড় জাহাজ ভেড়ানোর সার্কুলার জারি করলে এ রুটের শিপিং এজেন্টরা তাদের প্রিন্সিপালের সঙ্গে আলোচনা, আমদানি-রফতানির প্রবৃদ্ধি, বৈশ্বিক পরিস্থিতি ইত্যাদি বিবেচনা করে নতুন জাহাজ নামাবে। যদি এ সুযোগটা বাল্ক পণ্যবাহী জাহাজকে দেওয়া হয় তবে দ্রুত সাড়া মিলবে। মেশিনারি, খোলা পণ্য, খাদ্যশস্য, কারখানার কাঁচামাল ইত্যাদি আমদানিকারকরা সুফল পাবেন।