সংবাদ সংগ্রহ করতে গিয়ে বন বিভাগে কর্মরত স্টাফ সৈকত মন্ডল দ্বারা এক সাংবাদিক হেনস্তার শিকার হয়েছেন।
২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যা ৬টার দিকে হারবাং বন বিটে এ ঘটনা ঘটে।
জানা যায়, ২৩ ডিসেম্বর সন্ধ্যায় ৬ টার দিকে পুরাতন বাড়ির কিছু ফার্ণিচার ভর্তি একটি গাড়ি আমিরাবাদ থেকে চকরিয়া উদ্দেশ্য রওনা হয়। চুনতি বন রেঞ্জ অফিসের সামনে গাড়িটাকে দাঁড়াতে সংকেত দেওয়া হলে চালক বুঝতে না পারায় সে দাঁড়ায়নি। পরে হারবাং বন বিট অফিসে কর্মরত সৈকত মন্ডল গাড়িটি আটকিয়ে চালক রুবেলকে বেদড়ক পিটিয়ে মারাত্মকভাবে জখম করে।আঘাতে চালক রুবেল পায়ে ভর করে হাটতে পারছে না, হাটুতে প্রচুর জখম হয়েছে। চালক রুবেল জানায়, গাড়ি আটকানোর পর নগদ দশ হাজার টাকা দাবী করে বন বিভাগে কর্মরত স্টাফ সৈকত মন্ডল।স্যার, আমরা দশ হাজার টাকা কোথা থেকে দেব, এমন কথা বললে আরো পিটায় সৈকত মন্ডল। সে বলে, তোদের নামে বন মামলা দেব। চালক রুবেল জানায়, স্যার, আমি টাকা দিব, আমাকে দয়া করে আর মারবেন না, একথা বলার পর গাড়িটি হারবাং বন বিট অফিসে নিয়ে আসা হয়। সূত্রে এ তথ্য জানার পর বিষয়টি সম্পর্কে খোঁজ নেয়ার জন্য সাপ্তাহিক চট্টবাণী পত্রিকার বিশেষ প্রতিনিধি মো. আরিফুল ইসলাম মুঠোফোনে হারবাং বন বিট কর্মকর্তা জলিলুর রহমানের সাথে যোগাযোগ করেন। আপনি কোথায় আছেন প্রশ্নে তিনি জানান, আমি বিট অফিসে আছি। তখন সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম এবং আনন্দ টিভির চট্টগ্রাম দক্ষিণ জেলা প্রতিনিধি সাংবাদিক মো: সেলিম উদ্দিন তথ্য সংগ্রহে হারবাং বন বিট অফিসে যায়। এসময় ওই সাংবাদিকদের হারবাং বন বিটে কর্মরত স্টাফ সৈকত মন্ডল অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে এবং আরিফুল ইসলাম প্রতিবাদ করলে তাদেরকে মারধর করে। আরো জানা যায়, ওই সাংবাদিকদের গায়ে হাত দিয়ে ধাক্কাধাক্কি করতে করতে একপর্যায়ে সৈকত মন্ডল ও রেঞ্জার জলিলুর রহমান তাদের মোবাইল ফোন ও মোটরসাইকেল চাবি কেড়ে নেন। ঘটনাস্থলে কয়েকজন স্থানীয় লোকজন এসে জড়ো হলে ফোন,গাড়ির চাবি ফেরত দেয়। এসময় সৈকত মন্ডল ও রেঞ্জার জলিলুর রহমান গালাগালি করতে থাকেন এবং বলেন,”আমদের বিরুদ্ধে প্রতিনিয়ত বিভাগীয় বন কর্মকর্তাকে তথ্য ও নিউজ পাঠাচ্ছিস।শালাদের আজকে খবর করে ছাড়ব। আরো বলেন, তোকে এবং সাংবাদিক সেলিম কে আমি তিনটি-তিনটি মোট ছয়টি বন মামলা দিব। আহত অবস্থায় সাংবাদিক আরিফুল ইসলাম চকরিয়া উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নেন। চালক রুবেল জানান, তারা যে বন বিভাগের লোকজন তাদেরতো আমি চিনি না। তারা আমাকে সংকেত দিয়েছে আমি খেয়াল করিনি। পরে গাড়ির সামনে ব্যারিকেড দিয়ে আমাদের আটক করে প্রচুর পিটায় ও নগদ দশ হাজার টাকা দাবী করে। টাকা নিয়ে এবং আমার কাছ থেকে জোর পূর্বক মুচলেকা নিয়ে আমাদের ছেড়ে দিয়েছে। আমি এখন সরকারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসা নিয়েছি। পায়ে প্রচুর যন্ত্রণা ব্যাথা করছে,হাঁটতে পারছি না।
হারবাং বন বিটের পার্শ্ববর্তী লোকজন জানান,সৈকত মন্ডল বিট বনপ্রহরী থেকে শুরু করে, উদ্ধর্তন কর্তাদের ম্যানেজ করেই বনভূমি দখলের আয়োজন করে চলছে প্রতিনিয়ত। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, হারবাং বন বিটের কর্মকর্তা জলিলুর রহমানের বিরুদ্ধে টাকার বিনিময়ে কাঠ পাচারে সহযোগিতা,পাহাড় কাটায় সহযোগিতা, পুকুর খনন ও নানান অনিয়মের অভিযোগ রয়েছে। সচেতন মহলের অভিযোগ, বন-কর্মকর্তাদের গুটিকয়েক ভূমিদস্যুদের সাথে আতাত করায় বনজমি দখলের হিড়িক আগের চেয়ে দ্বিগুণ বৃদ্ধি পেয়েছে।
খোজঁ নিয়ে জানা গেছে, চুনতি রেঞ্জধীন হারবাং বন বিটের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রতিদিন নিত্যনতুন পদ্ধতিতে বনের জমি জবর দখল হচ্ছে।কোথাও কোথাও বনভূমি কেটে সমতল করে পাকা দালান থেকে শুরুকরে পোলট্রি ফার্ম ও নানা স্হাপনা গড়ছে অবৈধ দখলবাজরা। স্থানীয় গণমাধ্যমকর্মীরা এ ঘটনার তীব্র নিন্দা জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে চট্টগ্রাম দক্ষিণ বনবিভাগের সহকারী বন সংরক্ষক আজহারুল ইসলাম বলেন, আপনারা বিভাগীয় বন কর্মকর্তা বরাবর অভিযোগ প্রদান করুন। আমাদের তদন্ত দিলে, আমরা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করব।