শবনম ফেরদৌসী
হাজার বছরের শ্রেষ্ট বাঙালী,
জন্মেছিলে টুঙ্গী পাড়া গাঁয়।
বাবা মা আদর করে,
খোকা বলে ডাকতো তোমায়।
গোপাল গঞ্জের বুক চিড়ে
মধুমতী নদী বয়ে যায়।
খোকা থেকে তুমি হলে মুজিবুর মধুমতি পাড়ি দিয়ে গেলে বহু দূর।
শহীদ সোহরাওয়ার্দী বাড়িয়ে দিলেন হাত।
সেই হাত ধরে ব্রিটিশ তাড়িয়ে আনলে পাকিস্তান।
স্বাধীনতার নামে পরাধীনতার শৃঙ্খলে পড়তে হলো আবার।
তোমার বাংলা হলো পূর্ব পাকিস্তান।
বাহান্নর রাষ্ট্র ভাষা আন্দোলনের ডাক দিলে,
পাকিস্তানি শাসকের রোষানলে পড়ে গেলে কারাগারে।
মাতৃ ভাষার বাংলার দাবি নিয়ে ছাত্র ছাত্রীরা রাজ পথে নামে।
পুলিশের গুলিতে চল্লিশটি তাজা প্রাণ ঝরে পরে।
শহীদের লাল রক্তে রমনার সবুজ ঘাসে ফুটে, অ, আ, ক, খ, রাষ্ট্র ভাষা বাংলার চিহ্ন।
পাকিস্তানের চব্বিশ বছরের শাসন আমল,
কারাগারে হারালে বারটি বছর।
ছয় দফা দাবি উৎথাপন করলে,
ঊনসত্তরের গন অভ্যত্থান এর মুখে ভেঙ্গে পরলো আইয়ুব শাসন।
পূর্বেই আগরতলা ষড়যন্ত্র মামলায় জড়িয়ে পড়লে।
সত্তরের নির্বাচনে করলে অংশ গ্রহণ,
নিরংকুশ বিজয়ে ভেঙ্গে পরলো শ্বৈরশাসন।
তবুও বাংলার শাসন ভার দিলোনা তোমার হাতে।
এলো সামরিক শাসক ইয়াহিয়া খান।
একাত্তরের সাতেই মার্চ তুমি স্বাধীনতার ডাক দিলে।
যার যা কিছু আছে তাই নিয়ে প্রস্তুত থাক।
এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম।
বাংলার মানুষ তোমার ডাকে সারা দিল ছাব্বিশে মার্চ যুদ্ধে ঝাঁপিয়ে পড়লো।
নয় মাসের রক্তাত্ব সংগ্রামের ফসল বিজয় ছিনিয়ে আনলো শোলই ডিসেম্বর।
পাকিস্তানের কারাগার থেকে মুক্ত হয়ে,ফিরে এলে তোমার সোনার স্বাধীন বাংলায়।
পাকিস্তানিরা সব লুটে পুটে নিল,
বাংলার পোরা মাঠি তারা রেখে গেল।
তোমার ছোঁয়ায় সেই পোড়া মাটিতে যখন সোনা ফললো।
পনেরই আগস্ট রাতে স্বপরিবারে তোমাকে হত্যা করে।
তোমার দুই কন্যা বেচে যায়, বিদেশ থাকায়।
বাংলার মাটি থেকে তারা তোমার নাম মুছে দিলো।
তুমি ছিলে বাঙালীর হৃদয়ে।
তোমার জন্ম শত বর্ষের পূর্বেই হলে তুমি হাজার বছরের শ্রেষ্ঠ বাঙালী।
হে মহা মানব জাতীর পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান।