সম্প্রতি ‘সাপ্তাহিক অপরাধ ঘোষনা’, দৈনিক আমাদের সময়’, দৈনিক সংবাদ’ এবং অনলাইনভিত্তিক নিউজ পোর্টাল ‘বাংলার প্রভাতী’ পত্রিকাসহ কয়েকটি পত্রিকায় ইসলামিক ফাউন্ডেশনের চট্রগ্রাম বিভাগীয় পরিচালক হিসেবে আমার বিরুদ্ধে ব্যাক্তিগত আক্রোশ সম্বলিত কতিপয় মিথ্যা সংবাদ পরিবেশিত হয়েছে। সংবাদগুলো লক্ষ্য করলে দেখা যাবে যে, সবগুলা সংবাদ একই ব্যক্তির ড্রাফট করা। সংবাদে অনিয়ম-দুর্নীতির কোন সুনির্দিষ্ট তথ্য না দিয়ে কেবল কুৎসিত ভাষায় গালিগালাজই করা হয়েছে। মূলতঃ আমাদের দপ্তরের একজন কর্মচারীর সরকারী চাকরী বিধি লংঘন করে পত্রিকার মালিক ও সম্পাদক হয়ে যাওয়া, সাংবাদিক পরিচয়ে অনৈতিক কাজ করা, অফিসে না এসে মাস শেষে বেতন নিয়ে যাওয়া ইত্যাদি কারণে তার বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়া শুরু হলে ক্ষিপ্ত হয়ে উক্ত কর্মচারী পরিচালকের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার শুরু করে।
এ সম্পর্কে আমার বক্তব্য নিন্মরূপঃ
প্রকাশিত সংবাদে আমাকে ছাত্রজীবনে জামাতের রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম বলে বর্ণনা করা হয়েছে। কোথায় ছিলাম, কোন কমিটিতে ছিলাম, কোন পদে ছিলাম এর কোন তথ্য নেই। এটি একটি মনগড়া কথা এবং কাল্পনিক কথা। আমি ছাত্র জীবনে কিংবা পরবর্তী জীবনে কখনো কোন রাজনীতির সাথে সম্পৃক্ত ছিলাম না।
বি,এন,পি, আমলে মেজর রফিকুল্লাহর ভাগিনা হওয়ার সুবাদে ১৯৯৬ সালে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে চাকুরী পেতে সক্ষম হন বলে যে তথ্য দেয়া হয়েছে তা সম্পূর্ণ মিথ্যা। মেজর রফিকুল্লাহ নামে আমার কোন মামা নেই। আবার প্রতিবেদনের ভিন্ন এক প্যারায় বলা হয় দেলোয়ার হোসেন সাঈদী এবং তামিরুল মিল্লাতের জয়নুল আবেদীনের পৃষ্ঠপোষকতায় চাকুরী পাই। মূলতঃ এ মানুষ গুলোর সাথে আমার কোন পরিচয় নেই। আর আমি কখনো তামিরুল মিল্লাত কিংবা অন্য কোন মাদ্রাসায় পড়িনি। আমি ১৯৯৬ সালে ২ অক্টোবর উন্মুক্ত প্রতিযোগিতার মাধ্যমে প্রথম হয়ে চাকুরীতে যোগদান করি। সে সময় ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মাননীয় প্রতিমন্ত্রী এবং ইসলামিক ফাউন্ডেশন বোর্ড অব গভর্ণরস-এর চেয়ারম্যান ছিলেন মাওলানা নূরুল ইসলাম।
প্রকাশিত সংবাদে ইসলামিক ফাউন্ডেশনে তার অধীনস্থ উপ-পরিচালক, ফিল্ড অফিসার, ফিল্ড সুপারভাইজার, মডেল কেয়ারটেকার, গণশিক্ষার শিক্ষক শিক্ষিকাদের কথায় কথায় শোকজ ধরিয়ে দেয়ার কথা বলা হয়েছে। কেবল নূরুল কবির নামক একজন ফিল্ড সুপার ভাইজারকে কারণ দর্শানোর নোটিশ দেয়া হয়েছে। কারণ উক্ত ব্যক্তি কর্মস্থলে উপস্থিত থাকেন না। তিনি কাজ না করেই বেতন নিতে চান। উক্ত ব্যক্তিকে যে উপজেলাতেই পদায়ন করা হয় সেখানকার উপজেলা নির্বাহী অফিসার এবং স্থানীয় সংসদ সদস্য তাকে প্রত্যাহারের জন্য বলেন। কখনো কখনো স্থানীয় সংসদ সদস্য তাকে প্রত্যাহারের জন্য ডিও লেটারও প্রদান করেন যা অত্র কার্যালয়ে সংরক্ষিত আছে। সরকারী চাকুরী করেও তিনি ব্যবসা বাণিজ্যে রত থাকেন এবং নিজেকে সাংবাদিক পরিচয় দেন। তিনি বয়স জালিয়াতি করে ৩৩ বছর বয়সে চাকুরী নিয়েছেন। তার বিরুদ্ধে নিরীহ ইমামদের চাকুরী দেয়ার নাম করে অর্থ আদায়ের অসংখ্য অভিযোগ রয়েছে। মূলতঃ সরকারী কর্মচারীদের শৃংখলাজনিত ব্যবস্থা একটি স্বাভাবিক প্রক্রিয়া। এটি কোন অন্যায় কিংবা অপরাধ মূলক কাজ নয়।
রাঙ্গামাটিতে থাকাকালীন পাহাড়ী বাঙ্গালী সাম্প্রদায়িক সম্প্রীতি বিনষ্টের যে অভিযোগ তাও মিথ্যা। আমার কর্মকালীন সময়ে রাঙ্গামাটিতে কোন সাম্প্রদায়িক হানাহানি, মারামারী কিংবা কাটাকাটি হয়নি। কেউ আহত অথবা নিহত হয়নি। থানায় কোন জি.ডি এন্ট্রি অথবা মামলা হয়নি। পত্রিকায় কোন খবর আসেনি। রাঙ্গামাটির তৎকালীন মন্ত্রী দীপংকর তালুকদার এবং জনসংহতি নেতা সন্তু লারমার সাথে আমার কোন দ্বন্দ্ব হয়নি, বরং সুসম্পর্ক ছিল।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে মোরশেদ আলম নামক আমার এক তথাকথিত সহপাঠির উদ্ধৃতি দিয়ে আমি একটি মেয়ে ঘটিত বিষয় নিয়ে যে কুরুচিপূর্ণ কথা বলা হয়েছে তা অত্যন্ত মর্যাদা হানি কর। চাকরী থেকে অবসরের সময় ঘনিয়ে আসছে। অথচ বিশ্ব বিদ্যালয়ের জীবন টেনে অশ্লিল ও কুরুচিপূর্ণ কথা বলা হয়েছে। সিকি শতাব্দীর বেশী সময় আগে আমি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়া লেখা করেছি। সে সময় মোরশেদ আলম নামক আমার কোন সহপাঠি ছিল না। এ ধরনের মিথ্যা এবং কুরুচিপূর্ণ কথা কেবল বিকৃত রুচির মানুষের দ্বারাই লেখা সম্ভব।
চাকুরী জীবনে আমি সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা থেকে জনসংযোগ কর্মকর্তা না হয়ে সরাসরি উপ-পরিচালক হয়ে যাওয়ার যে গল্প সাজানো হয়েছে তা অজ্ঞতারই বহিঃ প্রকাশ। এটি এস.এস.সি পাস না করে বি.এ, পাস করার গল্প। আমি যথারীতি সহকারী জনসংযোগ কর্মকর্তা থেকে জনসংযোগ কর্মকর্তা এবং তারপর উপ পরিচালক হয়েছি এবং সর্বশেষ পরিচালক হয়েছি।
জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে প্রকল্প পরিচালক হিসেবে আসার পর আমি টাকার কুমিরে পরিণত হয়েছি বলে তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। জমিয়তুল ফালাহ সরকারী বিধিবিধান অনুযায়ী পরিচালিত হয়। ০৫ বছরআগে থেকেই এখানে দানবাক্স দিয়ে টাকা উত্তোলনও বন্ধকরে দেয়া হয়েছে । সুতরাং অর্থ আত্মসাতের কোনসুযোগ নেই। সেখানে ঠিকাদারী প্রতিষ্ঠান ম্যাক্সকে ভাড়া প্রদান কালে বিপুল অংকের ঘুষ লেন দেনের অভিযোগ আনা হয়। জমিয়তুল ফালাহ মসজিদে আমি এসেছি ১ বছরহলো। অথচ ম্যাক্সকে মাঠ ভাড়া দেয়া হয়েছে ৭ বছর আগে (২০১৪ সালেরনভেম্বরমাসে)। এখানে ঘুষ লেন দেন হয় কিভাবে? তাছাড়া এখানে যারাই মসজিদের ভাড়াটিয়া ,সবাই ব্যাংক টু ব্যাংক লেন দেন করেন। এখানে ক্যাশ লেন দেনের সুযোগ নেই। তাই টাকা আত্সাতের ও কোন সুযোগ নেই। বিষয়গুলো প্রধান কার্যালয় থেকে প্রতিবছর অডিট হয়। তাই আনীত অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা।
ইসলামিক ফাউন্ডেশন মনিটরিং কমিটি, জমিয়তুল ফালাহ ও আন্দর কিল্লা মসজিদ কমিটি, মুসল্লি কমিটির সাথে আমার দ্বন্দ্ব সার্বক্ষণিক বলে তথ্য পরিবেশিত হয়েছে। প্রকৃতপক্ষে ইসলামিক ফাউন্ডেশন মনিটরিং কমিটি বলতে কোন কমিটি নেই। জমিয়তুলফালাহ ও আন্দরকিল্লা মসজিদ কমিটি বলতে ও কোন কমিটি নেই। এ মসজিদ দুুটো মসজিদ ইসলামিক ফাউন্ডেশন সরাসরি রাজস্ব অর্থে পরিচালনা করে থাকে। আর এ মসজিদ গুলোতে মুসল্লি কমিটি ছিল, পরে সরকার তা নিষিদ্ধ করে দিয়েছে। প্রকৃত পক্ষে অফিসের স্বার্থ রাষ্ট্রীয় স্বার্থ রক্ষা করতে গেলে কারো কারো সাথে দ্বন্দ্ব হতেই পারে। সরকারী বিধি বিধান অনুসরণ করতে গিয়ে সবাইকে সব সময় সন্তুষ্ট রাখা সম্ভব হয় না।
এ ধরনের সংবাদ মিথ্যা, বানোয়াট এবং উদ্দেশ্য প্রণোদিত । আমরা এর তীব্র প্রতিবাদ জানাই।
মোহাম্মদ তৌহিদুল আনোয়ার
পরিচালক
ইসলামিক ফাউন্ডেশন
চট্টগ্রাম বিভাগীয় কার্যালয় ।