প্রবাসীর সাথে প্রেম করে বিয়ে অতঃপর স্বামীর অর্জিত টাকা, স্বর্ণাংকার ও আসবাবপত্রসহ সবকিছু লুঠে নিয়ে প্রেমিকার কাছে পালালো বহুরুপী সালমা তাবাসসুম সুমি ।কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের দূর্গাপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে সালমা তাবাসসুম সুমি।অন্যদিকে নারী নির্যাতনের মামলা দিয়ে প্রবাসী স্বামীকে হয়রাণী অভিযোগও রয়েছে সুমির বিরুদ্ধে।
জানা গেছে, চট্টগ্রামের কোতোয়ালী এলাকার ধাম্মাপুকুর এলাকার প্রবাসী যুবক আজগর আলী মামুনের সাথে কুমিল্লা জেলার চৌদ্দগ্রামের দূর্গাপুর এলাকার আব্দুর রাজ্জাকের মেয়ে সালমা তাবাসসুম সুমি(২৮) সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে পরিচয়, পরিচয় থেকে প্রেম ও তারপর বিয়ে হয়। নগরীর দেয়ানবাজার ভাড়া বাসায় থাকাতে প্রেমের সর্ম্পক আরও গভীর হয়ে উঠে। প্রবাসী যুবকের সাথে প্রেমিকা সালমার প্রেমের অভিনয়ে বিয়ের কথা বার্তা ফাইনাল হলে প্রবাসী যুবক আজগর আলী মানুন জীবনের আয়ের সব টাকা পয়সা প্রেমিকার হাতে দেন। প্রেমের সর্ম্পক থেকে ২০১৪ সালের ১৬ ডিসেম্বর ইসলামী শরীয়ত মোতাবেক সামাজিকভাবে বিয়ে হয়। বিয়ের পর ফিরিঙ্গি বাজারস্থ ধাম্মা পুকুর পাড় আমজাদ আলী লেইন নিজের বাড়িতে নিয়ে এসে সংসার শুরু করেন। প্রবাসী যুবক নিজের স্ত্রীকে ভালোবেসে সুখে শান্তিতে সংসার করার মানসে জীবনের সম্পূর্ণ রোজি বোজগারের টাকা স্ত্রীর ব্যাংক হিসাবে জমা রাখেন। এভাবে ৪/৫ বছর চলে যাওয়ার পর প্রবাস থেকে দেশে দুইবার আসা যাওয়ায় স্ত্রী সালমা তব্বাসসু সুমি সন্তান ধারণ করতে আগ্রহী না হওয়ায় আচার আচরণ সন্দহজনক মনে হলেও বিষয়টি মান সম্মান ইজ্জতের কথা চিন্তা করে নিজেই গোপন রাখেন। প্রবাসী আজগর আলী বিদেশ চলে গেলে স্ত্রী সালমা বিভিন্ন যুবকদের সাথে ঘুরাঘুরি করেন।
২০২০ সালের ১১ জুন ওমান প্রবাসী আজগর আলী মামুন ফের বিদেশ চলে আসলে স্ত্রী সালমা তাব্বাসুম সুমি কিছুদিনের জন্য বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ার জন্য অনুমতি নেয়। ২০২০ সালের ১০ নভেম্বর বাপের বাড়িতে যাওযার সময় ১১ ভরি স্বর্ণলঙ্কার, নগদ ৫ লাখ টাকা, বাসায় থাকা আসবাব পত্রসহ প্রায় ২০ লক্ষাধিক টাকার মালামালা নিয়ে যায়। এমন কি নতুন পুরানো কাপড়, আসবাবপত্র থালা বাটিসহ সংসারের সমস্ত জিনিসপাতিও ট্রাক ভরে নিয়ে যায।
টাকা পয়সা ফেরত চাইতে গেলে প্রবাসী আজগর আলী মামুন ও মামুনের দুলা ভাইয়ের নামে মিথ্যা ও হয়রানিমূলক নারী নির্যাতন মামলা করে। এর মধ্যে নগরীর পশ্চিম বাকলিয়ার ডিসি রোডস্থ ফরহাদ উদ্দীন আহমেদ এর পুত্র গিয়াস উদ্দীন রাসেল নামের আর এক জনকে ফের বিয়ে করে বলে প্রবাসী স্বামী মামুন অভিযোগ করে। গিয়াস উদ্দীন রাসেল হলো ওই দম্পতির বিয়ের ২ নং স্বাক্ষী ও সুমি পরিবারের জমিদার ।
জানা গেছে, প্রবাসী আজগর আলী মানুনের সাথে বিয়ে হওয়ার আগে কুমিল্লায় নিজে এলাকায় একাধিক বিয়ে করে প্রতারণা করে চট্টগ্রামে চলে আসেন বলে অভিযোগ রয়েছে। সালমা তব্বাসুম সুমি নিজকে কখনো নামকরা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী কখনো মডেল তারকা কখনো অলাইন শিল্প উদ্যোক্তা পরিচয়ে সম্মানিত পরিবারের সন্তান, শিল্পপতিদের পুত্র, প্রবাসী যুবকদের টার্গেট করে প্রেমের অভিনয় করে প্রতারণা করে লক্ষ লক্ষ টাকা পয়সা হাতিয়ে নেয়াই তার মূল পেশা। প্রতারণার শিকার প্রবাসী আজগর আলী মামুন ওমান বাংলাদেশ দূতবাসের মাধ্যমে গত ৬ সেপ্টেম্বর প্রবাসে কষ্ট অর্জিত অর্থ ফেরত পেতে সহায়তা এবং প্রতারণায় জড়িত সালমা তব্বাসসুম সুমি, গিয়াস উদ্দীন রাসেল, প্রতারণার সহযোগি শাহিদা বেগমসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে বাদী হয়ে অভিযোগ করেন। অভিযোগটি দূতাবাসের কাউন্সিলর (শ্রম) মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির প্রবাসী কল্যাণ ও কর্মসংস্থান মন্ত্রনালয়ের সচিরের মাধ্যমে চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক, চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার এবং সিএমপি কমিশনারের কাছে পাঠানো হয়। বিষয়টি তদন্ত করে ঘটনায় জড়িতদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেয়ার জন্য নির্দেশ দেন।
প্রবাসী আজগর আলী মামুন জানান, মহিলাটা প্রেমের অভিনয় করে আমার সাথে বিয়ে হওয়ার পর আমার জীবনের সম্পূর্ণ টাকা নিয়ে নেয়। অন্ধের মত ভালোবেসে দুইজন মিলে সংসার করার ইচ্ছে ছিল, বিয়ের কিছুদিন পর সন্তান গর্ভধারণ করতে চাইলে আপত্তি জানায়, বিভিন্ন অজুহাত দেখান, বিয়ের পর জনাতে পারলাম কুমিল্লায় এবং বিভিন্ন এলাকায় আরও একাধিক জনের সাথে বিয়ে হয়েছে প্রতারণা করে টাকা হাতিয়ে নেয়া এবং সুযোগ বুঝে কাবিনামা বাণিজ্য করেছে বিভিন্ন জনের সাথে।
বাদুরতলা এলাকার ফুলের দোকানদার জনৈক পারভেজের সাথেও সুমির বিয়ে হয়েছে জানা গেছে। কাগজে কলমে সালমা তব্বাসুম সুমি বাবার নাম আবদুর রাজ্জাক লিখলেও আদতে তার বাবার নাম সোলাইমান বলে প্রচার রয়েছে। আবদুর রাজ্জাকও তার বড় ভাইয়ের বউকে ভাগিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছে বলে গুজব রয়েছে।
এ বিষয়ে কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম থানার অফিসার ইনচার্জ মোজাম্মেল হক গণমাধ্যমকে বলেন, বিষয়টি আমি খবর নিয়ে দেখছি, মেয়ে এবং মেয়ের মা বিভিন্ন জনের সাথে প্রতারণা এবং ফাঁদে ফেলে টাকা আদায়ের ঘটনায় কয়েক বছর আগে এলাকাবাসী তাদেরকে এলাকা ছাড়া করেছে বলে শুনেছি, তবে তাদের স্বভাব চরিত্র ভালো না বলে স্থানীয়রা জানিয়েছে।