1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
মঙ্গলবার, ২৩ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৪৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহাসড়কে অবৈধ গাড়ির অরাজকতা বন্ধ করতে আবারো বিআরটিএ’র অভিযান আমি আজ কথা দিচ্ছি  আপনাদের একা রেখে পালিয়ে যাব না, সুখে দুঃখে আপনাদের পাশে থাকব, আমি আপনাদের এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চাই- ওয়াসিকা চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিআরটিএ’র সাঁড়াশি অভিযান, জরিমানা অর্ধলাখ মে মাসেও থাকবে তীব্র গরম, তাপমাত্রা ছাড়াতে পারে ৪৪ ডিগ্রি সব স্কুল-কলেজ ৭ দিন বন্ধ ইসরাইলি মন্ত্রীর টুইটকে ঘিরে তোলপাড় সীতাকুণ্ডে ৫টি চোরাই গরু ১টি পিকাপ একটি দেশী অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৩ জন বিশ্বের প্রভাবশালীদের তালিকায় আলিয়া জাতিসংঘে ফিলিস্তিনের সদস্যপদ লাভের প্রস্তাবে যুক্তরাষ্ট্রের ভেটো সমাজসেবক মুহাম্মদ ইয়াছিন সওদাগর সংবর্ধিত

সমিতির নামে দাদন ব্যবসা লুটপাতের শেষ কোথায় ?

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শুক্রবার, ৭ অক্টোবর, ২০২২
  • ১২৩ বার পড়া হয়েছে

মাহমুদুল হক আনসারী
সমিতির নামে সারাদেশের গাঁ গ্রাম শহর পর্যন্ত দাদন ব্যবসা। দাদন ব্যবসা লাগামহীনভাবে চলছে। ব্যবসার নামে সমিতি প্রতিষ্ঠা হয়। সমিতির নামে সাধারণ মানুষদেরকে একত্রিত করা হয়। সুন্দর সুন্দর কর্মসূচী তাদের সামনে উপস্থাপন করা হয়। বিচক্ষণ কয়েকজন লোক থাকে যারা সমিতিকে জনগণের সামনে তুলে ধরতে পারে। লোভনীয় ভাবে আয় ইনকামের পথ দেখানো হয় লোকজনদেরকে। নানা চলছাতুরী এবং সুন্দর সুন্দর কথা বলে সহজ সরল সাধারণ মানুষদেরকে একত্রিত করে। তাদেরকে সমিতির একটা নাম তৈরি করে যেমন একতা সমবায় সমিতি , ছিন্নমূল সমবায় সমিতি, তৃণমূল সমবায় সমিতি , ঐক্যবদ্ধ সমবায় সমিতি ইত্যাদি ধরনের নাম দিয়ে সাধারণ মানুষদেরকে জমায়েত করে। তাদেরকে ফরমের মাধ্যমে সংগ্রহ করে। ভর্তি ফি আদায় করে সাপ্তাহিক , মাসিক , বাৎসরিক একটা ফি নির্ধারণ করে দেয়। সুন্দর করে একটা অফিস তৈরি করে থাকে। অফিসকে খুবই চাকচিক্য ভাবে মানুষের সামনে উপস্থাপন করে।
তারপর সদস্য সংগ্রহ শুরু করে। সদস্যদের থেকে অর্থ কালেকশন আরম্ভ করে। যে যার মত করে একশ টাকা থেকে লাখ টাকা পর্যন্ত নানা জন থেকে অর্থ কালেক্ট করে। এভাবে যখন বিশাল আকারের একটা নগদ অর্থ জমা হয়ে যায় তখন সমিতির সভাপতি সেক্রেটারি অর্থ সম্পাদকের মধ্যে লোভ তৈরি হয়ে যায়। তারা ফন্দি করতে থাকে কীভাবে বড় আকারের কয়েক কোটি টাকার অর্থ আত্মসাৎ করা যায়। দেখা যায় কালেকশন তাদের ঠিকই থাকে কিন্তু জমাকৃত অর্থ যখন ফেরত নিতে কোনো সদস্য আসে তখন আর তার জমাকৃত অর্থ ফেরত পেতে সীমাহীন ভোগান্তি পেতে হয়। দিনের পর দিন মাসের পর মাস ঘুরাঘুরি করেও তার সঞ্চিত অর্থ সে ফেরত নিতে পারে না। তাকে ফেরত দেয় না। সভাপতি, সেক্রেটারি ও অর্থ সম্পাদক সংশ্লিষ্ট দায়িত্বশীলরা গা ঢাকা দিয়ে পালিয়ে বেড়ায়। তখন নানাভাবে এদিক সেদিক ঘুরাঘুরি করেও কোনো নিস্তার পায় না এসব দাদন সমিতির সদস্যরা।
দেখা যায় সুযোগ বুঝে সমিতির কর্তারা অর্থ আত্মসাৎ করে পালিয়ে বেড়ায়। অনেক সময় তারা দেশ পর্যন্ত ত্যাগ করার সংবাদও আছে। এ ধরনের সমিতির সংগঠন ঋণ দান কর্মসূচি শহর নগর গাঁ গ্রামে অহরহ নানা নাম ব্যবহার করে তাদের রমরমা দাদন ব্যবসা চালাচ্ছে। বাস্তবে তাদের অর্থনৈতিক কর্মকান্ড পরিচালনা করার কোনো ধরনের নিবন্ধন রেজিস্ট্রেশন মোটেও তাদেরকে কোনো মন্ত্রণালয় থেকে দেয়া হয়নি। সে কথা বা আইনের মারপ্যাচ সমিতির অপরাপর সদস্য এবং ভুক্তভোগীরা আগে ভাগে জানেনা। তাদেরকে ভর্তির সময় বলা হয় এ সমিতি ব্যাংকের মত অর্থনৈতিক সমস্ত লেনদেন করে যাবে। এ জাতীয় নানা ধরনের কথার ফন্দির মধ্যে সাধারন মানুষদেরকে আটকিয়ে ফেলে। লোভের মধ্যে পড়ে গাঁ গ্রাম এবং শহরের কতিপয় মানুষ এসব সমিতির মধ্যে বন্দি হয়ে যায়। কেউ যদি দাদান সমিতি থেকে ঋণ নেয় তখন তাদেরকে সমিতিকে মোটা অংকের সুদ দিয়ে সমিতির টাকা পরিশোধ করতে হয়। দৈনিক ও সাপ্তাহিক কিস্তির মধ্যে ফেলে গ্রাহককে চরমভাবে অর্থনৈতিক নৈরাজ্যের মধ্যে ফেলতে দেখা যায়।
তাদের ছত্রছায়ায় হাজার হাজার এ ধরনের দাদন সমিতি দেশে ব্যবসার নামে জনগণকে প্রতারিত করছে সেটা পরিস্কারভাবে আমাদের জানা নেই। অহরহ এ ধরনের সমিতি সংগঠন প্রতিদিন কোন না কোন এলাকায় নতুন নতুন ভাবে তৈরি হচ্ছে। কেউ কাজ করছে বা ঠিকে আছে অথবা কেউ কোটি কোটি টাকা আত্মসাৎ করে লাপাত্তা হয়ে যায়। তখন ভুক্তভোগী জনগণের কিছুই করার থাকেনা। অভিযোগকারী ভুক্তভোগী পত্রিকার মাধ্যমে তার ভোগান্তির কথা কিছু রিপোর্ট করতে পারলেও প্রশাসনের নিকট কোনো ধরনের এ বিষয়ের ওপর প্রতিকার পায় না। না পাওয়ারই কথা। কারণ এসব সমিতি সংগঠন নিবন্ধিত নয়। নিবন্ধিত হলেও অর্থনৈতিক লেনদেনের কোনো প্রকারের তাদের জন্য বৈধ রাষ্ট্রীয় অনুমতি নেই। যার ফলে প্রশাসন আইনানুক কোনো ব্যবস্থা গ্রহন করতে দেখা যায় না। তবুও সাধারন লোভী এবং অর্থ সংকটের কারণে হঠাৎ করে প্রয়োজন মিটাতে এসব দাদন সমিতির নিকট শরণাপন্ন হন সাধারন মানুষ। একবার তাদের খপ্পরে পরলেই সে ব্যক্তি এবং পরিবার সারাজীবনের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে পড়ে। আমার কথা হচ্ছে এ ব্যবসা আজকের জন্য নতুন কোনো কথা নয়। এটা দীর্ঘদিন থেকে গাঁ গ্রাম এবং শহরে নানাভাবে ব্যক্তি এবং সংগঠন কর্তৃক চলে আসছে। তাদের সুদের হার অনেক বেশি। যেভাবে তারা জনগণ থেকে সুদ গ্রহণ করে তা কল্পনার বাইরে। সুদ না দিতে না পারলে সুদের ওপর সুদ বাড়ানো হয়। সুদ আদায়ে কঠোরভাবে ভুক্তভোগীর ওপর শক্তি প্রয়োগ করা হয়। এ একটা সভ্য সমাজে অমানবিক একটি দাদন ব্যবসার নাম। এ ব্যবসার সাথে যারাই সম্পৃক্ত হয়েছে তারাই ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। কেউ সেখানে বিনিয়োগ করে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। আবার কেউ ঋণ নিয়ে দেউলিয়া হয়েছে।
দেখা গেছে কেউ যদি ঋণ নেয় তার কাছ থেকে অলিখিত ব্যাংক চেক নেয়া হয়। ভুক্তভোগী তার প্রয়োজন মিটানোর জন্য তাদের সব শর্ত পূরণ করে ঋণ নিয়ে থাকে। দেশের প্রত্যন্ত অঞ্চলে এসব ঋণ দান সমিতিগুলো অনেক ব্যক্তি ও প্রতিষ্ঠান থেকে একাধিক বার রিডেবল ঋণের অর্থ আদায় করছে। যা জাতীয় স্থানীয় বিভিন্ন পত্রিকায় সংবাদ হিসেবে প্রতিবেদন এসেছে। এ ধরনের জঘন্য ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছে দাদন ব্যবসায়ীরা। সভ্য সমাজে কোনেভাবেই এ ধরনের ব্যবসার নামে প্রতরাণা ধোকাবাজি গ্রহণযোগ্য নয়। কাদের ছত্রছায়ায় এ ধরনের অনৈতিক ব্যবসা যারা করছে কীভাবে করছে সেটাই আমাদের জানার বিষয়। এগুলো বন্ধ করা দরকার। যেনো তেনোভাবে যে কেউ যেনো সমিতি তৈরি করতে না পারে সেটিও প্রশাসনের নজরে রাখতে হবে। কঠোরভাবে এসব সমিতির গঠন প্রণালী প্রক্রিয়া প্রতিষ্ঠা সবকিছু নজরদারি করা দরকার। সমিতির নামে তারা দেশের অর্থ পাচার করার সংবাদও আছে। অবৈধভাবে অর্থ লেনদেন হুন্ডির ব্যবসার সাথে জড়িত। এগুলো কোনোভাবেই প্রশ্রয় দেয়া মোটেও সমুচিত হবেনা।
তাই সমিতির নামে দাদন ব্যবসার অত্যাচার হতে জনগণের মুক্তির পথ খুঁজতে হবে। ঋণদানের নামে উচ্চহারে সুদ গ্রহণের ব্যবসা বন্ধ করতে হবে। সভ্য সমাজে এ ধরনের আচার অনুষ্ঠানকে কোনোভাবেই ব্যবসা বলা যায়না। তারা ব্যবসায়ী নয়। তারা ব্যবসার নামে জনগণের অর্থনৈতিক মৌলিক অধিকার হরণ করছে। কেন্দ্রীয়ভাবে এবং স্থানীয়ভাবে প্রশাসনের ব্যাপক নজরদারি এসব দাদন ব্যবসায়ী সমিতির বিরুদ্ধে থাকা চায়।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla