তত্ত্বাবধায়ক সরকার আমলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাকে চাকরিতে পুনর্বহাল করতে প্রায় এক যুগ আগে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায় বাতিল করে দিয়েছেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগ।
প্রধান বিচারপতি হাসান ফয়েজ সিদ্দিকীর নেতৃত্বাধীন আপিল বিভাগের ছয় সদস্যের বেঞ্চ বৃহস্পতিবার এই রায় দেন। রায়ে ৮৫ জনকে পুনর্বহালে প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষের করা আপিল মঞ্জুর করা হয়েছে। এর ফলে চাকরিচ্যুত ৮৫ জন আর চাকরি ফেরত পাচ্ছেন না।
আদালতে রাষ্ট্রপক্ষে শুনানি করেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন, অতিরিক্ত অ্যাটর্নি জেনারেল শেখ মোহাম্মদ মোরশেদ ও মোহাম্মদ মেহেদী হাছান চৌধুরী। অন্যদিকে চাকরিচ্যুত নির্বাচন কর্মকর্তাদের পক্ষে শুনানি করেন জ্যেষ্ঠ আইনজীবী এ এফ হাসান আরিফ, প্রবীর নিয়োগী, সালাহ উদ্দিন দোলন ও কামরুল হক সিদ্দিকী।
মামলার বিবরণে জানা যায়, ২০০৫ সালের ৩ সেপ্টেম্বর সরকারি কর্ম কমিশনের (পিএসসি) মাধ্যমে ৩২৭ জনকে উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা হিসেবে অস্থায়ীভাবে নির্বাচিত করা হয়। বিএনপির নেতৃত্বাধীন চারদলীয় জোট সরকারের আমলের এই নিয়োগ নিয়ে বিতর্ক ওঠার পর ২০০৭ সালের তত্ত্বাবধায়ক সরকার ৩২৭ জনের মূল্যায়ন পরীক্ষা গ্রহণ করে। তাদের মধ্যে অনুত্তীর্ণ ৮৫ জনকে ওই বছরের ৩ সেপ্টেম্বর চাকরিচ্যুত করা হয়। এর বিরুদ্ধে চাকরিচ্যুত প্রার্থীরা মামলা করলে ২০০৯ সালের ২৩ মার্চ তা খারিজ করে রায় দেন প্রশাসনিক ট্রাইব্যুনাল। এর বিরুদ্ধে তারা প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনালে আপিল করেন। ২০১০ সালের ১২ এপ্রিল ওই আপিল মঞ্জুর করে ৮৫ জনকে চাকরিতে পুনর্বহালের পক্ষে রায় দেন প্রশাসনিক আপিল ট্রাইব্যুনাল। পরে ওই রায়ের বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ পৃথক চারটি লিভ টু আপিল (আপিলের অনুমতি চেয়ে আবেদন) করে।
এর পরিপ্রেক্ষিতে আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত ২০১০ সালের ২৯ এপ্রিল আপিল ট্রাইব্যুনালের রায়ের কার্যকারিতা স্থগিত করে বিষয়টি আপিল বিভাগের নিয়মিত বেঞ্চে শুনানির জন্য পাঠান। এর ধারাবাহিকতায় ২০১১ সালে সরকার পক্ষ পৃথক আপিল করে। গত ২৮ আগষ্ট পৃথক আপিলের শুনানি শেষ হয়, যার ধারাবাহিকতায় এ রায় দেন আপিল বিভাগ।