ব্যায়াম হৃদপিণ্ডের জন্য ভালো এবং টাইপ-২ ডায়াবেটিস না হতে সাহায্য করে এবং অনেক ধরনের ক্যান্সার প্রতিরোধেও ভূমিকা পালন করে। এ কথা ভুলে গেলে চলবে না, স্বাস্থ্যই সকল সুখের মূল। স্বাস্থ্যই মানুষের মূল্যবান সম্পদ। যেসব কারণে ব্যায়ামের প্রয়োজন নিয়মিত, পরিমিত ব্যায়াম যারা করেন তাদের স্বাস্থ্য ভালো থাকে এবং স্বাস্থ্য সবলতা বজায় থাকে। জীবনের প্রতিটি পদক্ষেপে শারীরিক, কায়িক পরিশ্রম এবং ব্যায়ামের প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম। এ যুগের ছেলে-মেয়েরা, যুবক-যুবতীরা বেশি ফাস্টফুড আহার করে তারা মুটিয়ে যায় এবং বার্ধক্যের আগেই বার্ধক্যে উপনীত হয়। মেদ বহুল ব্যক্তির খাদ্যের প্রয়োজন বেশি কিন্তু তাতে স্নেহ জাতীয় খাবার কম থাকা উচিত, পক্ষান্তরে ক্ষীণ দেহ ব্যক্তির খাদ্যের প্রয়োজন কম কিন্তু তা স্নেহ জাতীয় হওয়া উচিত। মেদ বহুল ব্যক্তিদের এই যে রুগ্নতা যা একটি সামাজিক সমস্যাও বটে। যদি কেউ সুস্বাস্থ্যের অধিকারী না হয়, তারা সুখী হতে পারে না এবং জাতির জন্যও তারা কোনো অবদান রাখতে পারে না। সুতরাং এসব বাধা বিপত্তি এড়িয়ে চলার জন্য যুব সমাজকে এখনই সচেতন হতে হবে এবং আবাল, বৃদ্ধ-বনিতা সবাইকে ব্যায়াম করতে হবে। ব্যায়াম ছাত্র-ছাত্রীদের জন্যও গুরুত্বপূর্ণ কাজেই প্রতিটি স্কুল, কলেজে সঠিকভাবে ব্যায়ামের জন্য পাঠ্যসূচি থাকা উচিত। যারা ব্যায়ামের ওপরে প্রশিক্ষিত এবং দক্ষ তাদের ক্লাস নেয়ার জন্য অন্তর্ভুক্ত করা একান্ত প্রয়োজন বলে অভিজ্ঞজনরা মনে করেন। প্রতিটি স্কুল-কলেজে খেলার মাঠ থাকতে হবে। শরীর চর্চা ও খেলাধুলাতে জীবনের প্রথম থেকেই উদ্যোগী হওয়া প্রয়োজন; যাতে করে এর সুফল সারাজীবন ধরে ভোগ করা যায়। অফিস, আদালত, কর্মক্ষেত্রে ব্যায়ামাগার থাকাও প্রয়োজন। বিশ্রাম, আনন্দ এবং সুস্থ দেহ মন কাজের গতি বৃদ্ধিতে সহায়ক ভূমিকা পালন করতে পারে। ব্যায়ামের বিকল্প ব্যায়াম ছাড়া আর ভালো কিছু হতে পারে না। মনের জন্য যেমন গান-দেহের জন্য তেমন ব্যায়ামের প্রয়োজন। সুস্থ আত্মা শারীরিক উন্নতির জন্য সহায়ক। আর সুস্থ দেহ মনকে উন্নত ও দৃঢ় করে এবং জীবন যুদ্ধে জয়ী হতে সাহায্য করে।
নিয়মিত হাঁটা, সাঁতার কাটা, সাইকেল চালান এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী কিছু ব্যায়াম করার মাধ্যমে ব্যথা নিয়ন্ত্রণ করা যায় এবং সঙ্গে সঙ্গে উচ্চরক্তচাপ, ডায়াবেটিস, হৃদরোগ এবং অতিরিক্ত মোটা হওয়া থেকে রক্ষা পাওয়া যায়। মানুষের শরীর একটি দুর্গ বিশেষ। একে শত্র“র আক্রমণ থেকে রক্ষা করতে হলে শরীর চর্চার মাধ্যমে অবশ্যই সুদৃঢ় করতে হবে। চল্লিশ হল তারুণ্যের বার্ধক্যে উপনীত হওয়ার সময়। আর পঞ্চাশ হল বার্ধক্যের তারুণ্য। সব রোগ একটি বয়সের দিকেই দৌঁড়ায়-আর সেটি হচ্ছে বার্ধক্য। সময়ের কাছে সবাইকে আÍসমর্পণ করতে হয়। তবু আমরা যতদূর সম্ভব প্রতিরোধ করতে চেষ্টা করি। রুগ্ন দেহ রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে দুর্বল করে। সুখের বিপরীত নাম হল অসুখ। অসুখ হলেই আমরা বুঝতে পারি সুস্থ থাকা কতটা জরুরি। সুস্থ দেহ প্রশান্ত মন দিতে পারে আপনাকে, আমাকে দীর্ঘ জীবন। আমরা সবাই দীর্ঘ জীবন প্রত্যাশা করি। আমাদের সবার উচিত, শারীরিক, কায়িক পরিশ্রম করা। ব্যায়ামের জন্য কিছু নির্দিষ্ট সময় বের করে নেয়া। সকালের ব্যায়াম শরীরের জন্য বিশেষ করে ডায়াবেটিস রোগীদের জন্য বেশি উপকারী। সপ্তাহে অন্তত ৫ দিন ৩০-৪৫ মিনিট হাঁটা, শরীরের ঘাম ঝরানো-মনকে সতেজ করে, বিষণ্ণতা দূর করে, ঘুম ভালো হয়, কর্মস্পৃহা বৃদ্ধি করে। রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। কাজেই আর দেরি নয়, নিয়মিত ব্যায়াম করুন, শরীরটাকে সুস্থ রাখুন। সবারই সচেতন হতে হবে, তার কর্মে, বিশ্রামে এবং ব্যায়ামে।