মাহমুদুল হক আনসারী
রাষ্ট্র জনগণের । সরকার প্রতিষ্ঠা করে জনগণ। রাষ্ট্র ও সরকার জনগণের স্বার্থে। ভোট প্রদান করা এবং ভোটের পরিবেশ সৃষ্টি করা জনগণের স্বার্থে। একটি দেশ পরিচালনার জন্য সরকারের প্রয়োজন। গণতান্ত্রিক দেশে জনগণের ভোটাধিকার প্রয়োগের মাধ্যমে সরকার প্রতিষ্ঠা হয়। সরকারের কাজ হলো জনগণের নাগরিক অধিকার পূর্ণ ভাবে প্রতিষ্ঠা করা। রাষ্ট্রের অধিনে জনগণ পরিচালিত হয়। জনগণের দায়িত্ব রাষ্ট্রকে সমর্থন করা । রাষ্ট্র পরিচালকের কর্তব্য হলো জনগণের লাভ ক্ষতি চিন্তা করে রাষ্ট্র পরিচালনা করা । রাষ্ট্র জনগণের, জনগণ রাষ্ট্রের । জনগণ ছাড়া সরকার হয়না । জনগণের সমর্থন ছাড়া সরকার ক্ষমতা ধরে রাখতে পারে না। যে কোনোভাবে একটা সরকারের জন্য জনসমর্থন প্রয়োজন। সমর্থনহীন সরকার পুতুল সরকার । জনগণের আস্থায় প্রতিষ্ঠিত সরকার রাষ্ট্রের জন্য আশীর্বাদ । দুনিয়ার সব প্রতিষ্ঠান ওই সরকারকে সাধুবাদ জানায় । আর যে সরকারের প্রতি সেদেশের জনগণের সমর্থন থাকে না সে সরকার অপরাপর প্রতিষ্ঠানের সমর্থন অর্জন করতে পারে না।
বাংলাদেশ স্বাধীন হয়েছে গণতন্ত্র মানবাধিকার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য । দুই লক্ষ মা বোনের ইজ্জত সম্ব্রম হানি করে লাখো শহীদের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশের এ স্বাধীনতা । যেনো তেনো ভাবে বাংলাদেশ কারো আশীর্বাদে স্বাধীন হয়নি। স্বাধীনতাকে জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠার জন্য ব্যবহার করতে হবে। কোনো ধরনের জোর জবরদস্তি খবরদারি জনগণের বিরুদ্ধে প্রয়োগ করা যাবে না। বাংলাদেশের স্বাধীনতা প্রাপ্তি কোনো একক ব্যাক্তি বা গুষ্ঠির প্রাপ্য নয় । দেশের সব পক্ষ এবং জনগণ স্বাধীনতা অর্জনের মূল মালিক ।
স্বাধীনতা বাংলার জনগণ অর্জন করেছে এবং তারা এ অর্জন রাখবেই । জনগণের অধিকার পরিপন্থী নাগরিক স্বার্থ বিরোধী কোনো আইন বা জুলুম অত্যাচার স্বাধীনতা প্রিয় বাংলার জনগণ সহ্য করবেনা। দেশ এবং জনস্বার্থ বিরোধী সব ধরনের আইন প্রয়োগ থেকে বিরত থাকতে হবে। রাষ্ট্র বিরোধী চুক্তি জনগণের উপর ইচ্ছে মতো আন্তর্জাতিক ঋণ চেপে দেয়া মেনে নেয়া যাবে না। জনগণের সহ্য ক্ষমতার বাইরে রাষ্ট্রীয় কোনো সিদ্ধান্ত জনগণ মেনে নেবে না । রাষ্ট্রের কল্যান অকল্যান চিন্তা করে রাষ্ট্রীয় সিদ্ধান্ত সরকারকে গ্রহণ করতে হবে। জনগণের অগোচরে রাষ্ট্রকে তলাবিহীন করার মতো কোনো ধরনের চুক্তি ঋণ গ্রহণ করে যে কোনো ধরনের খেলা জনগণ কোনো অবস্থায় মানবে না ।
জনগণের সরকার জনতার পক্ষে সব ধরনের সিদ্ধান্ত নিতে বাধ্য । সিদ্ধান্ত নিতে হবে দেশের জনগণকে অবহিত করে । সব ধরনের চুক্তি রাষ্ট্রের ভালো মন্দের হিসেব জনগণকে জানিয়ে করা গণতান্ত্রিক অধিকার । সে অধিকার প্রাপ্য রাষ্ট্রের প্রতিটি নাগরিকের মৌলিক অধিকার । রাষ্ট্রের প্রতিষ্ঠিত গণতান্ত্রিক সরকার দেশ এবং জনগণের জন্য কী করছে তা জনগণ জানবে না সেটা হয় না । সরকারের নিকট রাষ্ট্র ও জনগণ আমানত । আমানতের হিসেব জনগণ পাই পাই হিসেব করে একদিন গ্রহণ করবে । ভূলে গেলে চলবে না অন্যায় করে রাষ্ট্রের বিরুদ্ধে অবস্থান করে কেউ কোনো দিন মুক্তি পাওয়ার ইতিহাস নেই ।
ক্ষমতার ধাপট এবং লোভে পরে স্বল্প সময়ে জনস্বার্থ বিরোধী অগনতান্ত্রিক কর্মসূচি বাস্তবায়ন সেটা সাময়িক বিষয় । এ ধরনের অনিয়ম এবং জনতা বিরোধী কর্মকান্ড বেশি দিন জনগণ মেনে নেয় না । এ সব আচরণের বিরুদ্ধে জনগণ একদিন সরকারের বিরুদ্ধে যেতে বাধ্য হবে । আগে জনগণের স্বার্থ রক্ষা করে পেটে ভাত দিতে হবে। তাদের মৌলিক অধিকার অতি সহজে বাস্তবায়ন করতে হবে। উপযুক্ত শিক্ষিত যুবকদের কর্মসংস্থান করতে হবে। মানসিক ভাবে শিক্ষিত বেকার যুব গোষ্ঠীর জন্য সময় মতো কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে । ক্ষমতা এবং সহ্যের বাইরে আন্তর্জাতিক ঋণের বোঝা জনগণের উপর চাপিয়ে দেয়া যায় না।
বৃহৎ প্রকল্প অযাচিত সরকারি অফিস আদালতের ব্যয় নির্দিষ্ট সীমার মধ্যে চালাতে হবে। রাষ্ট্রীয় অর্থ অপচয় বন্ধ করতে হবে। সরকারের বিভিন্ন সেক্টরের দুর্নীতির মাধ্যমে পাচার কৃত অর্থ দেশে ফেরত আনার ব্যবস্থা করতে হবে । বিদেশি ব্যাংকে দেশের দুর্নীতি বাজ রাঘব গোয়ালদের অর্থ পাচারকারী ব্যাক্তিদের নামের তালিকা জনগণের সামনে প্রকাশ করতে হবে। পাচারকৃত অর্থ দ্রুত আইনের মাধ্যমে ফিরিয়ে আনতে হবে। এসব দেশ এবং জনগণের অধিকার । গণতান্ত্রিক দেশ এবং সরকারের নৈতিক দায়িত্ব হলো জনগণের স্বার্থে কাজ করা । কোনো চুক্তি কোনো কর্মকান্ড জনগণকে ঘুমে রেখে করা চলবে না । জনতার সরকার জনগণের অধিকার প্রতিষ্ঠা করা । জনগণের দূঃখ দুর্দশা লাঘব করে । জনগণকে শান্তি এবং স্বস্থিতে রাখুন । চাল সহ সব ধরনের দ্রব্য মূল্যের গতি টেনে ধরুন । বাজার মনিটরিং নিয়মিত করুন । তবেই জনগণের আস্থা বিশ্বাস টিক থাকবে, অন্যথায় জনগণ এসবের বিরুদ্ধে রাস্তায় নামতে বাধ্য হবে ।