আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ
মোঃ মজিবুল হক শুধু শুধু একজন ব্যক্তি নন বরং একটি প্রতিষ্ঠান। পটুয়াখালি জেলার মীর্জাগঞ্জ উপজেলার মাধবখালী ইউনিয়নের চৈতা গ্রামের এই অক্লান্ত কর্মবীর দেশের শীর্ষস্থানীয় স্বেচ্ছাসেবী এনজিও প্রতিষ্ঠান পদক্ষেপ মানবিক উন্নয়ন কেন্দ্র এর একজন অফিস স্টাফ হিসেবে ২০০৫ইং সনের ২৯ জানুয়ারি কর্মজীবন শুরু করেন। ২০১২ইং সনের ১৩ মে সুনামগঞ্জে যোগদান করেন। এরিয়া ম্যানাজার হিসেবে অত্যন্ত সততার সাথে ২০১২ইং সাল থেকে ৩১ জুলাই ২০২২ ইং পর্যন্ত সুনামগঞ্জ সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় চাকুরী করেন। ১লা আগস্ট ২০২২ইং তিনি নবগঠিত বেসরকারী উন্নয়ন সংস্থা বন্ধন মানবিক কল্যাণ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে পরিচালক হিসেবে যোগদান করত: নতুন কর্মজীবন শুরু করতে যাচ্ছেন।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে কয়েকজন এনজিও কর্মকর্তা দু:খ প্রকাশ করে বলেন,মজিবুল হক দীর্ঘদিনের সাবেক সংস্থা পদক্ষেপ থেকে নিজেকে অনেকটা অনিচ্ছাকৃতভাবেই সরিয়ে নিচ্ছেন। কারণ পদক্ষেপে কর্মরত থাকাবস্থায় বার বার পদোন্নতি পরীক্ষায় উত্তীর্ণ হওয়ার পরও তিনি প্রমোশন পাননি। অথচ এই সংস্থাটিতে তিনি ভূতের মতো খেটে গিয়েছেন। অনেক ঘটনা দূর্ঘটনার মুখোমুখি হয়েছেন। জীবন যৌবন তারুণ্য বলতে যা বুঝায় সবকিছুই বিলিয়ে দিয়েছিলেন সংস্থাটির পেছনে। কিন্তু পদক্ষেপ তার মত বিচক্ষণ সৎ কর্মচারীকে ঠিকমতো মূল্যায়ন করেনি। জুনিয়র অনেকেই পদোন্নতি পেয়েছেন কিন্তু তার বেলায় ব্যতিক্রম হয়েছে। উপরওয়ালারা মাঠপর্যায়ে আমাদের কষ্ঠ শ্রম সাধনার মূল্যায়ন করতে জানেননা বা ইচ্ছে করেই করেননা বলেই নিবেদিতরা কষ্ট পান এবং অবস্থানের রদবদল করেন বাধ্য হয়ে ।
পদক্ষেপ সংস্থাটির কর্মচারীরা জানান,এরিয়া ম্যানাজার হিসেবে সুনামগঞ্জে মজিবুল হক এতটাই শ্রম সাধনা করেছেন যে,তার হাত ধরেই পদক্ষেপ সংস্থাটির আলাদা পরিচয় ছাড়াও সার্বিক বিকাশ ঘটেছে। দীর্ঘ কর্মজীবনের এত বিশাল কর্মকান্ডের কোথায়ও কোন ত্রুটি বা অনিয়ম দুর্নীতি পরিলক্ষিত হয়নি তার কর্মকালে। সুনামগঞ্জে যোগদানের পর থেকে স্বাস্থ্য,শিক্ষা,স্যানিটেশন,ভিক্ষুক পূণর্বাসন, বাল্যবিবাহ প্রতিরোধ,প্রবীণ সহায়তা ভাতা প্রদান,বিনামূল্যে হ্যাল্থ ক্যাম্প,চক্ষু রোগীদের চিকিৎসা ও অপারেশন,কৃষি পূণর্বাসন,বৈকালিক শিক্ষাকেন্দ্রে ঝড়ে পড়াদের শিক্ষাদানসহ সকল মানবিক কর্মকান্ডের মধ্যে দিয়ে তিনি যেমন তার ব্যক্তিগত গ্রহনযোগ্যতাকে তুলে ধরেছেন তেমনি সংস্থাটির সুনাম ও মর্যাদা বৃদ্ধি করেছেন। এলাকার উপকারভোগী,গণ্যমান্য ব্যক্তিবর্গ,নির্বাচিত জনপ্রতিনিধি,শিক্ষক,সাংবাদিক ও প্রশাসনসহ সকল শ্রেণিপেশার কর্মকর্তা ও প্রতিনিধিদের সাথে সুসম্পর্ক স্থাপনের মধ্যে দিয়ে সংস্থার কার্যক্রমকে সারাদেশের সামনে স্বগৌরবে উপস্থাপন করেছেন। তার হাত ধরেই সুনামগঞ্জ,সিলেট ও মৌলভীবাজার জেলায় পদক্ষেপ এর পরিচিতি বৃদ্ধি পায়। সংস্থাটির সকল সেবা কার্যক্রম সুচারুরুপে সম্পন্ন করার মধ্যে দিয়ে তৃণমূল পর্যায়ের মানুষের কাছে তার নিজের ব্যক্তিগত ও সংস্থাটির আলাদা গ্রহনযোগ্যতা গড়ে তুলেছেন। বিভিন্ন দুর্যোগকালীন সময়ে ত্রাণ বিতরন ও অপরাপর সকল এনজিও সংগঠনগুলোর সাথে সমন্বয় করে ত্রাণ ও পূণর্বাসন কার্যক্রম পরিচালনা করে তিনি একজন নিরলস এনজিও কর্মী থেকে মানবতার ফেরিওয়ালা হিসেবে আলাদা পরিচিতি ও গ্রহনযোগ্যতা স্থাপন করেছেন সিলেট ও সুনামগঞ্জে। ব্যক্তিগত জীবনে একটি মাত্র সন্তানের জনক হওয়ায় ৩ সদস্যের একটি সুখী পরিবার নিয়ে কর্মব্যস্ততার মাঝেই ডুবে থাকেন তিনি। নতুন কর্মস্থল ঢাকায় বন্ধন মানবিক কল্যাণ সংস্থার প্রধান কার্যালয়ে প্রতিষ্ঠাতা চেয়ারম্যান হাসানুর রহমানের হাত ধরে এই সংস্থাটিকে দ্রুত এগিয়ে নিতে মজিবুল হক প্রাণান্তকর প্রচেষ্টা অব্যাহত রাখবেন এমন প্রত্যাশা করেন সকলে।