সাংবাদিক আহমদ কবিরসহ চারজনকে আসামী করে আদালতে পৃথক তিনটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। অতিরিক্ত চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিষ্ট্রেট আদালতে এই মামলা দায়ের করা হয়। আলোচিত নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা, পুত্র ফোরকান সহযোগি নবী হোসেন বাদী হয়ে গত মাসের ১৫, ২০ ও ২৬ তারিখে এই মামলা দায়ের করা হয় বলে সংশ্লিষ্ট সুত্র জানায়।
পৃথক তিনটি মামলার তদন্তভার টুরিস্ট পুলিশ, ডিবি ও সিআইডি পুলিশের বরাবর ন্যাস্ত করা হয়। আদালত সরেজমিনে তদন্ত করে রিপোর্ট দাখিল করতে বলেছেন সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলোকে। মামলায় যাদের আসামী করা হয় তারা প্রত্যেকে উচ্চ শিক্ষিত এবং স্ব -স্ব জায়গায় প্রতিষ্ঠিত। তেইন্যা, পুত্র ফোরকান জিআর-২০৪/২১ চাঞ্চল্যকর জাল দলিল মামলার আসামী। যা রাষ্ট্রদ্রোহী মামলার পর্যায়ে পড়ে বলে জানিয়েছেন আইন বিশেষজ্ঞরা।
চট্টগ্রাম এল এ শাখার দালাল নবী হোসেন নারী শিশু ৩৫৩/১৯ মামলাসহ তিনটি ফৌজদারী মামলার আসামী। চাঞ্চল্যকর এসব মামলা থেকে বাঁচার জন্য এই তিন আসামী তিনটি মামলা দায়ের করে আদালতে। টাউট তেইন্যা তার দায়েরকৃত সিআর-২৭২/২২ মামলার ঘটনা দেখায় চাতরী চৌমুহনী বাজারের পাঁচ সিকদার পুলের ২শ’গজ ঠিক পশ্চিমে। আসামীরা মারধর এবং ১০লক্ষ টাকা চাঁদাদাবী করেন বলে মামলায় অভিযোগ আনা হয়। টাউট তেইন্যা পুত্র ফোরকান ২৭৭/২২ দায়েরকৃত মামলায় জাল জালিয়াতি করে চট্টগ্রাম এলএ শাখা হতে টাকা উত্তোলন এবং চাতরী চৌমুহনী বাজারস্থ ওয়ান মাবিয়া শপিং সেন্টারের সামনে রাস্তায় মারধর করে গুরুতর আহত করা হয় বলে উল্লেখ করা হয়।
নবী হোসেন সিআর-২৮৬/২২ দায়েরকৃত মামলায় দাবী করে, গত মাসের ১৮ জুন গরু ক্রয়ের উদ্দেশ্যে মুহাম্মদপুর রাস্তার মাথায় পৌঁছিলে আসামীগণ তাকে মারধর করে সাথে থাকা পঁয়ষট্টি (৬৫) হাজার টাকা জোরপূর্বক ছিনিয়ে নেয়। চট্টগ্রাম এলএ শাখা হতে অধিগ্রণের টাকা উত্তোলনের অভিযোগও আনা হয় নবীর মামলায়। বিবাদী কফিল উদ্দীন, ইঞ্জিনিয়ার হাফেজ মোঃ ওমর ফারুক গুরুতর অসুস্থ মাকে নিয়ে দীর্ঘ কয়েকমাস ধরে হাসপাতালে ব্যস্ত রয়েছেন। তাদের মা এখন মৃত্যু শর্য্যায়। এই অবস্থায় তাদের বিরুদ্ধে দেয়া হচ্ছে একাধিক মিথ্যা মামলা। নুরুল ইসলাম প্রকাশ টাউট তেইন্যা পুত্র ফোরকান এর বিরুদ্ধে জাল দলিলের মামলায় ইতোমধ্যে অভিযোপত্র দাখিল করা হয়েছে। মামলাটি এখন চার্জ গঠনের পর্যায়ে রয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা গেছে, পিতা পুত্রের দায়েরকৃত মামলা সম্পর্কে কেউ অবগত নয় বলে জানিয়েছেন। চৌমুহনী বাজারের কেই বলতে পারেনি ওই দিনের ঘটনা সম্পর্কে। ফাঁসানোর জন্য সুকৌশলে বানোয়াট কেচ্ছাকাহিনী বানিয়ে এই তিনটি মামলা দেয়া হয়েছে বলে জানায় এলাকার একাধিক সচেতন ব্যক্তিরা।
সুত্রটি জানায়, টাউট তেইন্যা, পুত্র ফোরকান বড় ধরনের জালিয়াতকারী। এমন কোন হেন কাজ নেই যা তারা পারেনা। চট্টগ্রাম কোর্ট বিল্ডিংয়ে আস্তানা ঘেড়ে দীর্ঘদিন জাল কবলা, জাল খতিয়ানসহ নানা প্রতারনামুলক কর্মকান্ড করে আসছে। মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানী করে আসছে। তারা জাল দলিল তৈরী চক্রের অন্যতম সদস্য। প্রতারনা জাল দলিলের মাধ্যমে স্থানীয় বেলচুড়া গ্রামের বাসিন্দা মরহুম শাহাব উদ্দীনের পরিবারের সহায় সম্পত্তি আত্মসাতের ঘটনা যা পিবিআই’র তদন্তে উঠে এসেছে।
স্থানীয় সুত্রটি আরো জানায়, টাউট তেইন্যা, পুত্র ফোরকান জাল দলিল মামলায় হাইকোর্টের জামিনে আছে। তেইন্যা দুই মাস জেল খেটে হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়ে চট্টগ্রাম কেন্দ্রীয় কারগার থেকে বের হয়েছে। মরহুম দানা মিয়ার পরিবারের সম্পত্তি আত্মসাত এবং জেলে যাওয়ার যন্ত্রনা সহ্য করতে পারছেনা বাপ-বেটা। তাই একটি কুচক্রি মহলের ইন্দনে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে যাচ্ছে তেইন্যারা।
জানা গেছে, সাংবাদিক আহমদ কবির ডায়াবেটিকস ও গুরুতর হার্টের রোগি। তিনি ঠিক মতো চলাফেরাও করতে পারেনা। তেইন্যার দেয়া নারী নির্যাতন মামলায় বেকসুর খালাস পেয়েছেন তিনি। বর্তমানে দেয়া হচ্ছে একের পর এক মিথ্যা মামলা ।
মরহুম শাহাব উদ্দীনের বড় ছেলে মফিজ উদ্দীন অভিযোগ করে বলেছেন, তার চাচা সাংবাদিক আহমদ কবির পেশাগত কারনে চট্টগ্রাম শহরে বসবাস করেন। তিনি মাঝে মধ্যে আমাদের বাড়িতে আসেন। ভাইদের দেখতে আসেন। তার কোন বাড়িঘর নেই। গত মাসের ১৮ তারিখে চট্টগ্রাম শহর থেকে বাড়িতে আসার সময় তাকে মারধর করে হত্যার চেষ্টা চালানো হয়। মাথায় আঘাত করা হয়। তিনি ওইদিন ভাগ্যক্রমে বেঁচে যান। এঘটনায় তেইন্যাসহ চারজনের নামে মামলা দায়ের করেন তিনি। এতে ক্ষেপে যায় তেইন্যারা। বর্তমানে চাচাকে মেরে ফেলার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে অভিযোগ করেন মফিজ উদ্দীন। তেইন্যার কঠোর শাস্তি দাবী করেন কবিরের বড় ভাই আবদুল আজিজ, বাবুল মিয়া ভাতিজা আমির হোসেনসহ এলাকার একাধিক ব্যক্তি। সম্পত্তি দখলের লক্ষ্যে এলএ শাখা হতে টাকা আত্মসাতের জন্য পটিয়া সহকারী জজ (আনোয়ারা) আদালতেও বেশ কয়েকটি মামলা দিয়ে হয়রানী করে যাচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন তারা।