1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৩:০৯ অপরাহ্ন

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৭৪ বছরে পদার্পণ

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ বুধবার, ২২ জুন, ২০২২
  • ১৫২ বার পড়া হয়েছে

মো. আবদুর রহিম

বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের জন্ম ১৯৪৯ সালের ২৩ জুন। সে হিসেবে ২৩ জুন ২০২২ বৃহস্পতিবার এ রাজনৈতিক দলটি ৭৪ বছরে পদার্পণ করলো। ২৩জুন দেশ ও বিদেশে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম বর্ষ পালন করে। ২৫ জুন ২০২২ তারিখে জাতি বিশাল এক প্রাপ্তির উৎসবও করবে। দেশের বৃহৎ সেতু এবং বিশে^র ১২২ তম বৃহৎ সেতু ‘পদ্মা বহুমূখি সেতু’ উদ্বোধন করবেন মাননীয় প্রধানমন্ত্রী, আওয়ামী লীগ সভাপতি শেখ হাসিনা। নিজস্ব অর্থায়নে নির্মিত এ সেতু দেশ-জাতির জন্য গর্ব ও গৌরবের। স্বাধীনতা অর্জন থেকে পদ্মা সেতু নির্মাণ বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ইতিহাস ও ঐতিহ্যে ২টি বিশাল মাইলফলক। জাতি যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩ বছর পূর্তি পালন করেছে, তখন বাংলাদেশ ভয়াবহ দুর্যোগে নিপতিত। দেশের সিলেট বিভাগ, রংপুর বিভাগ সহ প্রায় ১৬টি জেলা বন্যার পানিতে তলিয়ে গেছে। ঘর-বাড়ি, শিক্ষা প্রতিষ্ঠান, অফিস আদালত, ব্যবসা-বাণিজ্য সবই তলিয়ে গেছে বানের জলে। ভারতের আসাম, মেঘালয়, উত্তর পূর্বদিকের রাজ্যগুলো প্রবল বৃষ্টির জেড়ে ভেসে গেছে বাংলাদেশ। বাংলাদেশের বিভিন্ন অঞ্চলের নদ-নদীর পানি বৃদ্ধি অব্যাহত রয়েছে। উজানের অর্থাৎ ভারতের ভারী বৃষ্টিপাত, পাহাড়ি ঢলে নতুন করে বিভিন্ন এলাকা প্লাবিত হচ্ছে। তলিয়ে যাচ্ছে গ্রামের পর গ্রাম। মুহুরী নদীর উজানে নদী রক্ষা বাঁধ ভেঙে ফেনীর ফুলগাজী ও পরশুরামের ১০ গ্রাম প্লাবিত হয়েছে। রংপুরে তিস্তার পানি বিপদসীমার ওপর দিয়ে রইছে। যমুনা নদীর পানি বৃদ্ধি পেয়ে বগুড়ায় বণ্যা পরিস্থিতির অবনতি হয়েছে। গাইবান্ধা, কুড়িগ্রাম, টাঙ্গাইল, লালমনিরহাট, সিরাজগঞ্জ সহ দেশের বিভিন্ন এলাকায় বন্যা পানি ঢুকে পড়েছে নতুন নতুন এলাকায়। এদিকে ২১ জুন ২০২২ খ্রি.মঙ্গলবার সকালে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা সিলেট ও সুনামগঞ্জ বন্যা কবলিত এলাকা পরিদর্শন করে ত্রাণ বিতরণ সহ ক্ষতিগ্রস্থদের সমাবেদনা জানিয়েছেন। এদিকে ২০ জুন ২০২২ খ্রি. অনুষ্ঠিত মন্ত্রী-সভা বৈঠকে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী প্রশাসন সহ সংশ্লিষ্টদের বন্যার জন্য প্রস্তুত থাকার নির্দেশনা দিয়েছেন। আসামের বন্যার পানি কিশোরগঞ্জ, হবিগঞ্জ ও মৌলভীবাজারের দিকে আসতে পারে। সেজন্য সংশ্লিষ্ট জেলা প্রশাসনদের সর্বোচ্চ সতর্ক থাকার নির্দেশনা এসেছে। বাংলাদেশ ভাটির দেশ। এদেশে বন্যা, খড়া, ভূমিকম্প, ঘূর্ণিঝড় জলোচ্ছ্বাস লেগেই থাকে। নানা দুর্যোগ ও প্রতিকূল বৈরী পরিবেশ মোকাবিলা করেই বাংলাদেশকে সামনে এগোতে হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের দিকে ফিরে তাকালে আমরা দেখি ১৯৪৯ ২৩ জুন থেকে ২৩ জুন ২০২২ খ্রি. পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্ব কারা পালন করেছেন ? তথ্যে দেখা যায়, ১৯৪৯ সালে সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শামসুল হক, ১৯৫৩ সালে সভাপতি মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৫৫ সালে সভাপতি মাওলনা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৫৭ সালে সভাপতি মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৬৪ সালে সভাপতি মাওলানা আবদুল রশিদ তর্ক বাগিশ, সাধারণ সম্পাদক শেখ মুজিবুর রহমান, ১৯৬৬ সালে সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাক তাজউদ্দিন আহমদ, ১৯৬৮ সালে সভাপতি শেখ মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ, ১৯৭০ সালে সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক তাজউদ্দিন আহমদ, ১৯৭২ সালে সভাপতি বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, ১৯৭৪ সালে সভাপতি এএইচ এম কামরুজ্জামান, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, ১৯৭৬ সালে সভাপতি মহিউদ্দিন আহমেদ (ভারপ্রাপ্ত) সাধারণ সম্পাদক সাজেদা চৌধুরী (ভারপ্রাপ্ত), ১৯৭৭ সালে আহ্বায়ক জোহরা তাজউদ্দিন। ১৯৭৮ সালে সভাপতি আবদুল মালেক উকিল, সাধারণ সম্পাদক আবদুর রাজ্জাক, ১৯৮১ সালে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদকি আবদুর রাজ্জাক, ১৯৮২ সালে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক সাজেদা চৌধুরী, ১৯৮৭ সালে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, ১৯৯২ সালে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক জিল্লুর রহমান, ২০০২ সালে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক মো. আবদুল জলিল, ২০০৯ সালে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম, ২০১২ সালে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক সৈয়দ আশরাফুল ইসরাম, ২০১৬ সালে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের, ২০১৯ সালে সভাপতি শেখ হাসিনা, সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের। অর্থাৎ ১৯৪৯ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ১৯টি কাউন্সিল অনুষ্ঠিত হয়। বিশতম কাউন্সিল আগামী ডিসেম্বর ২০২২ খ্রি. অনুষ্ঠিত হওয়ার সম্ভাবনা আছে। এ যাবত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতি পদে ৮ জন, তন্মধ্যে মাওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানী ৪ মেয়াদে, আবদুর রশিদ তর্কবাগিশ ১ মেয়াদে, শেখ মুজিবুর রহমান ৪ মেয়াদে। এএইচএম কামরুজ্জামান এক মেয়াদে, মহিউদ্দিন আহমেদ ভারপ্রাপ্ত এক মেয়াদে, জোহরা তাজউদ্দিন আহ্বায়ক এক মেয়াদে, আবদুল মালেক উকিল এক মেয়াদে এবং শেখ হাসিনা দশ মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। এসময়ে সাধারণ সম্পাদক পদে ৯ জন দায়িত্ব পালন করেন তন্মধ্যে শামসুল হক এক মেয়াদে, শেখ মুজিবুর রহমান চার মেয়াদে, তাজউদ্দিন আহমদ দুই মেয়াদে, জিল্লুর রহমান চার মেয়াদে, সাজেদা চৌধুরী তিন মেয়াদে, আবদুর রাজ্জাক দুই মেয়াদে, মো. আবদুল জলিল এক মেয়াদে, সৈয়দ আশরাফুল ইসলাম দুই মেয়াদে এবং ওবায়দুল কাদের দুই মেয়াদে দায়িত্ব পালন করেন। পাকিস্তান আমলের ২৩ বছরের শোষণ, বঞ্চনা, বৈষম্য ও নির্যাতনের পর ১৯৭১ সালের ২৬ মার্চ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। পাকিস্তানি দখলদার-হানাদার সামরিক বাহিনীর কবল থেকে বাংলাদেশকে শত্রুমুক্ত করতে জাতি বঙ্গবন্ধুর আহ্বানে ৯ মাস ব্যাপী সশস্ত্র যুদ্ধ করে। ৩০ লক্ষ শহীদ ও ২লক্ষ ৬৯ হাজার মা-বোনের সম্ভ্রমের বিনিময়ে বাংলাদেশ ১৯৭১ সালে ১৬ ডিসেম্বর বিজয় অর্জন করে। ১৯৭১ থেকে ২০২২ সাল পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে রাষ্ট্র পরিচালনায় মহামান্য রাষ্ট্রপতি পদে ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ থেকে ১২ জানুয়ারী ১৯৭২ পর্যন্ত ২৭০ দিন, অস্থায়ী রাষ্ট্রপতি সৈয়দ নজরুল ইসলাম ১৭ এপ্রিল ১৯৭১ থেকে ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ খ্রি. ২৭০ দিন, আবু সাঈদ চৌধুরী ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ থেকে ২৪ ডিসেম্বর ১৯৭৩ খ্রি. ১ বছর ৩৪৬ দিন, মোহাম্মদ উল্লাহ ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪ থেকে ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ খ্রি. ১ বছর ৩২ দিন বাকশাল গঠনের পর শেখ মুজিবুর রহমান ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ থেকে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ খ্রি. ২০২ দিন দায়িত্ব পালন করেন। ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান সামরিক অভ্যুত্থানে নিহত হন। খন্দকার মোশতাক আহমেদ ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ থেকে ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ পদচ্যুত পর্যন্ত, আবু সাদাত মোহাম্মদ সায়েম ৬ নভেম্বর ১৯৭৫ থেকে ২১ এপ্রিল ১৯৭৭ পর্যন্ত ১ বছর ১৬৬ দিন, জিল্লুর রহমান ১২ ফেব্রুয়ারি ২০০৯ থেকে ২০ মার্চ ২০১৩ খ্রি, পর্যন্ত ৪ বছর ৩৬ দিন (মৃত্যু পর্যন্ত), আবদুল হামিদ, ১৪ মার্চ ২০১৩ থেকে ২৪ এপ্রিল ২০১৩ (ভারপ্রাপ্ত), ২৪ এপ্রিল ২০১৩ থেকে ২৪ এপ্রিল ২০১৮ পর্যন্ত ৯ বছর ৮৯ দিন এবং ২৪ এপ্রিল ২০১৮ থেকে চলমান দায়িত্ব পালন করে যাচ্ছেন। ১৯৭২ সাল থেকে ২০২২ পর্যন্ত সময়ে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে মহান জাতীয় সংসদের স্পিকার ও ডেপুটি স্পিকারের দায়িত্ব পালন করেন প্রথম সংসদে স্পিকার শাহ আবদুল হামিদ, ১০ এপ্রিল ১৯৭২ থেকে ১ মে ১৯৭২, মোহাম্মদ উল্লাহ ৭ এপ্রিল ১৯৭৩ থেকে ২৬ জানুয়ারি ১৯৭৪ খ্রি. আবদুল মালেক উকিল ২৭ জানুয়ারি ১৯৭৪ থেকে ৫ নভেম্বর ১৯৭৫ পর্যন্ত, ডেপুটি স্পিকার মোহাম্মদ বায়তুল্লাহ ১০ এপ্রিল থেকে ৫নভেম্বর ১৯৭৫ খ্রি. পর্যন্ত, সপ্তম সংসদে স্পিকার হুমায়ন রশিদ চৌধুলী ১৪ জুলাই ১৯৯৬ থেকে ১০ জুলাই ২০২১ খ্রি. এডভোকেট আবদুল হামিদ ১২ জুলাই ২০০১ থেকে ৮ অক্টোবর ২০০১ খ্রি.পর্যন্ত, ডেপুটি স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ ১৪ জুলাই ১৯৯৬ থেকে ১০ জুলাই ২০০১ খ্রি. অধ্যাপক আলী আশরাফ ১২ জুলাই ২০০১ খ্রি. থেকে ৮অক্টোবর ২০০১ খ্রি. পর্যন্ত নবম সংসদে স্পিকার এডভোকেট আবদুল হামিদ ২৫ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ২৪ এপ্রিল ২০১৩ খ্রি. পর্যন্ত, শওকত আলী (ভারপ্রাপ্ত স্পিকার) ২৪ এপ্রিল ২০১৩ থেকে ৩০ এপ্রিল ২০১৩ খ্রি. পর্যন্ত। শিরীন শারমীন চৌধুরী ৩০ এপ্রিল ২০১৩ থেকে ২৪ জানুয়ারি ২০১৪ খ্রি. পর্যন্ত, ডেপুটি স্পিকার শওকত আলী ২৫ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে ২৪ এপ্রিল ২০১৩ খ্রি. এবং ৩০ এপ্রিল ২০১৩ থেকে ২৪ জানুয়ারি ২০১৪ খ্রি. পর্যন্ত। দশম সংসদে স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ২৪ জানুয়ারি ২০১৪ থেকে ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ খ্রি. পর্যন্ত, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া ২৪ জানুয়ারি ২০১৪ থেকে ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ খ্রি. পর্যন্ত। একাদশ সংসদ স্পিকার শিরীন শারমিন চৌধুরী ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে চলমান, ডেপুটি স্পিকার ফজলে রাব্বি মিয়া ৩০ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে চলমান। ১৯৭১ থেকে ২০২২ খ্রি. পর্যন্ত বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ মনোনীত বাংলাদেশের প্রধানমন্ত্রী পদে দায়িত্ব পালন করেন তাজউদ্দিন আহমেদ ১১ এপ্রিল ১৯৭১ থেকে ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ খ্রি. পর্যন্ত, বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ থেকে ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ খ্রি. পর্যন্ত, মো. মনসুর আলী ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ থেকে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ খ্রি. পর্যন্ত, শেখ হাসিনা ২৩ জুন ১৯৯৬ থেকে ১৫ জুলাই ২০০১ খ্রি. পর্যন্ত, শেখ হাসিনা ৬ জানুয়ারি ২০১৯ থেকে চলমান। বাংলাদেশ জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে সংসদ নেতা শেখ মুজিবুর রহমান ১২ জানুয়ারি ১৯৭২ থেকে ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ খ্রি. পর্যন্ত (বাকশাল গঠনের পর) মুহাম্মদ মনসুর আলী ২৫ জানুয়ারি ১৯৭৫ থেকে ১৫ আগস্ট ১৯৭৫ (পদচ্যুত) পর্যন্ত, বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে শেখ হাসিনা ২৩ জুন ১৯৯৬ থেকে ১৫ জুলাই ২০০১ খ্রি. পর্যন্ত, শেখ হাসিনা ৬ জানুয়ারি ২০০৯ থেকে চলমান দায়িত্বরত আছেন। ১৯৭২ থেকে মহান জাতীয় সংসদে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ থেকে বিরোধী দলীয় নেতা প্রথম সংসদে ৭ মার্চ ১৯৭৩ থেকে ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৯ খ্রি. পর্যন্ত খালি। দ্বিতীয় সংসদে আসাদুজ্জামান খান ১৮ ফেব্রুয়ারি ১৯৭৩ থেকে ২৪ মার্চ ১৯৮২ খ্রি. পর্যন্ত। তৃতীয় সংসদে শেখ হাসিনা ৭ মে ১৯৮৬ থেকে ৩ মার্চ ১৯৮৮ খ্রি. পর্যন্ত। ৫ম জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা ২৭ ফেব্রুয়ারি ১৯৯১ থেকে ১৫ ফেব্রুয়ারি ১৯৯৬ খ্রি. পর্যন্ত। ৮ম জাতীয় সংসদে শেখ হাসিনা ১ অক্টোবর ২০০১ থেকে ২০২২ পর্যন্ত। বাংলাদেশে এগারোটি জাতীয় সংসদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তন্মধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ প্রথম জাতীয় সংসদে, ৭ম জাতীয় সংসদে, ৯ম জাতীয় সংসদে, দশম ও একাদশ জাতীয় সংসদ সহ মোট ৬টি জাতীয় সংসদ নির্বাচনে বিজয় অর্জন করে রাষ্ট্র পরিচালনা করে যাচ্ছে। এছাড়া বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ তৃতীয়, পঞ্চম, অষ্টম জাতীয় সংসদে মোট ৩টি সংসদে প্রধান বিরোধী দলীয় নেতার দায়িত্ব পালন করে। সর্বকালের সর্বশ্রেষ্ঠ বাঙালি, জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের আহ্বানে সাড়া দিয়ে দীর্ঘ ২৩ বছরের রাজনৈতিক সংগ্রাম ও ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী মুক্তিযুদ্ধের মাধ্যমে ১৯৭১ সালের ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করে বাঙালি। ২০২২ সালে যখন বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ৭৩তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকী পালন করছে তখন বাংলাদেশ ৫১ তম বর্ষে পদার্পণ করেছে। ইতোমধ্যে বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এর জন্মশতবর্ষ ও মহান স্বাধীনতা ও বিজয়ের সুবর্ণজয়ন্তী রাষ্ট্রীয়ভাবে যথাযোগ্য মর্যাদায় দেশ বিদেশে উদ্্যাপন করেছে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বে বাঙালি জাতি ১৯৪৮ থেকে ১৯৫২ পর্যন্ত ভাষা আন্দোলন, ১৯৬২ সালে শিক্ষার আন্দোলন, ১৯৬৬ সালে ৬ দফা, ১৯৬৯ সালে ১১ দফা ও গণঅভ্যুত্থানের মাধ্যমে স্বাধীনতার জন্য প্রস্তুত হয়ে ওঠে। ১৯৭০ এর সাধারণ নির্বাচনে আওয়ামী লীগ সমগ্র পাকিস্তানে নিরংকুশ সংখ্যাগরিষ্টতা অর্জন করে। কিন্তু পাকিস্তানিরা বাঙালি জাতিকে ক্ষমতায় অধিষ্ঠিত হতে দেয়নি। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু অনুধাবন করেন, স্বাধীনতা অর্জন ছাড়া বাঙালি জাতির ওপর অত্যাচার, নির্যাতন, বঞ্চনার অবসান হবে না। তাই তিনি ১৯৭১ সালের ৭ মার্চ ঐতিহাসিক রেসকোর্স ময়দানের জনসমুদ্রে দাঁড়িয়ে দৃপ্তকণ্ঠে ঘোষণা করেন, ‘এবারের সংগ্রাম আমাদের মুক্তির সংগ্রাম, এবারের সংগ্রাম স্বাধীনতার সংগ্রাম’। বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুরের ডাকে শুরু হয় অসহযোগ আন্দোলন, চলতে থাকে সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধের প্রস্ততি। পাকিস্তানি হানাদার বাহিনী ১৯৭১ এর ২৫ মার্চ কালরাতে নিরীহ ও নিরস্ত্র বাঙালির ওপর হত্যাযজ্ঞ শুরু করে। ২৬ মার্চের প্রথম প্রহরে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশের স্বাধীনতা ঘোষণা করেন। শুরু হয় সশস্ত্র মুক্তিযুদ্ধে। ১৭ এপ্রিল মুজিবনগরে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে রাষ্ট্রপতি, সৈয়দ নজরুল ইসলামকে উপ-রাষ্ট্রপতি এবং তাজউদ্দিন আহমদকে প্রধানমন্ত্রী করে গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের প্রথম সরকার শপথ গ্রহণ করে মুক্তিযুদ্ধ পরিচালনা করেন। বীর মুক্তিযোদ্ধারা ৯ মাসের রক্তক্ষয়ী যুদ্ধের মাধ্যমে পাকিস্তানি হানাদার এবং তাদের দোসর রাজাকার, আলবদর, আলশামস বাহিনীকে পরাজিত করে ১৬ ডিসেম্বর চূড়ান্ত বিজয় অর্জন করেন। বাঙালি পায় জাতিরাষ্ট্র বাংলাদেশ আর লাল সবুজের পতাকা। স্বাধীনতা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের গৌরবময় অর্জন। স্বাধীনতার পর জাতির পিতা মাত্র সাড়ে ৩ বছরে যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশ পুনগর্ঠন করেন। ধ্বংসপ্রাপ্ত দেশের রাস্তঘাট, ব্রিজ, কালভার্ট, রেল লাইন, বন্দর, সচল করে অর্থনীতিতে গতি সঞ্চার করেন। মাত্র ১০ মাসে বঙ্গবন্ধু মুক্তিযুদ্ধের চেতনার ভিত্তিতে জাতীয় সংবিধান প্রণন করেন। ১৯৭৫ সলের দেশের জিডিপি প্রবৃদ্ধির হার ৯ শতাংশ অতিক্রম করে। যুদ্ধবিধ্বস্ত বাংলাদেশকে বঙ্গবন্ধু স্বল্পোন্নত দেশের কাতারে নিয়ে আসেন। দেশ-বিরোধী সকল প্রতিবন্ধকতা মোকাবিলা করে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান একটি শোষণ-বঞ্চনামুক্ত অসাম্প্রদায়িক গণতান্ত্রিক “সোনার বাংলা’ গড়ার লক্ষ্য নিয়ে এগিয়ে যাচ্ছিলেন, ঠিক তখনই স্বাধীনতাবিরোধী অপশক্তি ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্টের কালরাতে বঙ্গবন্ধুকে পরিবারের বেশীরভাগ সদস্য সহ নির্মমভাবে হত্যা করে। বঙ্গবন্ধুকে হত্যার পর থমকে যায় বাংলাদেশের উন্নয়ন অগ্রযাত্রা। এদেশে শুরু হয় হত্যা, ক্যু আর ষড়যন্ত্রের রাজনীতি। ঘাতক এবং তাদের দোসররা ইতিহাসের এই জগন্যতম হতাকাণ্ডের বিচারের পথ রুদ্ধ করতে জারি করে ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’। দীর্ঘ ২১ বছর আওয়ামী লীগ গণতন্ত্র, বঙ্গবন্ধু হত্যার বিচার ও মানবতা বিরোধীদের বিচারের জন্য, ভাত, কাপড়ের জন্য সংগ্রাম করে রাজপথে বহু নেতা-কর্মীর জীবন উৎসর্গের পর ১৯৯৬ সালে জনগণের ভোটে জয়ী হয়ে আসে। এখানে উল্লেখ্য যে, ১৯৮১ সালের ১৭ মে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনা বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের সভাপতির দায়িত্ব পাওয়ার পর আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীর মধ্যে প্রাণচাঞ্চল সৃষ্টি হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ১৯৯৬ সালে রাষ্ট্র পরিচালনার দায়িত্ব পেয়ে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার নেতৃত্বে দেশ পরিচালনার পর বাংলাদেশ মর্যাদাশীল দেশ হিসেবে বিশে^র বুকে প্রতিষ্ঠিত হয়। শেখ হাসিনার সরকার সামাজিক সুরক্ষা কর্মসূচি প্রবর্তনের মাধ্যমে গরিব, প্রান্তিক মানুষদের সরকারি ভাতার আওতায় আনা হয়। দেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসিম্পূর্ণ হয়। পানির হিস্যা আদায়ে ১৯৯৬ সালের ভারতের সঙ্গে গঙ্গা নদীর পানি বন্টন চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়। পার্বত্য চট্টগ্রামের শান্তি প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে ১৯৯৭ সালে ঐতিহাসিক শান্তি চুক্তি সম্পাদন হয়। ‘ইনডেমনিটি অধ্যাদেশ’ বাতিল করে বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম শুরু হয়। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ ২০০৯ সাল থেকে ধারাবাহিকভাবে সরকার পরিচালনা করে বিগত ১৩ বছর ধরে বাংলার মানুষের ভাগোন্নয়নে বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সরকার নিরলসবাবে কাজ করে যাচ্ছে। শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বাংলাদেশ খাদ্য উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণ। দেশ পুষ্টি নিরাপত্তার কাজ করছে। মিয়ানমার ও ভারতের সঙ্গে সমুদ্রসীমা বিরোধের শান্তিপূর্ণ নিস্পত্তির মাধ্যমে বাংলাদেশ বঙ্গোপসগারে বিশাল এলাকার ওপর সার্বভৌম অধিকার প্রতিষ্ঠা করেছে। বাংলাদেশ-ভারতস্থল সীমান্ত চুক্তি বাস্তবায়ন করে ছিটমহলবাসীর স্বাধীনতা নিশ্চিত করা হয়েছে। বঙ্গবন্ধু হত্যাকাণ্ডের বিচারের রায় কার্যকর হয়েছে। জাতীয় চারনেতা হত্যাকাণ্ডের বিচার কার্যক্রম সম্পন্ন করা হয়েছে। যুদ্ধাপরাধীদের বিচার অব্যাহত রয়েছে এবং বিচারের রায়, কার্যকর করা হচ্ছে। আয়োমী লীগ সরকার গৃহহীনকে গৃহ, আশ্রয়হীনকে আশ্রয়, ঠিকানাহীনকে ঠিকানা করে দিয়েছে। সরকার ২০২১ থেকে ২০৪১ মেয়াদি দ্বিতীয় প্রেক্ষিত পরিকল্পনা প্রণয়ন করেছে। ৮ম পঞ্চবার্ষিক পরিকল্পনা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে। বাংলাদেশ প্রথম শত বছরের ‘ব-দ্বীপ পরিকল্পনা ২১০০’ বাস্তবায়ন শুরু করেছে। বাংলাদেশ ডিজিটাল বাংলা এর সুবিধা শহর থেকে প্রান্তিক গ্রাম পর্যায়ে পৌঁছে দিয়েছে। প্রতিটি গ্রামে শহরের নাগরিক সুযোগ সুবিধা পৌঁছে দেয়া হচ্ছে। দেশের সকল গৃহহীন-ভুমিহীনদের জন্য ঘর তৈরি করে দেয়া হচ্ছে। করোনা মহামারিতে দেশের অর্থনীতির চাকা সচল রাখা হয়েছে। দেশে ১ লক্ষ ৩১ হাজার ৬৪১ কোটি টাকার ২৮টি প্রণোদনা প্যাকেজ কার্যকর করা হয়েছে। দেশের শতভাগ মানুষ বিদ্যুৎ সুবিধার আওতায় এসেছে। মাথাপিছু আয় ৩ হাজার ডলারে পৌঁছেছে। দেশের কৃষি, শিক্ষা, স্বাস্থ্য, যোগাযোগ, তথ্য প্রযুক্তি, শিল্প, ব্যবসা-বাণিজ্য সহ আর্থ সামাজিক উন্নয়নের প্রতিটি ক্ষেত্রে বাংলাদেশ বিশে^র বুকে ‘রোল মডেল’। বাংলাদেশ স্বল্পোন্নত দেশ থেকে মর্যাদাশীল উন্নয়নশীল দেশে উন্নীত হয়েছে। বর্তমান রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধের বিরূপ পরিস্থিতি মোকাবিলায় সরকার কার্যকর পদক্ষেপ নিয়ে দেশে স্থিতিশীল পরিবেশ পরিস্থিতি বজায় রাখতে দৃঢ় প্রতিজ্ঞ। বাংলাদেশের চলমান গতিধারা অব্যাহত রাখা সম্ভব হলে ২০৪১ সালের মধ্যে বাংলাদেশ ক্ষুধা-দারিদ্রমুক্ত ও উন্নত সমৃদ্ধ বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলাদেশে পরিণত হবে। ‘সকলের সাথে বন্ধুত্ব, কারো সাথে বৈরিতা নয়’। জাতির পিতা ঘোষিত এ মুলমন্ত্রকে ধারণ করে বাংলাদেশ শেখ হাসিনার নেতৃত্বে মহাসড়ক ধরে সামনে এগোবে। দেশ-বিদেশের ষড়যন্ত্রকে মোকাবিলা করে বাংলাদেশ সফল হবে। বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের ৭৩তম বার্ষিকীতে শপথ হলো লাখো শহিদের আত্মত্যাগের বিনিময়ে অর্জিত বাংলাদেশ গণতন্ত্রকে প্রাতিষ্ঠানিক রূপ দিতে কাজ করে যাবে। আমরা আশা করি স্বাধীন দেশের সকল রাজনৈতিক দল হিংসা-বিদ্বেষ ভুলে দেশ গঠনে অবদান রাখবে এবং দেশের চলমান উন্নয়ন ও অগ্রগতি অব্যাহত রাখতে গঠনমূলক ভূমিকা রাখবে। আওয়ামী লীগ জাতির পিতার আদর্শ ধারণ করে সর্বোচ্চ দেশপ্রেম ধারণ করে দেশ ও জাতির কল্যাণে এ দলের প্রতিটি নেতা-কর্মী জীবন বাজি রেখে দেশের সেবা করে যাবে। ইনশাল্লাহ জয় হবে জনতার, জয় হবে বাংলাদেশ আওয়ামী আওয়ামী লীগ।  লেখক সাধারন সম্পাদক, বঙ্গবন্ধু ও জাতীয় চারনেতা স্মৃতি পরিষদ
মোবাইল : ০১৭২৭-৩০৬১৩২

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla