মাহমুদুল হক আনসারী
ইসলামের মৌলিক পাঁচটি ভিত্তির অন্যতম একটি ভিত্তি হলো হজ। যদি কারো মালিকানায় নিত্যপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং নিজের ও পরিবারের ভরণ-পোষণের খরচের চেয়ে অতিরিক্ত এই পরিমাণ টাকা-পয়সা বা মাল-সম্পত্তি আছে- যা দ্বারা হজে যাওয়া-আসা এবং হজ আদায়কালীন প্রয়োজনীয় ব্যয় এবং হজকালীন সাংসরিক খরচ হয়ে যায়, পবিত্র কোরআন ও হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী তার ওপর হজ পালন করা ফরজ।
হজ প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জীবনে একবারই ফরজ হয়। একবার ফরজ হজ আদায়ের পর পরবর্তীতে হজ করলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। হজের বিধানকে অবজ্ঞাকারী কিংবা অস্বীকারকারী ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়।
ইবাদত কয়েক পদ্ধতিতে আদায় করতে হয়। এর মধ্যে একটি হলো আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। আর হজ হলো সেই আর্থিক ও শারীরিক ইবাদতের সমন্বয়। শারীরিক ইবাদত তথা সালাত আদায় করতে করতে আর্থিক ইবাদত তথা যাকাত আদায় করে সর্বশেষে শারীরিক ও আর্থিক সমন্বয় ঘটিয়ে প্রিয় মহামহিয়ান রব আল্লাহ তাআলার নিদর্শন ও তার স্মৃতিবিজড়িত স্থান সমূহে এসে তারই সমীপে নিজেকে সঁপে দেওয়ার জন্যই হজ আদায় করা হয়।
পবিত্র কোরআনে কারিমের সূরায় আল ইমরানের ৯৭ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা হজ ফরজ হওয়ার ঘোষনা দেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আল্লাহর জন্য মানুষের ওপর বাইতুল্লার হজ ফরজ করা হলো, তাদের মধ্যে যারা সেখানে যাওয়ার সমর্থ রাখে। এবং যে কেউ উহা উপেক্ষা করল সে জানেরাখুক যে আল্লাহ তা‘আলা বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন।’
হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন একদা রাসূল (সা.) আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিয়ে বলেন হে লোক সকলেরা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য হজ ফরজ করেছেন বিধায় তোমরা হজ করো।জনৈক ব্যক্তি বল্লেন ইয়া রাসূলাল্লাহ আমরাকি প্রতি বছর হজ করবো? এতদা শ্রবণে আল্লাহর নবী চুপ থাকলেন, সে এ কথা তিন বার জিঙ্গেস করলো! অতপর রাসূল সা. বলেন যদি আমি হ্যাঁ বলি তাহলে তোমাদের জন্য বারম্বার হজ করাই ফরজ হয়ে যাবে,কিন্তু এতে তোমরা সক্ষম হবে না।ৃ. (মুসলিম শরীফ ৪১২)
হজের ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ ও ওমরাহ করো।’ (বাকারাহ ২/১৯৬) আল্লাহ তা‘আলার আদেশ বিধায় হজ করার দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা খুশি হন।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ করে এবং সে হজের সময়ের মধ্যে কোনো অন্যায় ও পাপাচার না করে থাকে তাহলে সে তার হজ শেষে একজন নবজাতক শিশুর মতো গুনাহীন হয়ে ফিরল।’ (বুখারী ২৫০৭) আবু হুরায়রা রা. বলেন, ‘রাসূল (সা.) বলেছেন হজে মাবরুরের প্রতিদান শুধুমাত্র জান্নাতই।’ (বুখারী ২৫০৮)
আয়েশা রা. বলেন, ‘আমি আল্লাহর নবীর নিকট জিহাদ করার অনুমতি চাইলে আল্লাহর নবী বলেন মহিলাদের জিহাদ হলো হজ করা।’ (মেশকাত: ২৫১৪) ইবনে মাসউদ রা. বলেন, ‘রাসূল সা. বলেছেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরার মাঝে অনুগামী হও; কেননা এই দুইটা দারিদ্রতা ও গুনাহ এমনভাবে মিটিয়ে দেয় যেমনভাবে হাপর লোহা, স্বর্ণ ও রুপার ময়লা দূর করে দেয়।’ (মেশকাত ২৫২৪) ইবনে ওমর রা. বলেন, ‘আল্লাহর প্রতিনিধি দল তিনটি; গাজি, হাজী ও ওমরাকারী। (মেশকাত ২৫৩৭)
শরীয়তের প্রতিটি বিধানের একটা রহস্য ও তাৎপর্য থাকে। এ তাৎপর্যের গুরুত্ব আছে বলেই বান্দার ওপর এ বিধান আরোপ করা হয়ে থাকে। কোনো কোনো ইবাদতে দৈহিক, কোনো ইবাদতে আত্মিক গুরুত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আবার কোনো ইবাদতে ব্যক্তিগত ও সামাজিক, আবার কোনো কোনো ইবাদতে অর্থনৈতিক গুরুত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনোটিতে দৈহিক ব্যক্তিগত এবং অর্থনৈতিক গুরুত্বের সমাবেশ ঘটিয়ে মানব জীবনের বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ তথা দৈহিক ও আত্মিক সাধনার সমন্বয় করা হয়েছে। হজ হলো দৈহিক ও অর্থনৈতিক উভয়টির সমন্বয়ে গঠিত এক মহা ইবাদত।
হজ আদায় করার সময় মানুষের শরীর ও মনের কুরবানীর সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক কুরবানীও দিতে হয়। আল্লাহ তা’আলার অপার অনুগ্রহে প্রাপ্ত অর্থ সম্পদ আল্লাহর পথে খরচ করার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার প্রতি আনুগত্য এবং অর্থ-সম্পদের মোহ থেকে নিজেকে পবিত্র করার লক্ষ্যে হজের গুরুত্ব অপরিসীম।
মুসলিম বিশ্বে হজ্বের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের দেশ। এদেশ হতে প্রতি বছর প্রায় অর্ধলক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসল্লী হজ্বব্রত পালনের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা মদিনায় যাতায়াত করেন। করোনাকালীন সময়ে হজ্বের কার্যক্রম সারা পৃথিবী ব্যাপী বন্ধ ছিল। ফলে বাংলাদেশের মুসল্লীরা হজ্ব করতে পারেন। ২০২২ সালে হজ্বের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে হজ্ব এজেন্সী গুলো হাজ্বীদের সুষ্ঠু সুন্দরভাবে হজ্ব পালনের সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রাতদিন তৎপর রয়েছে। বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ্বের সরকারী বেসরকারীভাবে খরচের প্যাকেজ ঘোাষণা করেছে। কয়েকদফা বৈঠক করে হজ্বের প্যাকেজও চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে এবারের প্যাকেজ হজ্বযাত্রীদের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে যারা হজ্বে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন তখন হজ্বের খরচ প্যাকেজ মোটামোটি ভাবে হজ্বযাত্রীর নাগালের মধ্যে ছিল। এবারের হজ্বের যাতায়াত খরচ বলতে গেলে গতবারের দ্বিগুণ।
এ বিষয়ে হজ্ব এজেন্সী এবং হজ্ব যাত্রী অনেকের সাথে লেখক কথা বলতে জানতে পারেন যে , তাদের বক্তব্য এজেন্সী এবং হজ্বযাত্রী সকলেই এবারের হজ্ব ব্যবস্থাপনার উপর প্রায় অসন্তুষ্ট। বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় সৌদি সরকার বারবার হজ্ব ও ওমরাহ’র কার্যক্রমের ব্যাপারে নানা সময়ে নানা বক্তব্য রেখেছেন। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। প্যাকেজ পরিবর্তন করেছে। নানা ধরনের শর্ত আরোপ করে বাংলাদেশের হজ্ব এজেন্সী এবং হজ্ব যাত্রীদের উপর চাপ বৃদ্ধি করেছে। এসবের কারণে তড়িঘড়ি করে এবারের হজ্ব পালন কর্মসূচী বলতে গেলে হজ্ব যাত্রীদের নাগালের বাইরে রয়েছে। একজন হাজ্বীর বহু গুণের অর্থ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কিছুর পরও হাজ্বী এবং হজ্ব এজেন্সী সমূহ নির্বিঘেœ হজ্ব পালন করে অনুষ্ঠান যেন সম্পন্ন করতে পারেন সে আশায় রাখছে। হজ আদায় করার মাধ্যমে সর্বশেষ ও সর্বোচ্চ সাধনা করে বান্দা আল্লাহ তা’আলার নিদর্শন লাভ করে। আল্লাহকে সন্তুষ্ট ও রাজী করায় হলো হজ্বের মূল উদ্দেশ্য। সে কাজটি যেন সূচালো রুপে বিশ্বের সকল হাজ্বীগণ যথাযত ভাবে ফরয , ওয়াজিব , সুন্নাহ, নফলসমূহ আদায় করার মাধ্যমে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে পারে সেটায় বাংলাদেশের হজ্ব যাত্রীদের প্রত্যাশা।হজ্ব ও হজ্ব ব্যবস্থাপনা
মাহমুদুল হক আনসারী
ইসলামের মৌলিক পাঁচটি ভিত্তির অন্যতম একটি ভিত্তি হলো হজ। যদি কারো মালিকানায় নিত্যপ্রয়োজনীয় আসবাবপত্র এবং নিজের ও পরিবারের ভরণ-পোষণের খরচের চেয়ে অতিরিক্ত এই পরিমাণ টাকা-পয়সা বা মাল-সম্পত্তি আছে- যা দ্বারা হজে যাওয়া-আসা এবং হজ আদায়কালীন প্রয়োজনীয় ব্যয় এবং হজকালীন সাংসরিক খরচ হয়ে যায়, পবিত্র কোরআন ও হাদিসের ভাষ্য অনুযায়ী তার ওপর হজ পালন করা ফরজ।
হজ প্রত্যেক মুসলমানের ওপর জীবনে একবারই ফরজ হয়। একবার ফরজ হজ আদায়ের পর পরবর্তীতে হজ করলে তা নফল হিসেবে গণ্য হবে। হজের বিধানকে অবজ্ঞাকারী কিংবা অস্বীকারকারী ইসলাম থেকে খারিজ হয়ে যায়।
ইবাদত কয়েক পদ্ধতিতে আদায় করতে হয়। এর মধ্যে একটি হলো আর্থিক ও শারীরিক ইবাদত। আর হজ হলো সেই আর্থিক ও শারীরিক ইবাদতের সমন্বয়। শারীরিক ইবাদত তথা সালাত আদায় করতে করতে আর্থিক ইবাদত তথা যাকাত আদায় করে সর্বশেষে শারীরিক ও আর্থিক সমন্বয় ঘটিয়ে প্রিয় মহামহিয়ান রব আল্লাহ তাআলার নিদর্শন ও তার স্মৃতিবিজড়িত স্থান সমূহে এসে তারই সমীপে নিজেকে সঁপে দেওয়ার জন্যই হজ আদায় করা হয়।
পবিত্র কোরআনে কারিমের সূরায় আল ইমরানের ৯৭ নং আয়াতে আল্লাহ তা‘আলা হজ ফরজ হওয়ার ঘোষনা দেন, আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘আল্লাহর জন্য মানুষের ওপর বাইতুল্লার হজ ফরজ করা হলো, তাদের মধ্যে যারা সেখানে যাওয়ার সমর্থ রাখে। এবং যে কেউ উহা উপেক্ষা করল সে জানেরাখুক যে আল্লাহ তা‘আলা বিশ্ববাসীর মুখাপেক্ষী নন।’
হজরত আবু হুরায়রা রা. বলেন একদা রাসূল (সা.) আমাদের উদ্দেশ্যে খুতবা দিয়ে বলেন হে লোক সকলেরা আল্লাহ তা‘আলা তোমাদের জন্য হজ ফরজ করেছেন বিধায় তোমরা হজ করো।জনৈক ব্যক্তি বল্লেন ইয়া রাসূলাল্লাহ আমরাকি প্রতি বছর হজ করবো? এতদা শ্রবণে আল্লাহর নবী চুপ থাকলেন, সে এ কথা তিন বার জিঙ্গেস করলো! অতপর রাসূল সা. বলেন যদি আমি হ্যাঁ বলি তাহলে তোমাদের জন্য বারম্বার হজ করাই ফরজ হয়ে যাবে,কিন্তু এতে তোমরা সক্ষম হবে না।ৃ. (মুসলিম শরীফ ৪১২)
হজের ফজিলত সম্পর্কে আল্লাহ তা‘আলা বলেন, ‘তোমরা আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য হজ ও ওমরাহ করো।’ (বাকারাহ ২/১৯৬) আল্লাহ তা‘আলার আদেশ বিধায় হজ করার দ্বারা আল্লাহ তা‘আলা খুশি হন।
আবু হুরায়রা (রা.) বলেন রাসূল (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি হজ করে এবং সে হজের সময়ের মধ্যে কোনো অন্যায় ও পাপাচার না করে থাকে তাহলে সে তার হজ শেষে একজন নবজাতক শিশুর মতো গুনাহীন হয়ে ফিরল।’ (বুখারী ২৫০৭) আবু হুরায়রা রা. বলেন, ‘রাসূল (সা.) বলেছেন হজে মাবরুরের প্রতিদান শুধুমাত্র জান্নাতই।’ (বুখারী ২৫০৮)
আয়েশা রা. বলেন, ‘আমি আল্লাহর নবীর নিকট জিহাদ করার অনুমতি চাইলে আল্লাহর নবী বলেন মহিলাদের জিহাদ হলো হজ করা।’ (মেশকাত: ২৫১৪) ইবনে মাসউদ রা. বলেন, ‘রাসূল সা. বলেছেন, ‘তোমরা হজ ও ওমরার মাঝে অনুগামী হও; কেননা এই দুইটা দারিদ্রতা ও গুনাহ এমনভাবে মিটিয়ে দেয় যেমনভাবে হাপর লোহা, স্বর্ণ ও রুপার ময়লা দূর করে দেয়।’ (মেশকাত ২৫২৪) ইবনে ওমর রা. বলেন, ‘আল্লাহর প্রতিনিধি দল তিনটি; গাজি, হাজী ও ওমরাকারী। (মেশকাত ২৫৩৭)
শরীয়তের প্রতিটি বিধানের একটা রহস্য ও তাৎপর্য থাকে। এ তাৎপর্যের গুরুত্ব আছে বলেই বান্দার ওপর এ বিধান আরোপ করা হয়ে থাকে। কোনো কোনো ইবাদতে দৈহিক, কোনো ইবাদতে আত্মিক গুরুত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। আবার কোনো ইবাদতে ব্যক্তিগত ও সামাজিক, আবার কোনো কোনো ইবাদতে অর্থনৈতিক গুরুত্বকে প্রাধান্য দেওয়া হয়েছে। কোনো কোনোটিতে দৈহিক ব্যক্তিগত এবং অর্থনৈতিক গুরুত্বের সমাবেশ ঘটিয়ে মানব জীবনের বাহ্যিক ও আভ্যন্তরীণ তথা দৈহিক ও আত্মিক সাধনার সমন্বয় করা হয়েছে। হজ হলো দৈহিক ও অর্থনৈতিক উভয়টির সমন্বয়ে গঠিত এক মহা ইবাদত।
হজ আদায় করার সময় মানুষের শরীর ও মনের কুরবানীর সঙ্গে সঙ্গে আর্থিক কুরবানীও দিতে হয়। আল্লাহ তা’আলার অপার অনুগ্রহে প্রাপ্ত অর্থ সম্পদ আল্লাহর পথে খরচ করার মাধ্যমে আল্লাহ তা’আলার প্রতি আনুগত্য এবং অর্থ-সম্পদের মোহ থেকে নিজেকে পবিত্র করার লক্ষ্যে হজের গুরুত্ব অপরিসীম।
মুসলিম বিশ্বে হজ্বের গুরুত্ব অপরিসীম। বাংলাদেশ ধর্মপ্রাণ মুসলমানের দেশ। এদেশ হতে প্রতি বছর প্রায় অর্ধলক্ষ ধর্মপ্রাণ মুসল্লী হজ্বব্রত পালনের উদ্দেশ্যে পবিত্র মক্কা মদিনায় যাতায়াত করেন। করোনাকালীন সময়ে হজ্বের কার্যক্রম সারা পৃথিবী ব্যাপী বন্ধ ছিল। ফলে বাংলাদেশের মুসল্লীরা হজ্ব করতে পারেন। ২০২২ সালে হজ্বের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতিমধ্যে হজ্ব এজেন্সী গুলো হাজ্বীদের সুষ্ঠু সুন্দরভাবে হজ্ব পালনের সকল ব্যবস্থা গ্রহণ করতে রাতদিন তৎপর রয়েছে। বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় হজ্বের সরকারী বেসরকারীভাবে খরচের প্যাকেজ ঘোাষণা করেছে। কয়েকদফা বৈঠক করে হজ্বের প্যাকেজও চূড়ান্ত করা হয়েছে। তবে এবারের প্যাকেজ হজ্বযাত্রীদের জন্য মাথা ব্যাথার কারণ হয়েছে। করোনাকালীন সময়ে যারা হজ্বে যাওয়ার জন্য নিবন্ধন করেছেন তখন হজ্বের খরচ প্যাকেজ মোটামোটি ভাবে হজ্বযাত্রীর নাগালের মধ্যে ছিল। এবারের হজ্বের যাতায়াত খরচ বলতে গেলে গতবারের দ্বিগুণ।
এ বিষয়ে হজ্ব এজেন্সী এবং হজ্ব যাত্রী অনেকের সাথে লেখক কথা বলতে জানতে পারেন যে , তাদের বক্তব্য এজেন্সী এবং হজ্বযাত্রী সকলেই এবারের হজ্ব ব্যবস্থাপনার উপর প্রায় অসন্তুষ্ট। বাংলাদেশের ধর্ম মন্ত্রণালয় সৌদি সরকার বারবার হজ্ব ও ওমরাহ’র কার্যক্রমের ব্যাপারে নানা সময়ে নানা বক্তব্য রেখেছেন। সিদ্ধান্ত পরিবর্তন করেছে। প্যাকেজ পরিবর্তন করেছে। নানা ধরনের শর্ত আরোপ করে বাংলাদেশের হজ্ব এজেন্সী এবং হজ্ব যাত্রীদের উপর চাপ বৃদ্ধি করেছে। এসবের কারণে তড়িঘড়ি করে এবারের হজ্ব পালন কর্মসূচী বলতে গেলে হজ্ব যাত্রীদের নাগালের বাইরে রয়েছে। একজন হাজ্বীর বহু গুণের অর্থ খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে। এসব কিছুর পরও হাজ্বী এবং হজ্ব এজেন্সী সমূহ নির্বিঘেœ হজ্ব পালন করে অনুষ্ঠান যেন সম্পন্ন করতে পারেন সে আশায় রাখছে। হজ আদায় করার মাধ্যমে সর্বশেষ ও সর্বোচ্চ সাধনা করে বান্দা আল্লাহ তা’আলার নিদর্শন লাভ করে। আল্লাহকে সন্তুষ্ট ও রাজী করায় হলো হজ্বের মূল উদ্দেশ্য। সে কাজটি যেন সূচালো রুপে বিশ্বের সকল হাজ্বীগণ যথাযত ভাবে ফরয , ওয়াজিব , সুন্নাহ, নফলসমূহ আদায় করার মাধ্যমে যাবতীয় আনুষ্ঠানিকতা শেষ করতে পারে সেটায় বাংলাদেশের হজ্ব যাত্রীদের প্রত্যাশা।