ড. মোহাম্মদ বদরুজ্জামান ভূঁইয়া
রোহিঙ্গারা রাষ্ট্রহীন মানুষ। মিয়ানমার সরকার ১৩৫টি জাতিগোষ্ঠীকে সংখ্যালঘু জাতি হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে। সেই তালিকায় রোহিঙ্গারা অন্তর্ভুক্ত নয়। মিয়ানমার সরকারের মতে রোহিঙ্গারা হলো বাংলাদেশী, যারা বর্তমানে অবৈধভাবে মিয়ানমারে বসবাস করছে। যদিও ইতিহাস বলে, রোহিঙ্গারা মিয়ানমারে কয়েক শতাব্দী ধরে বসবাস করে আসছে। রাষ্ট্রহীন মানুষ হিসেবে রোহিঙ্গারা রাখাইন রাজ্যসহ প্রতিবেশী বাংলাদেশ ও থাইল্যান্ডের বিভিন্ন শরণার্থী শিবিরে বাস করে। বর্তমানে বিশ্বের সবচেয়ে নির্যাতিত জনগোষ্ঠী হলো রোহিঙ্গারা। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের সময় জাপান বার্মা দখল করলে বার্মিজ জাতীয়তাবাদী ও জাপানীরা মিলে রোহিঙ্গাদের গণহত্যা, জাতিগত নির্মূল অভিযান শুরু করে। এদের প্রতি বিদেশীদের আগ্রহ ক্রমেই কমে আসছে। পর্যায়ক্রমে কমছে রোহিঙ্গাদের জন্য দাতা রাষ্ট্রের সহায়তা। অন্যদিকে রোহিঙ্গা নাগরিকদের সংখ্যা প্রতিনিয়ত বাড়ছে। খাদ্য, বাসস্থানসহ তাদের ব্যয়ও বাড়ছে। ২০২১ সালের জন্য ৯৪৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার অর্থ সহায়তা চেয়ে পাওয়া গেছে মাত্র ৬৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এখন ২০২২ সালে রোহিঙ্গাদের জন্য ৮৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার (বাংলাদেশী টাকায় সাড়ে ৭ হাজার কোটি টাকার বেশি) চাওয়া হয়েছে জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান (জেআরপি) বা যৌথ সাড়াদান পরিকল্পনায়। এ অর্থের কত অংশ পাওয়া যাবে তা নিয়ে রয়েছে সংশয়।
বাংলাদেশে আশ্রয় নেয়া রোহিঙ্গাদের সম্ভাব্য আর্থিক বিষয়ে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক সব সংস্থা প্রতি বছর জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান ঘোষণা করে থাকে। সম্ভাব্য প্রয়োজনীয় বিষয়গুলো মাথায় রেখে আর্থিক বাজেট প্রেরণ করা হয়। ২০১৯ সালে প্রয়োজনের ৮২.৬ শতাংশ মেটানোর অর্থ পাওয়া গেছে। এই অর্থের পরিমাণ ছিল ৮৩৭.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। পরের বছর ২০২০ সালে ৭৮ শতাংশ প্রয়োজন মেটানোর অর্থ পাওয়া যায়। এর পরিমাণ ছিল ৮০৪.৬ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত বছর ২০২১ সালে পাওয়া গেছে প্রয়োজনের ৭২ শতাংশ অর্থ। এর পরিমাণ ছিল ৬৭৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত বছরে সবচেয়ে বেশি টাকা দিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র ২৯৫.৬৪ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এরপর যথাক্রমে অস্ট্রেলিয়া ৯০.২২ মিলিয়ন, যুক্তরাজ্য ৭৬.৮৪ মিলিয়ন, জাপান ১৯.৮৬ মিলিয়ন, ইউনিসেফ ১৮.৪২ মিলিয়ন, কানাডা ১৭.২৩ মিলিয়ন, জার্মানি ১৩.৭৯ মিলিয়ন এবং অন্যান্য দেশ দিয়েছে ৯১.৩৩ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। গত বছর চাহিদা পূরণ কঠিন হওয়ায় গত সেপ্টেম্বরে ১৮ কোটি ডলারের অতিরিক্ত অনুদান প্রদান করে যুক্তরাষ্ট্র। নতুন তৈরি করা জয়েন্ট রেসপন্স প্ল্যান অনুসারে ২০২২ সালের জানুয়ারি থেকে ডিসেম্বর পর্যন্ত মোট প্রয়োজনের কথা বলা হয়েছে ৮৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলার। এই অর্থে ১৭৮টি প্রজেক্ট বাস্তবায়ন করবে ১৩৬টি সংস্থা। প্ল্যান অনুসারে মোট ৯ লাখ ১৮ হাজার রোহিঙ্গার অবস্থানের কথা বলা হয়েছে। এর মধ্যে ১৮ বছরের নিচে ৪ লাখ ৮১ হাজার রোহিঙ্গা শিশু আছে। প্রাপ্তবয়স্ক রোহিঙ্গা আছে ৪ লাখ ৩৬ হাজার। সহায়তা চাওয়া ৮৮১ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের মধ্যে খাদ্য নিরাপত্তার জন্য চাওয়া হয়েছে ২০৯.৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, স্বাস্থ্য খাতে ১১০.৮ মিলিয়ন, বাসস্থানের জন্য ৯৩ মিলিয়ন, পানি-স্যানিটেশনের জন্য ৮০.২ মিলিয়ন, নিরাপত্তার জন্য ৭৫.৩ মিলিয়ন, শিক্ষার জন্য ৭০.৫ মিলিয়ন, পুষ্টির জন্য ৩৫.৭ মিলিয়ন, পারস্পরিক যোগাযোগে ৭.৯৬ মিলিয়ন, জরুরী টেলিযোগাযোগে ১.৭ মিলিয়ন, লজিস্টিকের জন্য ০.৯ মিলিয়ন, কো-অর্ডিনেশনে ৪.৩ মিলিয়ন, মানবিক কাজে থাকা ব্যক্তিদের স্বাস্থ্যসেবায় ৪.৩ মিলিয়ন এবং ভাসানচরে থাকা রোহিঙ্গাদের জন্য ৯৯.৭ মিলিয়ন মার্কিন ডলার চাওয়া হয়েছে।
সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আফগানিস্তানে নতুন করে মানবিক সঙ্কট আর প্রত্যাবাসনে সুনির্দিষ্ট পরিকল্পনার অভাবে দাতারা রোহিঙ্গাদের দিক থেকে মুখ ফিরিয়ে নেয়া শুরু করে। তাদের মতে, যে হারে বৈদেশিক সহায়তা কমছে তাতে ১০ লাখ রোহিঙ্গার বোঝা বহন বাংলাদেশের অর্থনীতিতে বড় চাপ তৈরি করবে। অর্থাৎ সঙ্কট প্রলম্বিত হলে এ দায়িত্ব এককভাবে বাংলাদেশের ঘাড়ে পড়তে পারে। রিপোর্ট বলছে, ২০১৭ সাল থেকে এ পর্যন্ত কোন বছরই রোহিঙ্গাদের মানবিক সহযোগিতার জন্য চাহিদার পুরো অর্থ আসেনি। ২০১৯ সালের পর থেকে রোহিঙ্গা অর্থায়ন আগের বছরের তুলনায় অব্যাহতভাবে কমছে। কূটনীতিক ও বিশ্লেষকরা মনে করছেন সহায়তা কমার পেছনে আফগানিস্তান ইস্যুর একটা বড় প্রভাব রয়েছে। রোহিঙ্গা ইস্যুটা অনেকাংশে দুর্বল হয়ে গেছে আফগানিস্তানের মানবিক বিপর্যয়ের কারণে। আরেকটি ব্যাপার হলো, দাতারা দেখতে পাচ্ছেন রোহিঙ্গা ইস্যুতে দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে হবে। তারা দীর্ঘমেয়াদী বিনিয়োগ করতে চান না। রোহিঙ্গাদের কবে নাগাদ আমরা প্রত্যাবাসন করতে পারব সে বিষয়ে কোন রোডম্যাপ তৈরি হয়নি। বাংলাদেশ সরকার অব্যাহতভাবে চেষ্টা করছে, কিন্তু বিশ্ব সম্প্রদায়ের কোন চাপই কাজে আসছে না। এসব কারণেই দীর্ঘমেয়াদী অনুদান কমে যাচ্ছে রোহিঙ্গা সঙ্কটের।
কক্সবাজার-টেকনাফের রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলো অপরাধীদের অভয়ারণ্য হয়ে উঠেছে। দিন দিন সেখানে খুন, রাহাজানিসহ অপরাধ বাড়ছে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর চেষ্টা সত্ত্বেও রোহিঙ্গা শিবিরে কমপক্ষে ১৪টি রাজনৈতিক ও মাদক পাচারকারীদের সন্ত্রাসী গ্রুপ রয়েছে। যারা নিজেদের মধ্যেও অন্তর্দ্বন্দ্বে লিপ্ত। রোহিঙ্গা শরণার্থীরা বাংলাদেশের জন্য একটি বিরাট বোঝা। পৃথিবীর সবচেয়ে বড় আশ্রয় শিবির বাংলাদেশের রোহিঙ্গা শিবির। বাংলাদেশের মতো একটি কম আয়তনের ও জনঘনবসতির দেশের পক্ষে এই বোঝা বহন করা কঠিন। বাংলাদেশের অর্থনীতি ও প্রশাসনের ওপর এটি অতিরিক্ত চাপ। বাংলাদেশ প্রতি মাসে ব্যয় করেছে তিন শ’ মিলিয়ন মার্কিন ডলার, যা বাংলাদেশী টাকায় আড়াই হাজার কোটির বেশি। বাংলাদেশের গত ৪ বছরে ১ লাখ ২০ হাজার কোটি টাকা ব্যয় হয়েছে রোহিঙ্গাদের পিছনে, যদিও এ দেশেরই এক বিরাট জনগোষ্ঠী নানা ধরনের সুযোগ-সুবিধা থেকে বঞ্চিত। এ ছাড়া প্রশাসনিক এবং নারী-পুরুষ ও শিশুদের জনস্বাস্থ্য শিক্ষাবিষয়ক সহায়তা দিচ্ছে সরকার। ইতোমধ্যে কক্সবাজার-টেকনাফ থেকে শরণার্থীদের চাপ কমানো এবং আরও উন্নত জীবনযাপনের জন্য নোয়াখালীর ভাসানচরে এক লাখ শরণার্থীকে অস্থায়ী আবাসনের ব্যবস্থা করা হয়েছে। এ পর্যন্ত সেখানে প্রায় ২০ হাজার শরণার্থীকে পাঠানো হয়েছে।
জননেত্রী শেখ হাসিনা রোহিঙ্গা সঙ্কটকে বাংলাদেশের জন্য এক নজিরবিহীন বলে বর্ণনা করেছেন। তিনি বলেছেন, এদেরকে দীর্ঘকাল বাংলাদেশে রাখা সম্ভব নয়। বাংলাদেশে রোহিঙ্গাদের মধ্যে যেসব দেশী-বিদেশী ত্রাণ সংস্থা কাজ করছে ব্র্যাক তার অন্যতম। ইতোমধ্যে ব্র্যাক রোহিঙ্গাদের জন্য খাদ্য, আশ্রয়, বিশুদ্ধ খাবার পানি, চিকিৎসা এবং পয়ঃনিষ্কাশন সুবিধার মতো জরুরী চাহিদা মেটাতে কাজ করছে। কিন্তু দশ লাখের বেশি রোহিঙ্গাকে যদি আরও দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশে রাখতে হয় তখন ত্রাণ সংস্থাগুলো নানা ধরনের কঠিন চ্যালেঞ্জের মুখে পড়বে। মানবিক কারণে রোহিঙ্গাদের আশ্রয় দিয়েছে বাংলাদেশ? কিন্তু এই মানবিকতার কারণেই এখন নানা ঝুঁকিতে পড়েছে দেশটি? খুব সহসাই এ সঙ্কটের সমাধান হবে না? ফলে সারাদেশে রোহিঙ্গাদের ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে, আছে নানা চ্যালেঞ্জও? রোহিঙ্গাদের নিয়ে সরকারকে এবার দীর্ঘমেয়াদী পরিকল্পনা করতে হবে?
রোহিঙ্গাদের কারণে বাংলাদেশ বড় ধরনের আর্থিক চাপে পড়তে পারে। রোহিঙ্গা শরণার্থীদের পেছনে বাড়তি মনোযোগ দিতে হয়। সেজন্য সেখানে পুলিশ, সেনাবাহিনী, বিজিবিসহ বিভিন্ন বাহিনীর লোক নিয়োগ করতে হয়েছে? এর ফলে রাষ্ট্রীয় ব্যয় বাড়ছে? আর এই ব্যয়টা খরচ হচ্ছে বাজেট থেকে? কক্সবাজারের উখিয়া ও টেকনাফে এখন স্থানীয় নাগরিকরা সংখ্যালঘুতে পরিণত হয়েছেন? দিন দিন পরিস্থিতি কঠিন হয়ে উঠছে? এমন পরিস্থিতিতে সমস্যা সমাধানে আঞ্চলিক ও আন্তর্জাতিক উদ্যোগ জরুরী? বিশ্লেষকরা বলছেন, এভাবে চলতে থাকলে এক পর্যায়ে দেশ নিরাপত্তার ঝুঁঁকিতে পড়বে? সঙ্কট দীর্ঘমেয়াদী হলে আন্তর্জাতিক সম্প্রদায় এক সময় এসব ভুলে যাবে? অন্য সমস্যার ভিড়ে তখন এটা ক্ষুদ্র ইস্যুতে পরিণত হবে? তাছাড়া রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা রয়েছে। এর জন্য তারা দেশীয় দালালদের সহায়তায় ভুয়া জন্মনিবন্ধন সনদ ও জাতীয় পরিচয়পত্র সংগ্রহ করছে। রোহিঙ্গাদের অবস্থান দীর্ঘস্থায়ী হলে কক্সবাজারের পর্যটন শিল্পে ধস নামার আশঙ্কা আছে? এ নিয়ে স্থানীয় মানুষ ও প্রশাসন উদ্বিগ্ন। এমনটা হলে কক্সবাজারের পর্যটনে ভয়াবহ ধস নামতে পারে। কূটনৈতিক, অর্থনৈতিক ও ভূকৌশলগত দিক বিবেচনায় বাংলাদেশ বেকায়দা অবস্থানে রয়েছে। রোহিঙ্গাদের ফেরত পাঠানোর বিকল্প নেই। কিন্তু যতই দিন যাচ্ছে ততই স্পষ্ট হচ্ছে যে, মিয়ানমার নানা ছুতোয় আলোচনায় বসতে কালক্ষেপণ করতে থাকবে। রোহিঙ্গাদের ফিরিয়ে নেয়ার আলোচনায় মিয়ানমার বসবে এমন সম্ভাবনা আপাতত শূন্য। রোহিঙ্গাদের জন্য অন্য বছরের তুলনায় সম্প্রতি বিদেশী সহায়তার পরিমাণ কমে যাওয়ায় উদ্বেগের সৃষ্টি হচ্ছে। চলতি বছর রোহিঙ্গাদের জন্য তিনটি কৌশল হাতে নেয়া হয়েছে। প্রথমটি হচ্ছে রোহিঙ্গা নারী-পুরুষ ও শিশুদের রক্ষা, দ্বিতীয় সুন্দর জীবনযাপনের ব্যবস্থা এবং শেষে উখিয়া ও টেকনাফ উপজেলার বাসিন্দাদের ঠিকমতো লালনপালন করা।
কার্যবিবরণী সূত্রে জানা যায়, টাস্কফোর্স সভায় বেশ কয়েকটি সিদ্ধান্ত হয়। এর মধ্যে রোহিঙ্গা ক্যাম্পগুলোয় স্বাস্থ্য সঙ্কট নিয়ে স্বাস্থ্য মন্ত্রণালয়কে সব ধরনের পরিকল্পনা গ্রহণ করতে নির্দেশ দেয়া হয়। এছাড়া রোহিঙ্গাদের সহায়তার উদ্দেশ্যে কোন দাতা সংস্থা এলে তার নিবন্ধন সাতদিনের মধ্যে শেষ করতে বলা হয়েছে। ২০১৮ সালের তুলনায় এর পরের বছর সহায়তার পরিমাণ ২ শতাংশ কমেছিল। যেখানে ২০১৯ সালে মোট সহায়তার পাওয়া গেছে ৬৭ শতাংশ, সেখানে ২০১৮ সালে পাওয়া গেছে ৬৯ শতাংশ। এর পরিমাণ এখনও ক্রমহ্রাসমান। প্রসঙ্গত, বিশ্বব্যাংক, জাতিসংঘসহ বিশ্বের বড় দাতা সংস্থাগুলো বাংলাদেশে আশ্রিত রোহিঙ্গাদের সব ধরনের সহায়তা করছে। ইতোমধ্যে অনেক দেশ প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী সহায়তা করছে। রোহিঙ্গাদের নিয়ে বিদেশী এনজিওগুলোর কার্যক্রম হ্রাস পেলেও বেড়েছে দেশীয় এনজিওর কার্যক্রম। বিশেষ করে স্থানীয় এনজিওর অংশগ্রহণ ২০১৯ সালে ছিল ৪৬ শতাংশ, সেখানে চলতি বছর বেড়ে ৫৩ শতাংশে উঠেছে। একই সময় আন্তর্জাতিক এনজিওগুলোর অংশগ্রহণ কমেছে ৯ শতাংশ। বর্তমান রোহিঙ্গা ক্যাম্পে এনজিও এবং দাতা সংস্থা মিলে ১১৭টি প্রতিষ্ঠান কাজ করছে। সংস্থাগুলো বর্তমানে জাতীয় এবং স্থানীয় পর্যায়ের বিভিন্ন ক্ষেত্রে কাজ করছে, যেমনÑখাদ্য, পুষ্টি, আশ্রয়, কমিউনিটির সঙ্গে যোগাযোগ, কৃষি, দুর্যোগের জন্য প্রস্তুতি ও ঝুঁকি হ্রাস, শিক্ষা, জরুরী টেলিযোগাযোগ, স্বাস্থ্য, উপকরণ সরবরাহ, সুরক্ষা (জেন্ডারভিত্তিক সহিংসতা মোকাবিলা ও শিশু সুরক্ষা), জীবিকা পুনরুদ্ধার ও নতুন জীবিকার ব্যবস্থা করা, বহুমুখী কাজের জন্য নগদ অর্থ প্রদান, এলাকার ব্যবস্থাপনা ও উন্নয়ন এবং পানি, পয়ঃনিষ্কাশন ও স্বাস্থ্যবিধি পালন। এসব কর্মসূচীর সফলতার ব্যাপারে কর্মসূচীতে নানা সহযোগিতা অব্যাহত রাখতে ইউএনএইচসিআর, আইওএম, ইউনিসেফ, বিশ্ব খাদ্য কর্মসূচী, জাতিসংঘের মানবিক সহায়তামূলক কার্যক্রমের সমন্বয়কারী সংস্থা ওসিএইচএ, ইন্টারন্যাশনাল রেডক্রস এ্যান্ড রেড ক্রিসেট মুভমেন্ট এবং অসংখ্য বেসরকারী সংস্থার (এনজিও) জীবনরক্ষাকারী কার্যক্রম ও সংশ্লিষ্ট বিষয়ে এগিয়ে আসতে হবে। আন্তর্জাতিক মানবিক নীতিমালার ভিত্তিতে এই মানবিক সঙ্কট সমাধানে বহুমুখী প্রচেষ্টা চালানো এখন সময়ের দাবি। লেখক : অধ্যাপক, সাবেক চেয়ারম্যান, ট্যুরিজম এ্যান্ড হসপিটালিটি ম্যানেজমেন্ট বিভাগ, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়