এবার এশিয়া মহাদেশের সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হবে দিনাজপুরে। দিনাজপুর গোড়-এ শহীদ ময়দানে ঈদগাহ মিনার মাঠে অনুষ্ঠেয় ঈদের জামাতে ছয় থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে আশা করা হচ্ছে।
২০১৭ সাল থেকে গোড়-এ শহীদ ময়দানে ঈদের নামাজ আদায় করে আসছেন দিনাজপুর জেলাসহ পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা-উপজেলার মুসল্লিরা। করোনা মহামারির কারণে গত দুই বছর এই মাঠে ঈদের জামাত বন্ধ ছিল। এবার করোনার প্রকোপ কমে যাওয়ায় এশিয়ার সবচেয়ে বড় ঈদের জামাত আয়োজনের প্রস্তুতি নিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। দুই বছর বন্ধ থাকার পর এবার বাড়তি মানুষের সমাগম হবে বলে মনে করা হচ্ছে। সেই বিষয়টি মাথায় রেখে ১০ লাখ মানুষের নামাজ আদায়ের প্রস্তুতি নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টরা।
দিনাজপুর-৩ আসনের সংসদ সদস্য ইকবালুর রহিম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। তিনি জানান, দুই একদিনের মধ্যে আয়োজনের প্রস্তুতিসহ সার্বিক বিষয় নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা হবে। এই মাঠে প্রতিবার ছয় থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম হয়। এবারও তাই হবে বলে আশা করছেন সংসদ সদস্য। ইতোমধ্যেই আধুনিক স্থাপত্যশৈলী সমৃদ্ধ ঈদগাহ মিনারকে নবসজ্জায় সাজানো হয়েছে, লাইটিংয়ের ব্যবস্থা করা হয়েছে।
শোলাকিয়া ঐতিহ্যবাহী মাঠ হলেও আয়তনের দিক দিয়ে দিনাজপুর ঈদগাহ মাঠ চার গুন বড়। শোলাকিয়ায় ঐতিহ্যবাহী ঈদের জামাতের পাশাপাশি দিনাজপুরের এই ময়দানে প্রতিবার ছয় থেকে সাত লাখ মানুষের সমাগম হয়। এবার ঈদের জামায়াতে ইমামতি করবেন মাওলানা শামসুল ইসলাম কাসেমী।
ঈদগাহটি দিনাজপুরের গোর-এ-শহীদ বড় ময়দানে অবস্থিত। ১৯৪৭ সালে দেশ বিভাগের সময় থেকে এ মাঠে ঈদের জামাত অনুষ্ঠিত হচ্ছে। তবে স্থায়ী কোনো মিম্বর নির্মাণ করা হয়নি। জেলা প্রশাসন স্থায়ী ঈদগাহ মিম্বর নির্মাণ কাজ শুরু করে ২০১৫ সালে। সেই কাজ শেষ হয ২০১৭ সালে।
জেলা প্রশাসন সূত্রে জানা যায়, গোড়-এ শহীদ বড় ময়দানের আয়তন প্রায় ২২ একর। ২০১৭ সালে নির্মিত ৫২ গম্বুজের ঈদগাহ মিনার তৈরি করতে খরচ হয়েছে তিন কোটি ৮০ লাখ টাকা। এই ৫০ গম্বুজের দুই ধারে ৬০ ফুট করে দুটি মিনার, মাঝের দুটি মিনার ৫০ ফুট করে। ঈদগাহ মাঠের মিনারের প্রথম গম্বুজ অর্থাৎ মেহেরাবের (যেখানে ইমাম দাড়াবেন) উচ্চতা ৪৭ ফুট। এর সঙ্গে রয়েছে আরও ৪৯টি গম্বুজ। এছাড়া ৫১৬ ফুট লম্বায় ৩২টি আর্চ নির্মাণ করা হয়েছে।
প্রতি বছরের মতো এবারও ঈদগাহ জুড়ে কঠোর নিরাপত্তা ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। স্থাপন করা হয়েছে সিসি ক্যামেরা। এছাড়াও গোয়েন্দা নজরদারি রাখা হচ্ছে। মাঠের আশেপাশে র্যাব, বিজিবি, পুলিশ ও আনসারসহ সব ধরনের আইন-শৃঙ্খলা বাহিনী মোতায়েন রাখার প্রস্তুতি নেয়া হয়েছে।