আনোয়ারা প্রতিনিধি
রমজান মাস আসন্ন তাই আকর্ষণীয় কৌটা আর চকচকে লেভেল সম্বলিত নকল গাওয়া ঘিয়ে সয়লাব হয়ে গেছে চট্টগ্রামের আনোয়ারা উপজেলার অধিকাংশ হাটবাজারে। স্থানীয় সূত্রে জানা যায়, ক্ষতিকারক পাম তেল, ডালডা, কৃত্রিম রং আর হালকা আসল ঘিয়ের সংমিশ্রণে এসব ঘি তৈরী হচ্ছে উপজেলার বটতলী, বরুমচড়া, তৈলারদ্বী, জুইঁদন্ডি ও বৈরাগ এলাকার অন্তত ছয়টি গোপান কারখানায়। প্রত্যন্ত গ্রামাঞ্চলে স্থাপিত এসব অবৈধ করাখানা প্রশাসনের নজর এড়াতে দিনের বেলায় তালাবদ্ধ থাকলেও রাতের বেলায় চলে নকল ঘি তৈরীর কাজ। উপজেলার চাতরী চৌমুহনী বাজার, মালঘর বাজার, রুস্তম হাট, ও গহিরার দোভাষীর হাট ঘুরে দেখা যায় প্রায় সকল মুদি দোকানেই দেশের নামিসব ব্র্যান্ডের পাশাপাশি নাম দিয়ে চকচকে স্টীকার মোড়ানো এসব ঘিয়ের বিভিন্ন সাইজের কৌটাগুলো সাজিয়ে রাখা হয়েছে, যাতে রয়েছে বিএসটিআইয়ের লোগো(মনোগ্রাম) সম্বলিত সীলও। যা দেখে সহজে কেউ বুঝতেই পারেনা এসব কি আসল না নকল। এসব ঘি তৈরীর কাজে আগে জড়িত ছিল এমন একজন ব্যাক্তি নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, একেবারে নিন্মমানের পাম অয়েল আর ডালডার সাথে কৃত্রিম রং মিশিয়ে এসব ঘি তৈরী ও কৌটাজাত করার পরে কৌটার উপরিভাগে সুগন্ধিযুক্ত সামান্য পরিমান আসল ঘিয়ের প্রলেপ দেওয়া হয়, তাই এসব ঘিয়ের কৌটা হাতে নিয়ে নাকের ডগায় নেয়া মাত্রই আসল খাঁটি ঘিয়ের কড়া সুগন্ধি পাওয়া যায়। তা ছাড়া কৌটার গায়ে মোড়ানো থাকে দেশের ভাল ভাল কোম্পানিগুলোর তৈরী ঘিয়ের পাশাপাশি নাম সম্বলিত চকচকে লেভেল। আর এসব দেখে অতি সহজেই প্রতারিত হন ক্রেতা সাধারণ।
একজন মুদি দোকানদার বলেন, অন্যান্য মাসের তুলনায় রমজান মাসে গাওয়া ঘি বা গব্য ঘৃতের চাহিদা কয়েক গুন বেড়ে যায়, এ সময়ে ভাল মানের কোম্পানিগুলোর ঘি চাহিদা মত পাওয়া যায়না, তাই এসব লোকাল তৈরী কিছু কিছু ঘি তারা বিক্রি করেন, তা ছাড়া এসব ঘিয়ের ক্রয় মূল্যও অনেক কম থাকায় অতিরিক্ত লাভের আশায়ও এসব ঘি বিক্রি করেন তারা। জনস্বাস্থ্যের জন্য ক্ষতিকারক এসব ঘি এর বাজারজাত করণ অন্যায় নয় কি এমন প্রশ্নের জবাবে আরেক দোকানি বলেন, এসব যারা তৈরী করেন আর সরবরাহ করেন তাদের বিরুদ্ধেতো কোন রকম ব্যবস্থা নিতে দেখছিনা, তাই আমরাও চালিয়ে নিচ্ছি। এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা শেখ জোবায়ের আহমেদ বলেন, প্রশাসনের নিয়মিত ভেজাল বিরোধী অভিযান চলমান রয়েছে, অচিরেই সব বাজারে অভিযান পরিচালনা করা হবে, দোকানে যে কোন ধরণের ভেজাল পণ্যের মজুদ পেলেই সাথে সাথে ব্যবস্থা নেয়া হবে। আর এসব ঘি তৈরীর কাজে জড়িতদের বিষয়ে খোঁজ খবর নেয়া হচ্ছে, শিগগিরই তাদেরকে আইনের আওতায় আনা হবে।