সংবাদ সম্মেলনে অভিযোগ: চট্টগ্রামে খুনের বিচার চাওয়ায় বাদীর পরিবারকেও হত্যার হুমকি
পূর্ব বাংলা ডেস্ক
-
প্রকাশিত সময়ঃ
রবিবার, ১৩ মার্চ, ২০২২
-
২২০
বার পড়া হয়েছে
চট্টগ্রাম অফিস
চট্টগ্রামের পটিয়া সদরের আলোচিত রাজমিস্ত্রি আবু ছৈয়দের হত্যাকারীদের গ্রেফতার ও ফাঁসির দাবিতে সংবাদ সম্মেলন করেছে নিহত আবু সৈয়দের পরিবার।
১৪ মার্চ রবিবার সকাল ১১টায় চট্টগ্রাম রিপোর্টাস ইউনিটির কার্যালয়ে সংবাদ সম্মেলনে পরিবারের লিখিত বক্তব্যে দাবি করেন আবু ছৈয়দকে প্রতিবেশী কলেজ পড়ুয়া মেয়ে কহিনুর আকতার তানিয়ার সাথে দীর্ঘদিন প্রেমের সর্ম্পক ছিল। কলেজ পড়ুয়া প্রেমিকা কহিনুর আকতার তানিয়ার পরিবারের আর্থিক অবস্থা খারাপ থাকায় প্রায় ৮/১০ বছর ধরে রাজমিস্ত্রি আবু ছৈয়দ নিজের আয়ের টাকায় তানিয়াকে ডিগ্রী পাশ করান। এমনকি প্রেমিকা তানিয়ার বাড়িতে সেমিপাকা পাকা ভবনও নির্মান করে দেন আবু ছৈয়দ। তানিয়া ডিগ্রী পাশ করার পর বিভিন্ন এলাকা থেকে ভাল ভাল পরিবার থেকে বিয়ের প্রস্তাব আসতে থাকায় তানিয়ার মা নাছিমা আকতার আবু ছৈয়দকে অবজ্ঞা করতে থাকে। একপর্যায়ে পটিয়া উপজেলার হাইদগাও আব্দুল জলিলের প্রবাসী পুত্র সোহেলের সাথে বিয়ে ঠিক হয়। বিয়ের কাবিনামার দিন গত ২০২১ সালের ২৬ আগস্ট প্রেমিকা তানিয়ার ভাই কিশোরগ্যাং লিডার রিমন, চাচাতো ভাই তারেক প্রকাশ সোহেল, তানিয়ার মা নাছিমা আকতারের উপস্থিতে অস্ত্র সস্ত্র নিয়ে আবু ছৈয়দকে নির্মমভাবে হামলা গুরুতর আঘাত করেন। আবু ছৈয়দ চিকিৎসাধিন অবস্থায় কাবিনানাম গোপনে সম্পাদনা করেন। হামলার বিষয়টি প্রতিবেশী মো. খোরশেদ আলমকে বিচার দিলে খোরশেদ আলম তাদের পূর্বশত্রুতার জের ধরে তানিয়া পরিবারের সাথে পরিকল্পনা করে বৈঠক করে হত্যার পরিকল্পনা করেন। এর একমাস পর গত বছরের ২৬ সেপ্টম্বর আবু ছৈয়দকে রাতে ঘর থেকে ডেকে নিয়ে জোরপূর্বক গাড়িতে করে সীতাকুন্ড-বায়েজিদ লিংক রোডে নিয়ে এসে মারধর করে মৃত ভেবে সড়কের পাশে ফেলে চলে যায়। সেখান থেকে অজ্ঞান অবস্থায় কে বা কারা চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে অজ্ঞাত পরিচয়ে ভর্তি করান।
এ দিকে ২৭ সেপ্টম্বর আবু ছৈয়দকে না পেয়ে তার পরিবার পটিয়া থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরী করেন। ৩০ সেপ্টেম্বর চট্টগ্রাম মেডেকেল কলেজ হাসপাতালে অজ্ঞাত পরিচয়ে লোক পাওয়া গেছে বলে একজন ফেইসবুকে স্টেট্যাস দেন। এ সূত্র ধরে চমেক হাসপাতালে গেলে কোন রোগী বা লাশ ঘরে লাশের সন্ধান পাওয়া যায়নি। পরে দীর্ঘক্ষণ খোঁজাখূজির পর অন্য একটি কক্ষ থেকে আবু ছৈয়দের লাশ পাওয়া যায়। লাশের ময়না তদন্তে রির্পোটে মাথা, বুক, চোখসহ শরীরের বিভিন্ন অংশে আঘাতের চিহ্ন পাওয়া যায়।
এ ঘটনায় পটিয়া থানায় হত্যা মামলা করতে গেলে পুলিশ আসামিরা এলাকায় প্রভাবশালী হওয়ায় মামলা নেয়নি। পরে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত পটিয়া, গত ২৫ অক্টোবর নিহত আবু ছৈয়দের ভাই আবু তাহের বাদী হয়ে প্রেমিকা কহিনুর আকতার তানিয়া, তার ভাই কিশোরগ্যাং লিডার রিমন, মো. সোহেল, তানিয়ার মা নাছিমা আকতারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা দায়ের করা হয়। মামলাটি পটিয়া থানা পুলিশকে তদন্তের নির্দেশ দিলে আসামিদের সাথে পুলিশের পুর্বের সখ্যতা থাকায় পুলিশ কোন আসামিদের গ্রেফতার না করে বাদী ও বাদীর পরিবারকে বিভিন্নভাবে হুমকি এবং মামলা তুলে ফেলতে চাপ সৃষ্টি করেছে বলে দবি করেন। মামলাটি ভিন্নখাতে প্রবাহিত করতে এলাকার প্রভাবশালী মো. খোরশেদ আলম, আব্দুল মালেক, মোহাম্মদ ইউনুছ নামের কয়েকজন ব্যক্তি তাদের আত্বীয় স্বজন পুলিশের বড় বড় পদে রয়েছে এ মামলা তাদের দিয়ে আসামিদের পক্ষে রিপোর্ট দেবেন বলে ভয় দেখাচ্ছে।
সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন নিহত আবু ছৈয়দের মা হালিমা,পিতা আহমদ জমির, ভাই আবু তাহের, চাচাতো ভাই জাহাঙ্গীর আলমসহ পরিবারর সদস্যরা। তারা মামলাটি পিবিআই অথবা অন্য কোন সংস্থাকে দিয়ে তদন্ত করার দাবি জানান অসহায় পরিবারটি প্রধামন্ত্রী এবং স্বরাস্ট্র মন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
More News Of This Category