1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৬:৫১ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
বেড়েই চলছে সোনার দাম বঙ্গবন্ধু টানেলে পুলিশ-নৌবাহিনী-ফায়ার সার্ভিসের জরুরি যানবাহনের টোল মওকুফ দক্ষিণ হালিশহরে ২৯০ জেলে পরিবারের মাঝে চাউল বিতরণ কর্মসূচি . ঝালকাঠির গাবখান সেতুর টোল প্লাজায় প্রাইভেট কারসহ কয়েকটি গাড়িকে ট্রাকের চাপা, নিহত ১১ পতেঙ্গা লিংক রোডে পাজেরো গাড়ির ধাক্কায় বিদেশি নারী শিক্ষার্থীর মৃত্যু আনোয়ারায় আগুনে পুড়লো উঠান মাঝির ৪৬ ঘর কালা মিয়ার ইন্তেকাল বিশৃংখলা আর জনভোগান্তি সীতাকুণ্ডে উপজেলা পরিষদের নির্বাচনে মনোনয়ন পত্র দাখিল শেষ দিনে চেয়ারম্যান পদে ২ ভাইস চেয়ারম্যান পদে ৫ জন জরিমানা ছাড়া মোটর যানের কাগজপত্র হালনাগাদ সময় বেড়ে ১৫এপ্রিল পর্যন্ত

ভোট, ভোটার ও নির্বাচন কমিশন

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ বৃহস্পতিবার, ৩ মার্চ, ২০২২
  • ১৮০ বার পড়া হয়েছে

মাহমুদুল হক আনসারী

জনমনে প্রশ্ন এখন, আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন কেমন হবে? নির্দলীয়-নিরপেক্ষ ও তদারকি সরকারের যে দাবি বিএনপি তুলেছে, সেটিও হচ্ছে না বলেই ধারণা করা যায়। তাহলে কি বিএনপি ২০১৪-এর মতো নির্বাচনি ট্রেনে উঠবে না?

এসব প্রশ্নের বাইরে সবচয়ে বড় প্রশ্ন কেমন হবে আগামী জাতীয় নির্বাচন? এমন প্রশ্ন উঠছে এ কারণে যে, ২০১৪-এর নির্বাচনে বিএনপি আসেনি, প্রতিহত করতে চেয়েছে, ভোটাররা সহিংসতার শঙ্কায় ভোট কেন্দ্রে যেতে ভয় পেয়েছে। প্রতিদ্ব›দ্বী না থাকায় দেড়শোর বেশি সাংসদ বিনা ভোটে নির্বাচিত হয়েছে। আর ২০১৮-এর নির্বাচনে বিএনপি জোট করে অংশ নিয়েছে এবং সেই নির্বাচন নিয়ে এই জোটের দিক থেকে নানা অভিযোগ আছে। রাজনৈতিক ও সামাজিক পরিসরে এই নির্বাচন নিয়ে এক প্রকার অস্বস্তিও আছে।

বিতর্কমুক্ত নির্বাচন কমিশন বাংলাদেশের পরিপ্রেক্ষিতে একটি অলীক ভাবনা। আজ পর্যন্ত কোনও নির্বাচন কমিশনই বিতর্কমুক্ত ছিল না। যাদের পরিচালিত নির্বাচন প্রশংসিত হয়েছে, তাদের নিয়েও রাজনৈতিক দলগুলো নির্বাচনের আগে পরে নানা তীর্যক মন্তব্য করেছে। ফলে এমন একটি নিম্নমানের রাজনৈতিক সংস্কৃতিতে কমিশন খুব ভালো নির্বাচন করে ফেলবে এই ধারণাটাও অলীক। তবে, তুলনামূলকভাবে গ্রহণযোগ্য নির্বাচন যে করা যায় তার দৃষ্টান্ত আছে অবশ্যই।

দেশে নিয়মিত নির্বাচন হয়, আর রাজনৈতিক দল ও নেতারা তাকে যথেষ্ট গুরুত্বও দিচ্ছেন, এটি অবশ্যই একটি ভালো দিক। সেই গুরুত্ব থেকেই আইন করে অনুসন্ধান কমিটি করা হয়। তারা নানা দল ও ব্যক্তির সঙ্গে বসেন, গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার লাভ করে, আলোচনা হয়, পাতার পর পাতা লেখা হয়। কিন্তু নির্বাচনি মাঠের প্রধান যারা, অর্থাৎ মানুষ, তাদের কথা কমই উচ্চারিত হয়ে থাকে।

কোনও নেতাকে যদি জিজ্ঞেস করা হয়, ভোটদাতা তার সম্পর্কে কী ভাবছেন, তাকে গুরুত্ব দেন? দেখবেন সদুত্তর পাবেন না। কারণ সিস্টেমটা এমন হয়েছে যে, ভোটারদের নিয়ে ভাবতে হয় না। এক বড় সমস্যা হলো, রাজনৈতিক দলগুলোর কেন্দ্রবিমুখতা খুব বেশি। শীর্ষ নেতারা যা বলবেন, তার বাইরে আর কোনও কথা নেই। কে কেমন কাজ করছেন, কে কতটা সৎ, কতটা জনবান্ধব, তার গুরুত্ব সামান্য। প্রার্থীর কাছে একমাত্র প্রশ্ন হয়ে দাঁড়ায়, দলনেতা কি আমাকে পছন্দ করেন? এই প্রশ্ন এমনই সর্বগ্রাসী যে, নিজের এলাকায় কে কী কাজ করলেন, সেটা এলেবেলে হয়ে যায়। কেউ প্রত্যয়ের সঙ্গে বলতে পারেন না, আমি ভালো কাজ করেছি, তাই আবার টিকিট পাবো। তদবির, কানেকশন, মনোনয়ন বাণিজ্যের বাজারি সিস্টেমে মানুষ তার প্রতিনিধি সত্যিকার অর্থে খুঁজে পায় না।

অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ নির্বাচন শুধু কমিশন একাই করতে পারে না। কমিশনের প্রধান ও তার কমিশনারদের মেরুদন্ড অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ। কিন্তু নির্বাচনকালীন সরকারের প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনী কতটা ন্যায্যতা ও দক্ষতার সঙ্গে দায়িত্ব পালন করতে পারলো, রাজনৈতিক দলগুলো ও তাদের প্রার্থীরা কতটা সংযত আচরণ করলো তার ওপরই বেশি নির্ভরশীল। তারাই ভোটারদের মনে আস্থা সৃষ্টি করেন।

সম্প্রতি শেষ হওয়া ইউনিয়ন পরিষদ নির্বাচনে যে সহিংসতা মানুষ দেখলো, যেভাবে নির্বাচনটি খুন জখমের উৎসবে পরিণত হয়েছিল, তাতে আন্দাজ করা যায় মানুষ হয়তো এখন ভোটই চান না।

নির্বাচন মানেই মানুষের ওপর কোনও সাংবিধানিক জবরদস্তি নয়। মানুষের নিজের স্বতঃস্ফূর্ততাই বেশি গুরুত্ব পাওয়ার কথা। সংবিধানে দেশের প্রত্যেক মানুষকে ভোট প্রয়োগের অধিকার দেওয়া হয়েছে। কিন্তু প্রতিটি নির্বাচনেই দেখি নির্বাচনের ঘণ্টা ঠিকঠাক বাজার সঙ্গে সঙ্গেই শুরু হয় তর্ক-বিতর্ক-বিষোদগার। সঙ্গে অনুষঙ্গ হিসেবে হাজির থাকে নির্বাচনি সন্ত্রাস।

যে কোনও দেশে গণতন্ত্রের ভিত যত মজবুত হবে এবং সংশ্লিষ্ট নির্বাচন কমিশনের নিয়ন্ত্রণ যত দৃঢ় হবে, নির্বাচনি সন্ত্রাস ততই কমবে, নির্বাচন নিয়ে বিতর্কও কম হবে এটাই স্বাভাবিক। সংঘাতময় রাজনীতির কারণে নির্বাচনি সহিংসতা, নির্বাচন নিয়ে বিতর্ক অনেকটাই যেন স্বাভাবিকতায় পরিণত হয়েছে। তাই জনগোষ্ঠীর কাছে নির্বাচন এখন যথেষ্ট চাপ এবং উদ্বেগের। আমাদের বিদ্যমান শাসন ব্যবস্থায় বিষয়গুলো গুরুত্ব পায় না বিধায় নির্বাচনি সন্ত্রাসে অভিযুক্ত দল বা প্রার্থী জিতে চলেছেন, এমন উদাহরণ প্রচুর। ভোটাররাও হিংসাশ্রয়ীদের ভোট দেওয়ার ক্ষেত্রে কিছুটা উদার কিনা সেটিও প্রশ্ন। তবে গুরুত্বপূর্ণ হলো ভোটারদের মনে বিশ্বাস সঞ্চারিত করা যে, দেশে ভালো ভোট হয়।

নির্বাচন নিয়ে ভোটারদের আগ্রহের শেষ নেই। সাথে উদ্বেগ কাজ করে। আসলেই ভোটাররা তাদের অধিকার প্রয়োগ করতে পারবে কিনা। পরিস্কারভাবে বলা যায় , বিগত দিনে ভোটারদের মর্যাদা নানাভাবে ক্ষুণœ হয়েছে। ভোট দিতে গিয়ে অনেক ভোটার তার ইচ্ছেমতো প্রার্থীকে মতামত দিতে পারেনি। সহিংসতার কারণে অনেকেই ভোটকেন্দ্রে যায়নি। নানা সমস্যা সন্ত্রাস , ভোগান্তির ফলে অনেক ভোটার কেন্দ্রে যাওয়া থেকে বিরত থাকে।

প্রাপ্ত অনেক নাগরিক সঠিক সময়ে ভোটার হতে না পারায় ভোট দিতে পারেনা। ভোটার হওয়ার জন্য বয়স হলেও নানা ধরনের তথ্য , উপাত্ত সংগ্রহ করতে না পারায় ভোটার হতে পারেনা। যারা ভোটার হওয়ার বয়স পার হয়েছে, সে ধরনের অনেক আবেদনকারী আবেদন করেও ভোটার হতে পারেনি। আবার যাদের আবেদন গ্রহণ হয়েছে তাদের মধ্যে ৯০% আবেদনকারী এনআইডি কার্ড পায়নি। কিছু কিছু আবেদনকারী অস্থায়ী এনআইডি পেয়ে থাকলেও স্মার্ট কার্ড পায়নি। স্মার্ট কার্ড বিতরণ শুরু করেছিল নির্বাচন কমিশন। মাঝ পথে সে বিতরণ বন্ধ রেখেছে। ফলে নাগরিকদের মধ্যে উৎকণ্ঠা উদ্বেগ বাড়ছে। সারা দেশে সিটি কর্পোারেশন এবং কয়েকটি এলাকায় স্মার্ট কার্ড বিতরণের তথ্য জানা যায়। বাকি সব এলাকায় এখনও স্মার্ট কার্ড বন্ধ আছে। এটা পুনরায় চালু করা দরকার। ভোটারদেরকে নাগরিক জীবন স্বাচ্ছ্যন্দভাবে উপভোগ করতে প্রশাসনিক বিভিন্ন দপ্তরে এনআইডি ছাড়া কোনো বিকল্প নেই। কিছু মানুষ সে সুবিধা ভোগ করলেও অসংখ্য মানুষ এখনও এ সুবিধার বাইরে। আবার পুরোনো এনআইডি যেহেতু কাগজের তাই সহজেই তা  নষ্ট হয়ে যায়। লেমেনেটিং গুলো ছিড়ে যায় বাঁকা হয়ে যায়। তাই এনআইডি স্মার্ট কার্ডের প্রতি  নাগরিকের আগ্রহ বেশি। নির্বাচন কমিশনকে আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগেই আবেদিত গ্রহণযোগ্য সকল নাগরিকের এনআইডি স্মার্ট কার্ড প্রদানের ব্যবস্থা করা দরকার। সুষ্ঠু নির্বাচন , গ্রহণযোগ্য পরিবেশ তৈরি , সঠিকভাবে ভোটারদের তথ্য সংগ্রহ এবং এনআইডি প্রাপ্তি নির্বাচনের অপরিহার্য অংশ। সে আলোকে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষকে কাজ করা দরকার।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla