1. banglapostbd@gmail.com : admin :
  2. admin@purbobangla.net : purbobangla :
খালেদা জিয়ার সাথে ফখরুলের 'ভাঁওতাবাজি' - পূর্ব বাংলা
সোমবার, ২৪ ফেব্রুয়ারী ২০২৫, ১১:০৩ পূর্বাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ
ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা ক্ষমতার সামনে দাঁড়িয়ে সত্য বলার সাহস থাকাই হলো সাংবাদিকতা শহীদ সালাহউদ্দিন কাদের চৌধুরীর কবর জিয়ারত করলেন বিএনপি নেতা বিপ্লব মাওলানা শাহ সুফি মুহাম্মদ জামাল উদ্দিন মমিন (রঃ) এবং কবরবাসী স্বরণে ১ম বার্ষিক দোয়া মাহফিল ইউনেস্কো ক্লাব এর উদ্যোগে আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস পালন বায়েজিদ বোস্তামী ও মালেক শাহ (র.) ওরশ সম্পন্ন চট্টগ্রাম সিটি করপোরেশন ফোরকানিয়া মাদরাসা শিক্ষক সমিতির কার্যকরী কমিটির সভা অনুষ্ঠিত  আল্লামা আবুল খাইর ফাউন্ডেশন ২৬৫ জন রোগীর ছানি অপারেশন করালেন আওয়ামী লীগ নিষিদ্ধ না হলে রাজপথ ছাড়বো না: হান্নান মাসউদ

খালেদা জিয়ার সাথে ফখরুলের ‘ভাঁওতাবাজি’

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ রবিবার, ১৩ ফেব্রুয়ারি, ২০২২
  • ৩৩৪ বার পড়া হয়েছে

বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়াকে তথাকথিত কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (সিএইচআরআইও)’র দেয়া ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ সম্মাননা নিয়ে দেশে-বিদেশে সমালোচনার ঝড় বইছে। তবে এই ঝড় খালেদা জিয়াকে নিয়ে নয়। সমালোচনা হচ্ছে দলের মহাসচিব ফখরুল ইসলাম আলমগীরকে নিয়ে। বিএনপি’র কট্টর সমর্থক এবং সামান্য জ্ঞান-বুদ্ধি রাখেন তারা সবাই মনে করছেন প্রায় তিন বছর আগে দেয়া এই পুরস্কার এখন খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দিয়ে ফটো সেশন করার পেছনে কোনো অসৎ উদ্দেশ্য রয়েছে ফখরুলের। খোঁজ নিয়ে জানা গেছে কানাডার এই অলাভজনক প্রতিষ্ঠানটি স্বামী, স্ত্রী এবং কন্যা দ্বারা পরিচালিত। যারা কলম্বিয়া থেকে কানাডায় রাজনৈতিক আশ্রয় নিয়েছিলেন।
‘ডেমোক্রেসি হিরো’ ক্যাটাগরিতে খালেদা জিয়াকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি’ সম্মাননা দেওয়া হয় ২০১৮ সালের ৩১ জুলাই। সেখানে বলা হয়, ‘বাংলাদেশে ও বহির্বিশ্বে অনগ্রসর জনগণের জন্য গণতন্ত্র, মানবাধিকার, শান্তি ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় অসামান্য অবদানের জন্য খালেদা জিয়াকে এ পুরস্কার দেওয়া হয়। এতদিন ফখরুল বিষয়টি গোপন রাখলেও গত ৮ ফেব্রুয়ারি সংবাদ সম্মেলন করে এই পুরস্কার প্রাপ্তির কথা জানান। তিনি সংবাদ সম্মেলনে বলেন, ‘আমরা অত্যন্ত আনন্দের সঙ্গে আপনাদেরকে জানাতে চাই, কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (সিএইচআরআইও) দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়ার গণতন্ত্রের প্রতি তাঁর অসামান্য অবদান জন্য এই সম্মাননা দিয়েছে। তিনি এখনো গণতন্ত্রকে রক্ষা করার জন্য কারাবরণ করছেন, অসুস্থাবস্থায় গৃহবন্দী অবস্থায় আছেন। এসব কারণে প্রতিষ্ঠানটি দেশনেত্রীকে ‘মাদার অব ডেমোক্রেসি অ্যাওয়ার্ড দিয়েছে।’
প্রায় তিন মাস জীবন মৃত্যুর সন্ধিক্ষনে থেকে খালেদা জিয়া রাজধানীর এভারকেয়ার হাসপাতাল থেকে গত ১ ফেব্রুয়ারি বাসায় ফিরেন। সেখানেই খালেদা জিয়ার হাতে ফখরুল ইসলাম এই পুরস্কার তুলে দেন। নাম না বলার শর্তে বিএনপি’র একজন প্রথম সারিরর নেতা প্রশ্ন তুলেন, কি এমন কারণ আছে যে কারণে এই পুরস্কারের কথা সবার কাছে গোপন রাখা হয়েছিলো। দলের কোন কোন নেতার সাথে পরামর্শ করে তিনি এই পুরস্কার গ্রহণ করেছিলেন। কারো মাধ্যমে কি তিনি এই প্রতিষ্ঠানের ব্যাপারে খোঁজ খবর নিয়েছিলেন ? এই প্রতিষ্ঠানের গ্রহণযোগ্যতা সম্পর্কে কি খোঁজ নেয়ার মতো বিএনপি’র কেউ উত্তর আমেরিকায় ছিলো না ? নিউইয়র্কের একজন বিএনপি নেতা বলেন, নিঃসন্দেহে গনতন্ত্রের জন্য খালেদা জিয়ার অনেক সংগ্রাম ও ত্যাগ রয়েছে। তাকে অন্যায়ভাবে আটক রাখা হয়েছে। কিন্তু তারপরও এই ধরণের একটা নাম সর্বস্ব প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে সম্মাননা নেয়ার মতো দূরাবস্থা খালেদা জিয়ার না। তিনি এ ধরনের ‘সম্মাননা’র জন্য লোভী হলে হাজার হাজার সম্মাননা আর অ্যাওয়ার্ড নিতে পারতেন।
আরেক নেতা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, যিনি রাজপথে আপোষহীন সংগ্রাম করে স্বৈরাচারের পতন ঘটিয়েছেন তার জন্য কোনো সম্মাননাই যথেষ্ট না। কিন্তু তারপরও তিনি ইচ্ছা করলে হাজারো সম্মাননা নিতে পারতেন। তিনি কেবল জনগনের সেবা করার জন্য কাজ করেছেন । কোনো তথাকথিত সম্মাননার জন্য না। তিনি মনে করেন, ‘ বিতর্কিত’ এই সম্মাননা নিয়ে অসুস্থ খালেদা জিয়াকে ফখরুল সমালোচনার মুখে ফেলে দিলেন।
একজন সাংবাদিক দুঃখ করে বলেন, মানুষকে বোকা ভাবা উচিত না। এটার পেছনে ফখরুলের ভিন্ন উদ্দেশ্য রয়েছে। এটা নিয়ে অবশ্যই প্রতিপক্ষ খোঁজ খবর নিবে এবং এই সম্মাননা যে সঠিক জায়গা বা খালেদা জিয়ার জন্য যোগ্য জায়গা থেকে আসেনি সেটা বের হয়ে আসবে।
এদিকে, কানাডিয়ান হিউম্যান রাইটস ইন্টারন্যাশনাল অর্গানাইজেশন (সিএইচআরআইও)’র বিষয়ে ঘেঁটে দেখা যায় প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইটে একাধিক ব্যক্তির নাম রয়েছে। তবে যে তিনজন ব্যক্তির নামের উপর মাউস ক্লিক করলে তাদের ব্যাপারে জানা যায় তারা তিনজনেই সম্পর্কে স্বামী, স্ত্রী ও মেয়ে। এরা কলম্বিয়ান বংশোদ্ভ‚দ। তারা মূলত তাদের দেশের কেউ কানাডা আসলে তাদেরকে নানাভাবে সহযোগিতা করে থাকে। আন্তর্জাতিক পরিমন্ডলে তাদের তেমন কোনো গ্রহণযোগ্যতা নেই।
ইন্টারন্যাশনাল বোর্ড অব ডিরেক্টরসে যাদের তথ্য এই ওয়েবসাইটে রয়েছে তারা হলেন, মারিও গুইলম্বো । তার পদবী ফাউন্ডার অ্যান্ড চেয়ার প্রেসিডেন্ট। অন্যজন তার স্ত্রী লিলিয়ানা আনগারিটা। পদবী, ফাউন্ডার অ্যান্ড চেয়ারপারসন, গুডউইল অ্যাম্বাসেডর ও অ্যাম্বাসেডর ফর পিস । অন্যজন তাদের মেয়ে লিলিয়ান জুলিয়েথ গুইলম্বো। তার পদবী, ফাউন্ডার চেয়ারপারসন, গুডউইল অ্যাম্বাসেডর ও অ্যাম্বাসেডর ফর পিস।
একইসাথে অন্য যাদের নাম সেখানে রয়েছে তাদের বিষয়ে কিছু জানার সুযোগ নেই। বাস্তবে এসব নামের মানুষের কোনো অস্তিত্ব আছে বলে মনে হয় না। তাদের কোনো ছবিও নেই। এদের মধ্যে রয়েছেন, ক্লারা ভেলেজ ডি সূলজ, চেয়ার ভাইস প্রেসিডেন্ট, মিশেল রোকা সালভা, চেয়ারপারসন, সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট অ্যান্ড কমিউনিকেশনস, গুজউইল অ্যাম্বাসেডর, ফ্রান্সিস ইয়ার্ডলি ওকোয়া মার্টেলো, চেয়ারপারসন, গুডউইল অ্যাম্বাসেডর, অ্যাম্বাসেডর ফর পিস, জিওমারা কোরিয়া, সেক্রেটারি, গুডউইল অ্যাম্বাসেডর এবং মার্সিয়া পেনা পেনা, ট্রেজারার। আর ইন্টারন্যাশনাল বোর্ড অব ডিরেক্টরর্সেও স্বামী, স্ত্রী আর কন্যার নাম রয়েছে। তবে ইয়ুথ হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রামে গুইলম্বোর মেয়ে লিলিয়ান জুলিয়েথ গুইলম্বো ছাড়াও আরও দুটি নাম ক্লিক করলে দেখা যায়। তাদের একজনের নাম মেলিসা আমায়া মুনজ। তার পদবী রিসার্চার ইয়ুথ হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রাম। সে তার দেশ কলম্বিয়ার একটি বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়ে বলে জানানো হয়েছে। অন্যজন লুইস মরেনো। তার পদবী স্ট্রাটেজি অ্যান্ড হিউম্যান রাইটস আউটরিচ ডিরেক্টর। সে ইউনিভার্সিটি অব টরেন্টোর পলিটিক্যাল সাইন্সের চতুর্থ বর্ষের শিক্ষার্থী বলে লেখা হয়েছে। সে মেক্সিকান বংশোদ্ভুদ। এই জায়গায় আরও যাদের নাম রয়েছে তারা হচ্ছেন, মারিয়া আলেজান্ড্রা পাডো, এলকিন স্টিভেন ভ্যালেন্সিয়া, মারিয়া ডেলমার টালেরো, জুলিয়ানা গিরালডো, সান্টিয়াগো সেনিন আলবা, নিকোলাস রদ্রিগুয়েজ বনকো, হেরল্ড এডুয়ার্ডো মানটিলা জুনিয়র। এদের সবার পদবী রিসার্চার, ইয়ুথ হিউম্যান রাইটস প্রোগ্রাম। ইন্টারন্যাশনাল মিশন নর্থ আমেরিকার কানাডার আরও দুটি জায়গায় দুজন মহিলার নাম দেখা যায়। ডিরেক্টর, কারমেন রামিরেজ এবং এক্সিকিউটিভ ডিরেক্টর হান্না বোখারি।
প্রতিষ্ঠানটির ওয়েবসাইট ঘুরে দেখা গেছে খুবই অগোছালো । তবে সেখানে মারিও গুইলম্বো এবং তার স্ত্রী , কন্যা বিভিন্ন সময়ে যে অ্যাওয়ার্ড পেয়েছেন সেগুলোর কিছু ছবি রয়েছে এলামেলোভাবে। পদবীর বানাগুলোতে চেয়ার এবং পারসন দুটো ইংরেজি শব্দ ব্যবহার করা হয়েছে সব জায়গায়। যাতে মনে হয় এটা অনিচ্ছাকৃত ভুল না। তা ছাড়া বোর্ড অব ডিরেক্টর হিসেবে যে নামগুলো দেখা যাচ্ছে তার দুজন বাদে সবগুলোই কলম্বিয়ান নাম মনে হয়। কিন্তু মারিও গুইলম্বোর পড়াশোনা আর উচ্চতর ডিগ্রির ফর্দ অনেক বড়।
উল্লেখ্য ২০১৮ সালের ৮ ফেব্রুয়ারি দুর্নীতির মামলার সাজা সাজা মাথায় নিয়ে কারাগারে যান খালেদা জিয়া। দুই বছর কারাবাসের পর ২০২০ সালের ২৫ মার্চ পরিবারের আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে সরকারের বিশেষ বিবেচনায় শর্তসাপেক্ষে বাসায় থাকার অনুমতি পান তিনি। বিগত অনেকদিন ধরে তাকে উন্নত চিকিৎসার জন্য দলের পক্ষ থেকে দাবি জানানো হলেও সরকার সেদিকে কর্ণপাত করেনি। বেগম জিয়া মোটামুটি সুস্থ হয়ে বাসায় ফেরার পরপরই তাকে খুবই অখ্যাত একটি প্রতিষ্ঠানের পক্ষ থেকে কে বা কারা এই নাম সর্বস্ব সম্মাননা নেয়ার জন্য দলের মহাসচিবকে বুদ্ধি দিয়েছে সেটা খতিয়ে দেখার দাবি জানিয়েছেন একাধিক নেতা। তারা মনে করছেন বিএনপি এবং খালেদা জিয়াকে সমালোচনার মুখে ফেলার জন্যই মির্জা ফখরুল তিন বছর পরে এই নাম সর্বস্ব সম্মাননা খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দিয়েছেন।
রাজনীতির লোভ লালসা আর পদক সর্বস্ব রাজনীতি খালেদা জিয়া পছন্দ না করলেও তার রাজনৈতিক জীবনের এমন চরম মুহুর্তে এ ধরনের একটি সম্মাননার নামে মির্জা ফখরুল ‘ফাইজলামি’ করেছেন বলেও অনেকে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন। তারা মনে করেন, ফখরুল ইসলাম কার সাথে পরামর্শ করে এই সম্মাননা নেয়ার বা খালেদা জিয়াকে দেয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন সেটা খতিয়ে দেখা দরকার। তা ছাড়া ফখরুল ইসলাম চাইলেই এই প্রতিষ্ঠান সম্পর্কে খোঁজ নেয়া কোনো কষ্টের বিষয় ছিলো না। উত্তর আমেরিকায় বিএনপির এমন অনেক নেতা-কর্মি রয়েছেন যারা ইচ্ছা করলে এক মূহুর্তেই এই খবর নিতে পারতেন। তারা কঠোরভাবে এই সম্মাননা খালেদা জিয়ার হাতে তুলে দেয়ার নিন্দা করে জানিয়েছেন, এই তথাকথিত সম্মাননা দেয়া প্রতিষ্ঠানটিতে মূলধারার কোনো মানুষই নেই।
সবচেয়ে আশ্চর্যজনক বিষয় হচ্ছে, তাদের ওয়েসসাইটে খালেদা জিয়াকে দেয়া সম্মাননার কোনো ছবি বা খবর কিছুই নেই।
শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla