চট্টগ্রামে প্রবাসীর ভাইয়ের পাঠানো পাওনা টাকা দাবি করায় এক সংবাদ কর্মীকে আরেক প্রবাসীর স্ত্রীর মিথ্যা মামলায় পরিকল্পিতভাবে
ফাঁসানোর অভিযোগ পাওয়া গেছে। ”দৈনিক স্বাধীন সংবাদ” চট্টগ্রাম অফিসের স্টাফ রির্পোর্টার ইমতিয়াজ ফারুকীর ভাই দুবাই প্রবাসী হাফেজ মো. এতেজাজ প্রবাস থেকে স্বর্ণলঙ্কারসহ ৬৮ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকার ছালানী শামশুল আলম ও তার পরিবারের ৪ সদস্যর মাধ্যমে বৈধভাবে দেশে পাঠান। শামশুল আলম ও তার স্ত্রী লুৎফা আকতারসহ তার পরিবারের সদস্যরা ভুলে মালামালগুলো আনা হয়নি বলে এয়ার পোর্টে নেমে ইমতিয়াজ ফারুকীকে জানায়। প্রকৃত পক্ষে উক্ত মালামালগুলো আত্মসাতের অভিযোগ উঠে তাদের বিরুদ্ধে।
পরে প্রবাসী হাফেজ এতেজাজ ও তার ভাই সংবাদ কর্মী ইমতিয়াজ জানতে পেরে শামশুল আলম ও তার পরিবারের সদস্যরা পেশাদার প্রতারক চক্র ।
অভিযোগ সূত্রে জানায়, কর্ণফুলী উপজেলার শাহমীর পুর এলাকার হাফেজ মো. এতেজাজ দুবাই ফেরত শামশুল আলম ও তার স্ত্রী লুৎফা আকতার স্বপরিবারের মাধ্যমে মালামাল পাঠান। গত ৫ মার্চ সংবাদ কর্মী ইমতিয়াজ ফারুকী তার ভাইয়ের কথামত চট্টগ্রাম শাহ আমানত বিমান বন্দরে উক্ত মালামাল গ্রহণ করার জন্য গেলে তারা মালামালগুলো ভুলক্রমে আনতে পারেনি বলে জানায়। বিষয়টি স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিদের জানালে রাউজান পৌর সদরের দক্ষিণ গহিরা মুক্তার বাড়ি এলাকার প্রবাসী শামশুল আলম উক্ত মালামালের বাবদ ৬৮ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা নগদ প্রদান করবে বলে অঙ্গিকার করেন। উক্ত টাকা পরিশোধ করার বিষয়ে প্রবাসী হাফেজ এতেজাজের ভাই সংবাদ কর্মী ইমতিয়াজকে রাউজান পৌর সভার কাউন্সিলর বশির উদ্দিন খানের জিম্মায় গত ৯ মার্চ প্রবাসী শামশুল আলমের স্ত্রী লুৎফা আকতার নিজেই নন জুডিসিয়াল স্ট্যাম্পে ৬৮ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা তিনটি চেক ইউসিবিল গহিরা শাখার নিজ নামীয় হিসাব প্রদান করেন।
এই টাকা পরিশোধ না হওয়া পর্যন্ত পৌর কাউন্সিলর বশির উদ্দীন খানের কাছে প্রবাসী শামশুল আলম ও তার স্ত্রী লুৎফা আকতার, তার ছেলে আবু
বক্করসহ তিনটি পাসর্পোর্ট জমা দেন। এর ধারাবাহিকতায় গত ১৮ মার্চ ২২ লাখ টাকা প্রদান করেন। বাকী টাকা পরিশোধ করতে গিয়ে শুরু করে নানা তালবাহনা। বাকী টাকা দাবি করলে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে হত্যার হুমকি, মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয়সহ বিভিন্নভাবে চাপ প্রয়োগ করেন। এক পর্যায়ে সংবাদ কর্মী ইমতিয়াজ হুমকি মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর বিষয়টি আদালতে গত ১১ মার্চ লুৎফা আতকারসহ ৪ জনের বিরুদ্ধে সাধারণ ডায়েরী করেন। ধারাবাহিক মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ও হত্যার হুমকির বিষয়টি গত ২১ মার্চ চট্টগ্রাম জেলা পুলিশ সুপার ও ১৯ এপ্রিল চট্টগ্রাম রেঞ্জের ডিআইজিকে লিখিতভাবে জানান। চেকের পাওনা টাকা পরিশোধ করতে বিভিন্নভাবে অনুরোধ করার পরও টাকা চেক পাশ করা করায় চেক ডিজঅনার হওয়ায় ২২ লাখ ও ২৪ লক্ষ ৬৯ হাজার টাকা গত ২৪ এপিল ও দুটি মামলা করেন ইমতিয়াজ ফারুকী বাদী হয়ে লুৎফা আকতারের বিরুদ্ধে। বিষয়টি জানার পর গত ১৪ মে লুৎফা আকতারকে রাউজান গহিরা হালদা নদীর পাড়ে অজ্ঞাত স্থানে নিয়ে সংবাদ কর্মী ইমতিয়াজ ফারুকী জোর পূর্বক স্ট্যাম্প ও তিনটি চেক নেয়ার অভিযোগে কাল্পনিক আদালতে একটি মামলা করেন। উক্ত মামলায় তদন্তে রাউজান থানার এস আই সাব্বির গত ১৬ আগস্ট সংবাদ কর্মীর বিরুদ্ধে করা মামলাটির অভিযোগ মিথ্যা ও ঘটনা সত্য নন বলে আদালতে রির্পোর্ট দেন । মামলাটি মিথ্যা প্রমানিত হওয়ার পর কৌশলে ঘটনার স্থান ঠিক রেখে গত ২৭ জুন লুৎফা আকতার বাদী হয়ে সংবাদ কর্মী ইমতিয়ার ফারুকী ও রাউজান পৌরসভার কাউন্সিলর মো. বশির উদ্দীন খানসহ দুই জনের বিরুদ্ধে একই অভিযোগে সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টে মামলা করেন। উক্ত মামলায় গত ২৪ নভেম্বর রাউজান থানার ওসি (তদন্ত) কায়ছার হামিদ সংবাদ কর্মী ইমতিয়াজ ফারুকীর বিরুদ্ধে মানহানিকর বিভ্রান্তিমূলক একটি রিপোর্ট দেন। অভিযোগ রয়েছে লুৎফা আকতারের সাথে একটি চক্র মিথ্যা মামলা রেকর্ড এবং সংশ্লিষ্ঠ তদন্ত কর্মকর্তার পুলিশের প্রতিবেদন পক্ষে নিয়ে দেয়াসহ চুক্তি হয়। এ বিষয়ে মামলার বাদী লুৎফা
আকতারের সাথে একই ঘটনায় দুটি মামলা করার প্রসঙ্গে জানতে চাইলে মামলার বর্ণনায় কি লেখা হয়েছে কিছুই জানি না, আমার এক আত্বীয়র মাধ্যমে মামলাগুলো করা হয়েছে, আইনজীবীরা যেভাবে লিখে দিয়েছে সেভাবে হয়েছে, তবে ইমতিয়াজ ফারুকীর ভাইয়ের সাথে বিদেশে লেনদেন রয়েছে এ নিয়ে স্থানীয় গণ্যমান্য ব্যক্তিরাসহ একাধিক বৈঠক হয়েছে ।
এ বিষয়ে সংবাদ কর্মী ইমতিয়াজ ফারুকী জানান, আমি জীবনেও হালদা নদীর পাড়ে যায়নি, স্ট্যাম্প ও চেক যেগুলো দিয়েছে আমি টাকা পাওয়ার কথা গণ্যমান্য ব্যক্তিদের উপস্থিতিতে স্বীকার করে দিয়েছে যাবতীয় কাগজ পত্র ভিডিও এবং ছবিসহ আমার কাছে সংরক্ষিত আছে। আমার পাওনা টাকা না দিতে একের পর এক মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করছে। আমাকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর বিয়ষটি আগে আদালতকে জানানো হয়েছে। পুলিশ সুপার ও ডিআইজি মহোদয় এবং রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জকেও জানানো হয়েছে।মূলত আমার আমার চেকের টাকাগুলো না দিতে এ ধরণের একের পর এক মিথ্যা মামলা দিচ্ছে। যারা সাধারণ মানুষকে মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানি করে তাদের বিরুদ্ধে দৃষ্টান্তমূলক ব্যবস্থা নেয়ার জন্য স্বরাষ্ট্র মন্ত্রী এবং চট্টগ্রাম পুলিশ সুপার মহোদয়সহ সংশ্লিষ্ঠ প্রশাসনের হস্তক্ষেপ কামনা করেন।
এ বিষয়ে রাউজান থানার অফিসার ইনচার্জ আব্দুল্লাহ আল হারুন বলেন, একই ঘটনায় দুটি মামলা হলে একটি মামলা খারিজ হয়ে যাবে তবে যদি মিথ্যা রিপোর্ট দিয়ে থাকে তা আদালতে প্রমান করতে হবে তবে এর চেয়ে তদন্তকারী কর্মকর্তা ভাল বলতে পারবেন বলে তিনি জানান। এ বিষয়ে আসামির পক্ষের আইনজীবী এডভোকেট আনোয়ার হোসেন বলেন, মামলাটি সম্পূর্ণ মিথ্যা একই ঘটনায় স্থান ঠিক রেখে তারিখ পরিবর্তন করে দুটি মামলা করেছে। আগের মামলাটি পুলিশের তদন্তে মিথ্যা প্রমানিত হওয়ার পর আরও একটি মামলা করেছে মূলত মামলাগুলো দিয়ে আমার মক্কেলকে হয়রানি এবং পাওনা টাকা না দেয়ার অপকৌশল। এ মামলার মূল বিষয়টি আমরা আদালতকে অভিহিত করেছি।