মডেল ওয়ার্ডের স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন কাউন্সিলর টিনু
মোহাম্মদ ইসমাইল
নগরীর শিক্ষা জোন নামে পরিচিত চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ১৬ নং চকবাজার ওয়ার্ড। চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ প্রায় সব শিক্ষা প্রতিষ্ঠান এ ওয়ার্ডে অবস্থিত। ওয়ার্ডটি স্বাক্ষরতার হারে বেশ এগিয়ে। তবে পরিষ্কার-পরিচ্ছন্নতা, ফুটপাতে হাঁটার পরিবেশ, মশা ও কিছু অংশে জলাবদ্ধতা প্রশ্নে জনপ্রতিনিধিদের আরো কাজ করতে হবে বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা।
সিটি কর্পোরেশন ও উইকিপেডিয়া’র দেয়া তথ্যমতে, ২ দশমিক ০৪ বর্গকিলোমিটার এলাকা নিয়ে গঠিত সিটি কর্পোরেশনের ১৬ নং চকবাজার ওয়ার্ড। সর্বশেষ ২০১১ সালের জনশুমারি অনুযায়ী, এ ওয়ার্ডের জনসংখ্যা ৫৩ হাজার ২০৯ জন। মোট ভোটার আছেন ২৯ হাজার ৫৫৭ জন। ওয়ার্ডটি চসিকে’র চকবাজার থানার আওতাধীন। ওয়ার্ডের বর্তমান কাউন্সিলর ক্ষমতাশীল দল আওয়ামী লীগ সমর্থিত সদ্য নির্বাচিত নূর মোস্তফা টিনু। ওয়ার্ড কার্যালয়ের বর্তমান অবস্থান চকবাজারের কাঁচাবাজার ভবনে।
সিটি কর্পোরেশন বলছে, এ ওয়ার্ডে স্বাক্ষরতার হার ৮১.৪৭%। মোট শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের সংখ্যা ৭০টি। এর মধ্যে আছে বিশ্ববিদ্যালয় ৩টি, কলেজ ১৭টি, মাধ্যমিক বিদ্যারলয় ১০টি ও অন্যান্য ৪০টি। চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ(চমেক), চমেক হাসপাতাল, চট্টগ্রাম কলেজ, হাজী মুহাম্মদ মহসিন কলেজ, চট্টগ্রাম সরকারি উচ্চ বিদ্যালয়, হাজী মুহাম্মদ মহসিন সরকারি উচ্চ বিদ্যালয় এ ওয়ার্ডে অবস্থিত।
সরেজমিনে ওয়ার্ডের বাসিন্দাদের সাথে কথা বলে জানা গেছে, বর্তমান কাউন্সিলর সদ্য নির্বাচিত হওয়ায় তাঁরা কাউন্সিলরের কাজের কোনো সমালোচনা করছেননা। তবে ওয়ার্ডে দীর্ঘদিন ধরে লেগে থাকা কিছু সমস্যার কথা জানিয়েছেন তাঁরা। যেমন- ফুটপাতে হাঁটার পরিবেশ, জলাবদ্ধতা, মশার উপদ্রব, কাঁচাবাজারের মুখে ডাস্টবিন থেকে সৃষ্ট পরিবেশ দূষণ ইত্যাদি।
স্থানীয়রা বলছেন, রাস্তা ছোট হওয়ার কারণে ফুটপাতও ছোট, পাশ্ববর্তী দোকানদারেরা ফুটপাত দখল করে তাতে মালামাল রাখেন। নতুবা ক্ষুদ্র ব্যবসায়ীরা ফুটপাতে বসে ব্যবসা করেন। এসব কারণে মানুষ ফুটপাত দিয়ে হাঁটতে পারেনা। বাধ্য হয়ে হাঁটতে হয় রাস্তার উপর দিয়ে। এতে যানবাহন চলাচলে প্রতিবদ্ধকতার সৃষ্টি হয়।
ওয়ার্ডের কিছু অংশে অল্প বৃষ্টিতেই জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয় বলে জানিয়েছেন বাসিন্দারা। তাঁরা জানান, এ সমস্যাটি কোনোভাবেই সমাধান হচ্ছেনা। সাথে মশার উপদ্রব এবং কাঁচাবাজারের মুখে ডাস্টবিনের সৃষ্ট অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ ও পরিবেশ দূষণের কথাও জানান তাঁরা।
চকবাজার ওয়ার্ডের কাপাসোলা এলাকার স্থানীয় বাসিন্দ মোহাম্মদ সেলিম সাপ্তাহিক পূর্ব বাংলাকে জানান, ‘অল্প বৃষ্টিতেই এখানে জলাবদ্ধতার সৃষ্টি হয়। সব ভবনের নিচতলা ডুবে যায়। আর মশার কথা কি বলব; এলাকাটিতো মশার দখলে। মনে হয় ওদের রাজ্যে আমরা থাকি।’
ওয়ার্ডের আরেক বাসিন্দা কলেজ ছাত্র জসিম উদ্দিন বলেন, ‘কাঁচা বাজারের সামনের ডাস্টবিন থেকে অস্বাভাবিক দুর্গন্ধ ছড়ায়। এটির কারণে পরিবেশ দূষণ হচ্ছে। আর ডাস্টবিনটি রাস্তার উপর পড়ে থাকতে দেখা যায়। তাই এখানে সবসময় যানজটের সৃষ্টি হয়।’
সংশ্লিষ্ট বিশেষজ্ঞরা বলছেন, এসব সমস্যা সমাধানে সমন্বিত পদক্ষেপ জরুরী। তবে ওয়ার্ডের সমস্যা সমাধানে জনপ্রতিনিধি হিসেবে ওয়ার্ড কাউন্সিলরকেই জোড়ালো ভূমিকা রাখতে হবে।
এসব বিষয় নিয়ে সদ্য নির্বাচিত কাউন্সিলের দৃষ্টি আকর্ষণ করা হলে তিনি সাপ্তাহিক পূর্ব বাংলা’কে জানান, ‘এসব বিষয় আমার মাথায় আছে এবং এগুলো নিয়ে আমি কাজ করছি। আমি প্রশাসনের সহযোগিতায় ফুটপাত থেকে দখলদারদের ইতিমধ্যে কয়েকবারের তুলে দিয়েছি। ৩-৪ ঘন্টা পর তাঁরা আবার চলে আসে। সিটি কর্পোরেশন থেকে যখনই মশার ঔষধ পাই তখনই ছিটাই। কাঁচাবাজারের মুখের ডাস্টবিনটি সরানোর পরিকল্পনা হয়ে গেছে। কিছুদিনের মধ্যেই এটি সরানো হবে। আর জলাবদ্ধতা নিরসনে আল্লাহর সাহায্য প্রয়োজন। তবে আমি বসে নেই, চেষ্টা করে যাচ্ছি।’
জন রায়ের প্রতি সম্মান ও শ্রদ্ধাবোধ আছে জানিয়ে কাউন্সিল আরো বলেন, জনগণের জন্য দল-মত নির্বিশেষে তিনি কাজ করে যাবেন। চকবাজার ওয়ার্ডকে পরিচ্ছন্ন, সবুজ ও মডেল ওয়ার্ড গড়ার স্বপ্ন নিয়ে কাজ করে যাচ্ছেন বলে জানিয়েছে তিনি।