বিশেেষ প্রতিনিধি
প্রতিবেশী দেশের মাদক ব্যবসায়ীরা বাংলাদেশকে টার্গেট করেছে । একের পর এক নতুন নতুন ভয়ংকর মাদক তারা উদ্ভাবন করছে আর তা প্রয়োগ করছে বাংলাদেশে। বাংলাদেশের তরুণ সমাজের একাংশ এসব মাদক লুফে নিচ্ছে। এতে একদিকে যেমন তারুণ্যের অবক্ষয় হচ্ছে, তেমনি ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে দেশের অর্থনীতিও।
সম্প্রতি রাজধানীর যাত্রাবাড়ী এলাকা থেকে বিপুল পরিমাণ আইস বা ক্রিস্টাল মেথসহ ২ চোরাচালানিকে আটক করেছে র্যাব। আটককৃত হোছেন (৩২) এবং মোহাম্মদ রফিকের (৩৩) বাড়ি টেকনাফে। র্যাব জানিয়েছে এরা ইয়াবার মত আইসও আনছে মিয়ানমার থেকে নৌ পথে। আটককৃতদের মধ্যে হোছেন এই চোরাচালানি চক্রের অন্যতম প্রধান। এই চক্রের সদস্য সংখ্যা ২০ থেকে ২৫ জন। আটককৃত রফিক অটোরিকশা চালানোর আড়ালে মাদক চোরাচালান করত। র্যাব আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক কমান্ডার খন্দকার আল মঈন বলেন, এখন পর্যন্ত দেশে যেসব আইসের চালান ধরা পড়েছে, এটাই সবচে’ বড় চালান। ক’দিন আগে বাংলাদেশের পররাষ্ট্রমন্ত্রী ড. আব্দুল মোমেন এক অনুষ্ঠানে বলেছেন, বাংলাদেশ সীমান্তে গুলি চালানোর পক্ষপাতি নয়, কিন্তু মাদক, অস্ত্র ও মানবপাচার বন্ধে মিয়ানমার সীমান্তে গুলি চালানোর অনুমতি দেয়া হতে পারে। যেভাবে মাদক আসছে, তাতে দ্রুুততম সময়ের মধ্যে সেই নির্দেশ দেয়ার প্রয়োজন দেখা দিয়েছে বলে আমরা মনে করছি।
আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সূত্রগুলো জানায়, চলতি বছর আইন শৃঙ্খলা বাহিনীর হাতে আইসের ১৯টা চালান ধরা পড়েছে। তবে এবারের চালানটা সবচে’ বড় চালান। ৫ কেজি ৫০ গ্রাম ওজনের এই আইসের মূল্য ১২ কোটি টাকারও বেশি। অন্যান্য মাদকের তুলনায় আইসের মাদক ক্ষমতা বেশি এবং তা মানব দেহের জন্য বেশি ক্ষতিকর।
বাংলাদেশে নেশাজাতীয় দ্রব্য বলতে মদ, গাঁজা প্রভৃতিকেই বুঝাতো। এগুলোও ক্ষতিকর ছিল। কিন্তু পরবর্তীতে আসা ফেনসিডিল, হেরোইন, ইয়াবা আইস প্রভৃতি বেশি ক্ষতিকর। উন্নত বিশ্বে ১৮/১৯ বছর বয়স থেকে শুরু করে ৮০/৯০ বছর পর্যন্ত মানুষ মদ্যপান করে। কিন্তু এসব নেশা জাতীয় দ্রব্য গ্রহণ করে আমাদের যুব সমাজ অকাল মৃত্যুর শিকার হচ্ছে। মিয়ানমার বাংলাদেশকে দুইভাবে ক্ষতি করছে।
প্রথমত মাদক বেচে হাজার হাজার কোটি টাকা নিয়ে যাচ্ছে এবং বাংলাদেশের যুব শক্তি ধ্বংস করে দিচ্ছে, তা ছাড়া রোহিঙ্গা ঢুকিয়ে অস্ত্র ঢুকিয়ে নানাভাবে বাংলাদেশের ক্ষতি করছে। সরকার যে মিয়ানমার সীমান্তে গুলি চালানোর চিন্তা ভাবনা করছে। আমরা তো মনে করি শুধু স্থলবন্দর ছাড়া ১৯২ কিলোমিটার সীমান্তের পুরোটাই সিল করে দেয়া উচিত এবং সীমান্তে আরো কঠোর নজরদারির পদক্ষেপ নেয়া উচিত।