শাহিন আহমেদ
ক্ষমতাসীন আওয়ামী লীগ ও মহান মুক্তিযোদ্ধাদের সম্মান ক্ষুন্ন করে মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দাবী করে জনৈক শাহাবুদ্দিন নিজ এলাকার পরিবেশ বিষিয়ে তুলছে। নিজ বাড়ী পতিতালয়ে পরিণত করেছে । সাগরে মাছ শিকারের আড়ালে মৎস্য ব্যবসার নামে ইয়াবা পাচার ও গাঁজা বিক্রি করে কোটিপতি বনে গেছে সে। নিজের রয়েছে মাছ শিকারের বোট জালসহ বিপুল টাকার সরঞ্জাম। এসবের পরও চাঁদাবাজিও করে থাকে এই শাহাবুদ্দিন। সেই কয়েকটি ক্যাসিনোর আখড়া থেকেও দৈনিক হিসেবে চাঁদা নিয়ে থাকে। ফারুক ও দিদার পরিচালিত ক্যাসিনোর আখড়া থেকে শাহাবুদ্দিন দৈনিক ৩০০ টাকা করে চাঁদা নেয়।
শাহাব উদ্দিন স্থানীয় মুক্তিযোদ্ধা ইনু মিয়ার ছেলে । সে বন্দর থানা বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে সবখানে পরিচয় দেয়। তার এলাকায় তার কুখ্যাতি রয়েছে।
সেই এলাকার খুবই পরিচিত একটি নাম শাহাবুদ্দিন, কালোবাজারি ও নারী সিন্ডিকেটের মূল হোতা, এবং টুকাই ছিনতাইকারীর লিডার এই শাহাবুদ্দিন।
৩৮ নাম্বার ওয়ার্ড সাগর পাড় শাহাবুদ্দিনের, কলোনি থেকে শুরু করে লাইলির বিট এবং, আশেপাশের এলাকা জুড়ে প্রতিদিন বসছে জুয়ার আসর।
এছাড়া বিভিন্ন জায়গায় চলছে অবাধে দেহ ব্যবসা ও মাদকের কেনাবেচার এবং সেবন।
চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী ও মাদকসেবীদের, প্রকাশ্য বিচরণে অতিষ্ঠ হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী, কেউ কিছু বললে তাদের উপর নেমে আসে মহাবিপদ।
স্থানীয় বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়, ধুমপাড়া সাগর পাড় এলাকায় শাহাবুদ্দিন কলোনি থেকে শুরু করে, দিনরাত চলে মাদক কারবারীদের ব্যবসা, ধুমপাড়া সাগর পাড় লাইলীর বিট ও শাহাবুদ্দিনের কলোনি সহ, মাদকসেবীদের নিরাপদ স্থান হওয়ায় নির্বিঘ্নে চলে তাদের এই অপকর্ম।
দেহ ব্যবসার পাশাপাশি ফেনসিডিল, ইয়াবা, টাপেন্টা ট্যাবলেট, গাজা, হিরোইন সহ বিভিন্ন ধরনের মাদক সেবনের কাজ।
তবে মাদকসেবীদের আনাগোনা বেশি লক্ষ্য করা যায়, বিকেল থেকে গভীর রাত পর্যন্ত।
রাত যত বাড়ে মাদকসেবীদের জন্য এই এলাকা পরিণত হয় অভয়ারণ্য।
ধুমপাড়া সাগর পার লাইলির বিট, এখানে জুয়ার আসর চলে, দুপুর থেকে গভীর রাত পর্যন্ত, অভিযোগ এই আসরে প্রতিদিন ২০ থেকে ৩০ লক্ষ টাকার জুয়া চলে।
এইসব মাদক সিন্ডিকেট ও জুয়ার আসর এবং দেহব্যবসা শাহাবুদ্দিন নামক এক রাজনৈতিক নেতা নিয়ন্ত্রণ করেন বলে বিভিন্ন সূত্র ও এলাকাবাসীর অভিযোগ।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে, এলাকার অনেকেই অভিযোগ করে জানিয়েছেন,এলাকার চিহ্নিত মাদক ব্যবসায়ী হলো মুক্তিযোদ্ধা ইনু মিয়ার ছেলে শাহাব উদ্দিন, মাদক ও জুয়া বা দেহ ব্যবসার সবকিছুরই তিনি এডমিন।
এর পাশাপাশি শাহাবুদ্দিনের আরেকটি পরিচয় হল, বন্দর থানা বাংলাদেশ আওয়ামী যুবলীগের সহ-প্রচার সম্পাদক হিসেবে তিনি পরিচয় দিচ্ছে,
এবং এই সাইনবোর্ড ব্যবহার করে চালাচ্ছে এই অপকর্ম এর জন্য দলের সুনাম নষ্ট হচ্ছে বলে অভিযোগ করেছেন এলাকার একাধিক ব্যক্তি।
এলাকাবাসী আরও অভিযোগ করে বলেন, বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির সাথে রয়েছে তার গভীর সম্পর্ক, এবং পুলিশ ফাঁড়ির ইনচার্জ শরিফুজ্জামানের সাথে রয়েছে তাঁর আত্মার সম্পর্ক, অনেক সময় দেখা যায় পুলিশ এসে খোশ আড্ডায় মগ্ন থাকেন, অনেকটা পুলিশ প্রশাসনের সামনে হচ্ছে এই অপকর্ম।
কথা হয় বন্দর পুলিশ ফাঁড়ির এএসআই সাঈদ সাহেবের সাথে, প্রশ্ন শুনেই মোটো ফোনের লাইন কেটে দেয় এএসআই সাঈদ, তারপর অনেকবার ফোন করেও তার সাথে আর যোগাযোগ করা যায়নি।
ধুমপাড়া সাগর পাড় এলাকায় মাদকের সম্রাজ্য ও দেহ ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করেন, শাহাবুদ্দিনের অন্যতম সহযোগী হিসেবে আরও কয়েকটি পরিচিত নাম,সালমা নামের একজন মহিলা, সে একেকবার একেক জায়গায় একেক নাম ধারণ করেন, তার ভাগিনা এবং শাহজাহান, দিদার, ইমতিয়াজ, ফারুক, ইমদাদুল ও আরো অনেকেই।
এদের বিরুদ্ধে এর পুর্বে এলাকায় বিভিন্ন অপকর্মের অভিযোগ রয়েছে, এক সময় এলাকায় ছিঁচকে চোর হিসেবে বেশ নামডাক রয়েছে, এখন মাদক সাম্রাজ্যের বাসিন্দা।
বিভিন্ন সূত্রে জানা গেছে, সমাজের লোকের সাথে তাদের সম্পর্ক না থাকলেও, পুলিশের সাথে রয়েছে গভীর সম্পর্ক, বন্দর পুলিশ ফাঁড়ি যেন তাদের জন্য একটি নিরাপদ আশ্রয়।
ধুমপাড়া সাগর পাড় এলাকার এসব মাদক ব্যবসা ও জুয়ার আসর এবং অসামাজিক কার্যকলাপ বন্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থাগ্রহণ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করছে ভুক্তভোগী এলাকাবাসী।
এ বিষয়ে কথা হয় ৩৮ নম্বর ওয়ার্ড কাউন্সিলর গোলাম মোহাম্মদ চৌধুরীর সাথে,তিনি বলেন, আমি একলা এবিষয়টি ট্যাকেল দিতে পারছিনা, আপনারা একটু সহযোগিতা করেন, আপনারা একটা ব্যবস্থা করেন, আমি আছি আপনাদের সাথে, আমি আইনের পক্ষে, আমি কখনো আইনের বিপক্ষে না, আইনের বিপক্ষে যারা কাজ করেন তাদের সাথে আমি নাই।
কথা হয় বন্দর থানার পুলিশ পরিদর্শক ওসি মোঃ নিজাম সাহেবের সাথে, তিনি বলেন, আপনার পত্রিকায় নিউজটা দেখে আমি অবাক হয়ে গিয়েছিলাম, এই বিষয়টি আমার কাছে নেই কেন, প্রথমে আপনার পত্রিকা এবং আপনাকে সহ ধন্যবাদ জানাই, বিষয়টি আমাকে জানানোর জন্য, আমি নিউজটা দেখে ওই এলাকায় যাই, এবং কয়েকজনকে গ্রেপ্তার করে চালান করে দিয়েছি, তবে একদিনে সব কিছু করা সম্ভব হয়নি, আমাদের অভিযান চলমান রয়েছে এবং থাকবে।