কামরুল হাসান নিরবঃ
দাগনভূঁইয়া উপজেলার ৮ নং জয়লস্কর ইউনিয়ন ৬ নং ওয়ার্ড বারাহিগুনী গ্রামে রোববার সকালে বারাহিগুনী দরবার শরীফে শাহ পীর চিশতী নিজামী সুন্নী মাদরাসার জায়গা দখল ও মাদরাসা ভাঙচুর করা হয়। এলাকাবাসী ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, এলাকায় দরবার শরীফের দুটি পক্ষ রয়েছে। একটি মূল বারাইগুনী দরবার শরীফ পক্ষ অন্যটি চিশতিয়া মনজিল পক্ষ। বারাইগুনী দরবার শরীফ নিয়ন্ত্রণ করে নিজাম উদ্দিন চিশতী। চিশতিয়া মনজিল নিয়ন্ত্রণ করে মাসুদ চিশতী। এখানে দু পক্ষের আলাদা মুরিদান রয়েছেন। তাদের মধ্যে দরবার শরীফ ও মাদরাসার জায়গা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরে বিরোধ চলছিল। রোববার সকালে এই বিরোধ সংঘর্ষে রূপ নেয়। এতে নিজাম উদ্দিন চিশতীর পক্ষের সাতজন গুরুতর আহত হন। পাঁচ জনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। বারাহিগুনী দরবার শরীফের নিজাম উদ্দিন চিশতির ছোট ছেলে সাবের উল হক তাৎক্ষণিক সাংবাদিকদের ব্রিফিং করেন। তিনি বলেন, সকাল থেকে চিশতীয়া মনজিলের মাসুদ চিশতি দুই থেকে তিনশোর মতো বহিরাগত লোক নিয়ে তাদের ওপর অতর্কিত হামলা করে। এতে নারী-পুরুষ অনেকে আহত হন। আহতরা হলেন শেখ সাবেরুল হক চিশতী, সাইফুল ইসলাম রানা, জিয়াউল হক চিশতী, খাদেম সোবান মিয়া, রাহী চিশতী, সামের চিশতি। তিনি বলেন, সকালে মাদরাসার ক্লাম চলাকালীন অবস্থায় মাদরাসায় হামলা করে মাদরাসা ভাঙচুর করা হয়। মাদরাসার আসবাবপত্র ভাঙচুর করা হয়। মাদরাসার আলমিরা থেকে জরুরি ফাইলপত্র নিয়ে যায়, মাদরাসার আলমিরা থেকে তিনলাখ টাকা লুটের অভিযোগও করেন তিনি। এ ব্যাপারে মামলার প্রস্তুতি নিচ্ছেন বলে জানান। তিনি মূল হামলাকারী হিসেবে হেলাল চিশতী, মাসুদ চিশতী, মান্নান, সোহাগ এদের নাম উল্লেখ করেন। অন্য দিকে মাসুদ চিশতীর সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করে ও তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি। ৮ নং জয়লস্কর ইউনিয়ন চেয়ারম্যান মামুনুর রশিদ মিলন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন। তিনি বলেন, উভয় পক্ষ মাদরাসার জায়গার মালিকানা দাবি করে মুরিদানের মধ্যে মারামারির ঘটনা ঘটে। পরবর্তীতে পুলিশ প্রশাসন পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলে বৈঠকের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। দাগনভূঁইয়া থানার অফিসার্স ইনচার্জ ইমতিয়াজ আহমেদ বলেন, ‘সকালে সংঘর্ষের খবর পেয়ে ফোর্স পাঠিয়ে এবং আমি নিজে গিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনি। দাগনভূঁইয়া উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদা আক্তার তানিয়া বলেন, ঘটনার খবর পেয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করি, আমরা উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। স্থানীয় চেয়ারম্যান মামুনুর রশীদ মিলনসহ মাজারের উভয় পক্ষের সঙ্গে কথা বলেছি। তারা উভয়পক্ষ বসে সমস্যা সমাধানের ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়। তারা উভয় পক্ষ বৈঠকের ব্যাপারে সম্মতি প্রকাশ করেছে। এই বিষয়ে উপজেলা প্রশাসন থেকে সর্বাত্মক সহযোগিতা করা হবে।