বাবর মুনাফ, বোয়ালখালী প্রতিনিধি
বোয়ালখালী উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়নে ব্যাপক উন্নয়ন হলেও বরাবরের মতোই অবহেলিত রয়ে যায় এ ইউনিয়নের পূর্ব শাকপুরা এলাকা। ১০ বছরেও উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি এ এলাকায়। দশভুজা মাতৃমন্দির সড়ক, তেলিপাড়া সড়ক, ব্যাংক কালী বাড়ী সড়কের বেহাল দশা। প্রায় ৫ হাজার জনগোষ্ঠীর দুর্ভোগ এখন চরমে পৌঁছেছে।
জানা গেছে, এ এলাকায় ১০টি মন্দির, ২টি মসজিদ, ১টি উচ্চ বিদ্যালয়, ২টি প্রাথমিক বিদ্যালয় রয়েছে। এ এলাকায় প্রায় ৫ হাজারেরও অধিক লোকের বসবাস। ভোটার সংখ্যা প্রায় ২ হাজার ৭ শত। এই জনগোষ্ঠীর যাতায়াতে রয়েছে ৮টি নির্ভরযোগ্য সড়ক। এ সড়কগুলো দীর্ঘ অবহেলিত স্বীকার করে স্থানীয় ইউপি সদস্য শ্যামল বিশ্বাস টিসু বলেন, এ এলাকায় আটটি সড়ক রয়েছে। প্রতিটি সড়কের অবস্থা নাজুক। এ এলাকায় একটি সড়কও কার্পেটিং এর মুখ দেখেনি। তবে সম্প্রতি একটা সড়কের (ধুপ পুল সড়ক) কার্পেটিং এর কাজ শুরু হয়েছে।
সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে, উপজেলার শাকপুরা ইউনিয়নের ৮নং ওয়ার্ড (পূর্ব শাকপুরা) এলাকার দশভুজা মাতৃমন্দির সড়ক, তেলি পাড়া সড়ক , ব্যাংক কালী বাড়ী সড়কের অবস্থা নাজুক। পায়ে হাঁটাও দুষ্কর। তেলি পাড়া সড়ক খালের গর্ভে নিলীন হয়ে যাওয়ায় কৃষকের জমির উপর গাছ-বাঁশ দিয়ে চলাচল করতে হয় ওই এলাকার অন্তত ৫শ মানুষ। এ এলাকার সড়কগুলো কবে সংস্কার হয়েছে ঠিক করে কেউই বলতে পারছেন না। চেয়ারম্যানের হীনমন্যতাকেই এর প্রধান কারণ মনে করছেন স্থানীয়রা।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয়রা বলেন, এ এলাকাটির অধিকাংশ আদিবাসি সংখ্যালঘু হওয়ায় চেয়ারম্যানের হীনমন্যতায় দীর্ঘ বছর সংস্কার বঞ্চিত। জনপ্রতিনিধিরা কেবল ভোটের সময় নানা আশ্বাসের ফুলঝুড়িতে ভাসিয়ে দেন।
ভোট গেলেই আর এ এলাকাটাও চিনেন না তাঁরা। সাবেক ইউপি সদস্য স্বপন ঘোষ ও স্থানীয়দের সাথে কথা বলে জানা যায়, তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান বদরুচ মেহেরের বদান্যতায় সড়কগুলোতে ইট দ্বারা সংস্কারহয়েছিল। আর কোনো সংস্কার হয়নি। শাকপুরা ইউনিয়নের বাসিন্দা মো. জামাল বলেন, বর্ষা মৌসুমে পানি আর কাদায় সয়লাব থাকে এ ইউনিয়নের অধিকাংশ সড়ক। এ সময় পায়ে হাঁটাও দায়।
শুকনো মৌসুমে যত্রতত্র সড়কে থাকে ধুলোর রাজত্ব।
স্থানীয় বাসিন্দা লিটন দে বলেন, এ সরকারের আমলে ইউনিয়নের অন্যান্য এলাকায় যে উন্নয়ন হয়েছে তার ছিটেফোঁটা উন্নয়ন পূর্ব শাকপুরায় হয়নি। শাকপুরা ইউনিয়ন পরিষদের দুইবারের নির্বাচিত চেয়ারম্যান হাজী আবদুল মান্নান মোনাফ বলেন, প্রয়াত সাংসদ মঈন উদ্দীন খান বাদলের আমলে পশ্চিম শাকপুরা এলাকায় ব্যাপক উন্নয়ন হয়েছে। সড়কগুলো সে সময়ে সংস্কার করা হয়েছিল। শাকপুরা বড়ুয়ার টেক হতে আমতলা পর্যন্ত বাইপাস সড়কের কাজ কিছু দিনের মধ্যে শুরু হবে। সড়কটি হয়ে গেলে চৌমুহনীতে যানবাহনের চাপ কমবে। এ ছাড়া ঘোষখীল হয়ে পুলিন চেয়ারম্যানের বাড়ী পর্যন্ত সড়কটির সংস্কার কাজ
পরিকল্পনা রয়েছে। চলমান রয়েছে ধোপপুল থেকে লালার হাট সংযোগ সড়কের সংস্কার কাজ।
পূর্ব শাকপুরার অবহেলিত সড়কগুলোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, পূর্ব শাকপুরার সড়ক নিয়ে বড় সমস্যা। প্রতিটি ঘরে ঘরে রাস্তা। এতো বেশি রাস্তার কাজ করা সম্ভব না। তেলি পাড়া সড়ক দিয়ে চলাচল করে অল্প কিছু মানুষ। চার-পাঁচ জন মানুষের জন্য সড়ক করে দিয়ে লাভ কি। যে সড়কগুলোতে বেশি মানুষের চলাচল আগে সেসব সড়কগুলো অগ্রাধিকার দেওয়া হবে বলে জানান তিনি।