অনিন্দ্য নয়নঃ
অনাড়ম্বরভাবে তিনদিনব্যাপী মাঙ্গলিক পূজা-অর্চনার মধ্যদিয়ে সোমবার ৩০ অক্টোবর’২১ ইং হতে শুরু হচ্ছে সনাতন ধর্মের প্রাণপুরুষ পরমেশ্বর ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমী উৎসব। করোনার সংক্রমণ রোধে গত বছরের মতো এবারও মহাশোভাযাত্রার আয়োজন করা হচ্ছে না। শুধু ধর্মীয় বিধি মেনে পূজা-প্রার্থনার মধ্যদিয়ে এবারের জন্মাষ্টমী উদযাপিত হবে। রবিবার ২৯ আগস্ট’২১ ইং দুপুর ১২ঃ৩০ মিনিটে চট্টগ্রাম প্রেস ক্লাবে শ্রীশ্রী জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদ- বাংলাদেশ, কেন্দ্রীয় কমিটি আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন এসব তথ্য জানান। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে প্রকৌশলী প্রবীর কুমার সেন বলেন, এবার জন্মাষ্টমী উৎসবে দেশ ও জাতির কল্যাণে এবং বৈশ্বিক করোনা মহামারী হতে মুক্তির জন্য সমবেত প্রার্থনা করা হবে। চট্টগ্রামে অনাড়ম্বরভাবে আয়োজন করা হয়েছে তিনদিনব্যাপী বিভিন্ন কর্মসূচি। এসময় তিনি জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি শিল্পপতি সুকুমার চৌধুরীর পক্ষ থেকে সবাইকে ভগবান শ্রীকৃষ্ণের শুভ জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা জানান। তিনি বলেন, আগামীকাল সোমবার সকাল ১০টায় বিভিন্ন মঠ-মন্দির ও আশ্রমে দুস্থদের মাঝে ত্রাণ বিতরণ করা হবে। জেএমসেন হলে কর্মসূচির উদ্বোধন করবেন চট্টগ্রাম রামকৃষ্ণ মিশনের অধ্যক্ষ শ্রীমৎ শক্তিনাথানন্দ মহারাজ। এতে প্রধান অতিথি থাকবেন সাবেক সিটি মেয়র আ.জ.ম নাছির উদ্দীন। প্রধান আলোচক থাকবেন বাংলাদেশ হিন্দু বৌদ্ধ খ্রিষ্টান ঐক্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট রানা দাশগুপ্ত। বিকাল ৫টায় অনুষ্ঠানের উদ্বোধক থাকবেন শ্রীমৎ স্বামী সুদর্শনানন্দ পুরী মহারাজ। প্রধান অতিথি থাকবেন শিক্ষা উপমন্ত্রী ব্যারিস্টার মহিবুল হাসান চৌধুরী নওফেল। প্রধান আলোচক থাকবেন প্রধানমন্ত্রীর বিশেষ সহকারী ব্যারিস্টার বিপ্লব বড়ুয়া। সন্ধ্যা ৭টায় মহাস্নান ও অভিষেক শেষে পূজা অনুষ্ঠিত হবে। মঙ্গলবার ৩১ আগস্ট সকাল থেকে ধর্মীয় অনুষ্ঠানাদি শেষে বিকাল ৫টায় ত্রাণসামগ্রী বিতরণ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি থাকবেন চসিক মেয়র মো. রেজাউল করিম চৌধুরী। প্রধান আলোচক থাকবেন সমাজবিজ্ঞানী ড. অনুপম সেন। বুধবার ১ সেপ্টেম্বর পূজানুষ্ঠান, প্রসাদ বিতরণ, শ্রীমদ্ভাগবত পাঠ, নামকীর্তনের মধ্যদিয়ে শেষ হবে উৎসব। উল্লেখ্য, এবছর জন্মাষ্টমী উৎসবে খরচের অর্থ দিয়ে সারাদেশের মহানগর, জেলা ও উপজেলায় অসহায় মানুষ এবং অনাথালয়ে খাদ্যসামগ্রী, শিক্ষা সামগ্রী ও চিকিৎসা সেবা প্রদান করা হবে। সংবাদ সম্মেলনে জানানো হয়, ১৯৩০ বঙ্গাব্দে জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের পথচলা শুরু হয়। ৩৮ বছর ধরে চট্টগ্রামে জন্মাষ্টমী উৎসব উদ্যাপন করা হচ্ছে। ঢাকাসহ দেশের ৫৫টি জেলায় পরিষদের শাখা কমিটি রয়েছে। প্রাকৃতিক দুর্যোগে জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে দুর্গত এলাকায় জন্মাষ্টমী উদ্যাপন পরিষদ ত্রাণ বিতরণ কার্যক্রম পরিচালনা করেছে। করোনাকালীন সময়েও প্রায় ২০ লাখ টাকার খাদ্যসামগ্রী বিতরণ করা হয়েছে। সামাজিক কর্মকান্ডের পাশাপাশি সাম্প্রদায়িক অপশক্তির সহিংসতার বিরুদ্ধেও বিভিন্ন কর্মসূচি পালন করেছে এই সংগঠন। ‘জন্মাষ্টমী উদযাপন পরিষদের দাবির প্রেক্ষিতে এরশাদ সরকারের সময়ে একদিনের সরকারি ছুটি আদায়, প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সঙ্গে গণভবনে জন্মাষ্টমীর শুভেচ্ছা বিনিময়কালে পাওয়া প্রতিশ্রুতি অনুযায়ী অর্পিত সম্পত্তি সংশোধনী আইন পাশ ও হেবা আইনের ন্যায় হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের জন্য আইন পাশ এই সংগঠনের অন্যতম অর্জন।’ সংবাদ সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জন্মাষ্টমী পরিষদের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি সুজিত কুমার বিশ্বাস, সাধন ধর, বিমল দে, লায়ন আশীষ কুমার ভট্টাচার্য্য, লায়ন তপন কান্তি দাশ, অধ্যাপক অর্পণ ব্যানার্জী, রতন আচার্য্য, সুমন দেবনাথ, শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিত, অমিত চৌধুরী, লায়ন ডা. বিধান মিত্র, আশীষ চৌধুরী, চন্দন দাশ, এস প্রকাশ পাল, সজল দত্ত, ঊষা আচার্য্য, পরিমল দত্ত, নিউটন কান্তি দে প্রমুখ