শাহীন আহমেদ
চট্টগ্রাম নগরীর মুসলিমাবাদ সাগরপার ঘাট ও আকমল আলী রোড এর মাথায় সাগরপাড় ঘাট এবং ধুমপাড়া সাগর পাড়ে ঘুরে দেখা গেছে ভরা মৌসুমে ইলিশ পাওয়া যাচ্ছে না, জেলেরা ফিরছেন খালি হাতে।
সেখানে গিয়ে কথা হয় কিছু জেলেদের সাথে তারা জানান, সাগরে যাওয়া-আসার তেল খরচের টাকা উঠানো কষ্ট হয়ে যাচ্ছে। জেলেদের কাছে আরও জানা যায়, গত বছরে এই সময়ে ইলিশ নিয়ে ব্যস্ত সময় কাটিয়ে ছিলেন পতেঙ্গা উপকূলীয় অঞ্চলের জেলেরা।
জেলেরা আরো জানায়, নিষেধাজ্ঞা শেষে জাল ভড়া ইলিশ মাছ পাওয়া গেছে। কিন্তু এ বছর সাগর থেকে অনেকটা খালি হাতে ফিরছেন তারা।
লক্ষীপুর থেকে আসা একদল জেলের সাথে কথা হয়। জেলের সরদার মাসুদ মিয়া জানায়, আমরা প্রতি মৌসুমে এই উপকূলে চলে আসি, কিন্তু এ সময়টা বুঝে উঠতে পারছিনা।
জেলেরা আরো বলেন, মুহুরী প্রজেক্ট এর সুইচ গেইট খুলে দেওয়ায় স্রোত বেড়ে গেছে, সবগুলো মাছ দক্ষিণ দিকে চলে গেছে। এখন ইলিশ ধরার মৌসুম, এ সময় সুইজ গেট এর ৪০ টি দরজা যদি না খুলে দিত, তাহলে আমরা মাছ ধরতে পারতাম। গেল বছর প্রচুর মাছ পাওয়া গেছে, কিন্তু এ বছর তার অর্ধেকও পাচ্ছিনা।
মুসলিমাবাদ জাইল্লা পাড়া এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা জেলে সুজন দাস জানায়, সাগরে মাছ নেই দুঃখ-দুর্দশায় দিন কাটছে আমাদের, ছোট কিছু মাছ পাওয়া যাচ্ছে, যা দিয়ে খরচের টাকা উঠাতে কষ্ট হচ্ছে।
আরো অন্যান্য জেলেরা জানায়, সাধারণত জুন মাস থেকে আগস্ট এই তিন মাসে আমাদের সারা বছরের সংসার খরচের টাকা উঠাতে হয়,
সারা বছর আমরা এই তিন মাস এর অপেক্ষায় থাকি।
মুসলিমাবাদ সাগরপাড় ঘাটে টাটকা জীবিত মাছ কিনতে আসা কয়েকজন ক্রেতার সাথে কথা হয় , সাগরের টাটকা ইলিশ এর আশায় অনেক দূর দূরান্ত থেকে আসা ক্রেতারা বলেন, জেলেরা জীবন বাজি রেখে ইলিশের প্রধান উৎস বঙ্গোপসাগরের গভীরে গিয়ে পর্যাপ্ত ইলিশ পাচ্ছে না, আর কখনো কখনো কিছু মাছ ধরা পড়লেও, একসাথে দল বেদে সাগরে যাওয়া জেলেরা ভাগ পাচ্ছে সামান্য কয়েকটি মাছ।
আর দিনের পর দিন এ অবস্থা চলতে থাকায়, এর প্রভাব পড়েছে হাট-বাজারগুলোতে, কাঠগর ,কলসী দিঘীর পাড়, আনন্দবাজার ও আরো কিছু বাজার ঘুরে দেখা যায় ইলিশের আকাল। কিছু ইলিশ দেখা গেলেও তা আকারে ছোট এবং মাঝারি যা ক্রেতাদের নজরে আসছে না।
কিছু জেলেরা জানায়, ভরা মৌসুমে এমন অবস্থা বিপদে ফেলেছে আমাদের, ঋণ করে ইলিশ শিকার ও ব্যবসায় যারা নেমেছেন, তাদের দিন দিন সুদ বাড়ছে, ঋণের টাকা সময় মত শোধ করতে না পারায় দেনাই ডুবছেন জেলেরা।