বিশেষ প্রতিনিধি
প্রায় ১০ মাস আগে পটিয়ায় নবী হোসেন হত্যা মামলার রহস্য উদঘাটন করেছে পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই)। মায়ের সঙ্গে পরকীয়ার কারণে মায়ের প্রেমিককে রগ কেটে হত্যা করে ছেলে। গত শনিবার মধ্যরাতে মামলার আসামি ছেলে সাব্বির (২৪) ও তাঁর মা শিউলি বেগমকে (৪২) আশুগঞ্জ উপজেলার সোহাগপুর গ্রামের একটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করেছে পিবিআই। নিহত নবী হোসেন ভৈরব উপজেলার আগানগর গ্রামের মো. ইসমাইলের ছেলে।মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা চট্টগ্রাম পিবিআইয়ের পুলিশ পরিদর্শক মো. মনির হোসেন জানান, ২০২০ সালের ১৭ অক্টোবর চট্টগ্রাম জেলার পটিয়া থানাধীন মনসা আইডিয়াল স্কুলের পূর্ব-উত্তর পাশে একটি অজ্ঞাতনামা ৩০ বছর বয়সী এক পুরুষের মরদেহ পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলে গিয়ে পিবিআই টিম ফিঙ্গার প্রিন্ট আইডেনটিফিকেশন এন্ড ভেরিফিকেশন সিস্টেমের মাধ্যমে ভিকটিমের পরিচয় উদঘাটনে সক্ষম হয়।
পিবিআই জানায়, সাব্বিরের বাবা বিদেশ থাকে। সেই সুযোগে তাঁর মা শিউলির সঙ্গে পরকীয়া করে নবী হোসেন। এরই মধ্য শিউলি তাঁর স্বামীকে তালাক দিয়ে নবী হোসেনকে বিয়ে করেন। মায়ের অসম প্রেম ও দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনাটি সহ্য করতে পারেননি তাঁর ছেলে সাব্বির। পিবিআই আরও জানান, নবী হোসেনকে খুন করার পরিকল্পনা করে ছেলে। এই জন্য দুইবার অপহরণের চেষ্টা করেও ব্যর্থ হন। তৃতীয়বার সফল হয়। ওই বছরের ১৬ অক্টোবর কৌশলে মায়ের প্রেমিক নবী হোসেনকে দাওয়াতের কথা বলে একটি প্রাইভেটকারে তুলে কুমিল্লায় নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে। এ সময় গাড়িতে তাঁর দুই বন্ধু সহযোগিতা করে। তারপর তাঁর মরদেহ চট্টগ্রামের পটিয়া ফেলে তাঁরা ভৈরব চলে যায়। পিবিআই মামলাটি তদন্ত নেয়ার পর গোপন তথ্য পেয়ে প্রাইভেটকারের চালক আশিক ও হেলপার সুমনকে গত বছর ২৩ অক্টোবর ভৈরবের দুটি বাসা থেকে গ্রেপ্তার করে। এরপর তাঁরা দুজন চট্টগ্রাম আদালতে ১৬৪ ধারায় জবানবন্দি দিয়ে হত্যার ঘটনাটি স্বীকার করেন। কক্সবাজার থেকে ভৈরব ফেরত যাওয়ার পর হত্যার পরিকল্পনাকারী সাব্বির গাড়ি ভাড়া বাবদ ১৫ হাজার টাকা, খুনের জন্য ৬০ হাজার টাকা তুষারকে পরিশোধ করেন। সেখান থেকে সুমনকে ১৭ হাজার টাকা এবং আশিককে দেন ১৮ হাজার ও তুষার ২৫ হাজার টাকা রাখেন। পরে পিবিআই পুলিশ টিম পুরো ঘটনায় মা শিউলির দ্বিতীয় বিয়ের ঘটনাটি সহ্য করতে পারেননি তাঁর ছেলে সাব্বির।এর সূত্রে ধরেই নবী হোসেনকে খুন করার পরিকল্পনা করে ছেলে। ২০২০ সালের ১৬ অক্টোবর কৌশলে প্রেমিক নবী হোসেনকে দাওয়াত দিয়ে এনে প্রাইভেটকারে তুলে কুমিল্লায় নিয়ে যায়। সেখানে তাঁকে গলায় গামছা পেঁচিয়ে শ্বাসরুদ্ধ করে হত্যা করে গ্রুপ টি।