সাতকানিয়া প্রতিনিধি
সাতকানিয়ায় মরা গরুর মাংস বাজারে বিক্রির অভিযোগ পাওয়া গেছে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর অবিক্রিত ২০ কেজির অধিক মাংস মাটির নিচে পুঁতে ফেলা হয়েছে।
গত মঙ্গলবার বাজালিয়ায় মারা যাওয়া একটি গরুকে জবাই করে বুধবার (২ জুন) সকালে দস্তিদার হাট এলাকায় এসব মাংস বিক্রি করা হচ্ছিল।
জানা যায়, বাজালিয়া ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের উত্তর বাজালিয়া এলাকার আবু তাহের সওদাগরের একটি গরুকে মোটা তাজা করার জন্য মঙ্গলবার ইউরিয়া সার খাওয়ানো হয়। সার খাওয়ানোর এক পর্যায়ে গরুটি ঢলে পড়ে যায়। পরে খবর পেয়ে বাজালিয়া এলাকার কসাই মো. শাহজাহান ও সাতকানিয়া পৌরসভার চরপাড়ার কসাই মো. লেদু মিলে মরা গরুটিকে জবাই করে মাংস নিয়ে আসে। নাম প্রকাশ না করার শর্তে স্থানীয় একাধিক ব্যক্তি জানিয়েছেন, গরুটি জবাই করার আরো অনেক আগে মারা গেছে।
এদিকে, কসাই শাহজাহান এবং লেদু মিলে গরুর মাংসগুলো ফ্রিজে রেখে দেয় এবং আজ সকালে বাজালিয়া এলাকায় বিক্রির চেষ্টা করে। বিষয়টি জানাজানি হওয়ার পর স্থানীয় লোকজনের বাঁধার মুখে বাজালিয়া এলাকায় মাংস বিক্রি বন্ধ করে দস্তিদার হাটে নিয়ে আসে তারা। সেখানে বিক্রির এক পর্যায়ে দস্তিদার হাট এলাকার লোকজনও একদিন আগে মারা যাওয়া গরুর মাংস বিক্রির বিষয়টি জানতে পেরে তাদেরকে বাঁধা দেয়। এছাড়াও দস্তিদার হাটে মরা গরুর মাংস বিক্রি হচ্ছে বলে ছদাহা ইউপি চেয়ারম্যান মো. মোসাদ হোসেন চৌধুরীকে বাজালিয়া থেকে লোকজন ফোন করে জানায়। বিষয়টি জানার পর ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ হোসেন চৌধুরী দস্তিদার হাট এলাকায় ছুটে আসেন। বাজারে মরা গরুর মাংস বিক্রির বিষয়টি উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. নজরুল ইসলামকে জানানো হলে তিনি উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদকে ঘটনাস্থলে পাঠান। ভেটেরিনারি সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ দোকানে এসে মাংসগুলো দেখার পর ল্যাবে পরীক্ষার জন্য কিছু মাংস নেন এবং অবিক্রিত মাংসগুলো মাটির নিচে পুঁতে ফেলেন। এদিকে, অভিযুক্ত কসাই মো. লেদু বলেন, “বাজালিয়ার কসাই শাহজাহান মাংসগুলো কিনেছিল। আমাকে সেখান থেকে অর্ধেক দেয়ার কথা ছিল কিন্তু আজ বোমাং হাটের সপ্তাহিক দিন না হওয়ায় মাংস আমাকে দিয়ে দিয়েছে। জবাইয়ের আগে গরু মারা যায়নি। আমি গরুটির গোঙ্গানি শুনেছি।” ছদাহা ইউপি চেয়ারম্যান মোসাদ হোসেন চৌধুরী বলেন, “সকালে বাজালিয়া থেকে কয়েকজন লোক ফোন করে জানান যে বাজালিয়ায় একদিন আগে মারা যাওয়া গরুর মাংস দস্তিদার হাটে বিক্রি হচ্ছে। খবর পেয়ে আমি তাৎক্ষণিকভাবে দস্তিদার হাটে এসে মাংস বিক্রি বন্ধ করে দিই এবং ইউএনওকে ফোন করে জানাই।” পরে তিনি ভেটেরিনারি সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদকে পাঠালে তিনি মাংসগুলো দেখে পরীক্ষার জন্য সামান্য অংশ নিয়ে বাকিগুলো মাটির নিচে পুঁতে ফেলার নির্দেশ দেন। চেয়ারম্যান আরো জানান, মাংস মাটির নিচে পুঁতে ফেলার পাশাপাশি তাদের দোকানটি বন্ধ করে দিয়েছেন। সাতকানিয়া উপজেলা ভেটেরিনারি সার্জন ডা. আবুল কালাম আজাদ বলেন, “আমি যখন দোকানে পৌঁছি তখন মাংস থেকে পানি ঝরছিল। মাংসের রং দেখে মনে হয়েছে এগুলো খাবারের অযোগ্য। ল্যাবে পরীক্ষার জন্য কিছু মাংস আনা হয়েছে। অবিক্রিত বাকি মাংসগুলো মাটির নিচে পুঁতে ফেলা হয়েছে। তবে এর আগে তারা কিছু মাংস বিক্রি করেছে।” তিনি আরো জানান, মাংস বিক্রেতাদের নাম-ঠিকানা রাখা হয়েছে।