চট্টগ্রামের দক্ষিণ বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসের শ্রীমাই বিটের বোটম্যান (নৌকা চালক)এর বিরুদ্ধে নানান অভিযোগ উঠছে। ভুয়া সনদে ঘুষ দিয়ে চাকুরী আবার চাকুরী না করেও নিয়মিত বেতন উত্তোলনসহ কাঠ পাচার ও চাঁদাবাজির অভিযোগ পাওয়া গেছে। ওই বোটম্যান হলেন বন বিভাগের কর্মচারী আবদুল হালিম। সে বাঁশখালী উপজেলার কালিপুর ইউনিয়নের গুনাগরি ফকির পাড়া গ্রামের জামাল উদ্দীনের পুত্র বলে জানা গেছে।
জানা যায় বন বিভাগের বোটম্যান (নৌকা চালক) বন বিভাগের নৌকা চালক মো. হালিমসহ কয়েক জনের বিরুদ্ধে হাসান কামাল নামের এক ব্যক্তি রামদাশ মুন্সির হাটে চাঁদাবাজির ঘটনায় গত ১৯ মে বাঁশখালী উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কাছে লিখিত অভিযোগও করেন।
সূত্রমতে , চট্টগ্রাম দক্ষিণ বন বিভাগের রেঞ্জ অফিসের অধিনে বোটম্যান হালিমের বিরুদ্ধে একাধিক চাঁদাবাজি, হত্যা, জবর দখলসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগেও রয়েছে। কাগজে কলমে বন বিভাগে চাকুরী করলেও বছরের পর বছর কর্মস্থলে না গিয়ে অবৈধভাবে বেতন ভাতা উত্তোলন করে আসছে। অফিসের কর্মকর্তা-কর্মচারিরা ও তার ভয়ে মুখ খোলার সাহস করছে না। হালিম বন বিভাগের বোটম্যান হলেও তার রয়েছে গ্রামের বাড়ি বাঁশখালীতে নিজস্ব একটি সন্ত্রাসী বাহিনী। ওই বাহিনী দিয়ে হাট বাজারে চাঁদাবাজি, দখল বাণিজ্য, আশেপাশে করাত কল, কাঠ ব্যবসায়ী, ফার্ণিচারের দোকান ও ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে নিয়মিত চাঁদা আদায়সহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত থাকার অভিযোগ রয়েছে।
অনুসন্ধানে জানা গেছে, বন বিভাগের কর্মচারী মোহাম্মদ হালিম বিএনপি জামায়াত জোট সরকারের সময়ের বন ও পরিবেশ প্রতিমন্ত্রী জাফরুল ইসলাম চৌধুরীর সহযোগিতায় ২০০৪ সালের দিকে হালিম বোটম্যান পদে চাকুরী পান। এই পদের জন্য ৮ম শ্রেণি পাশ বাধ্যতামুলক হলেও বোর্টম্যান হালিম এলাকায় কোন প্রাইমারী পাশ করেছে তার কোন প্রমান পাওয়া যায়নি। চাকুরীতে যোগদানের সময় বাঁশখালী কোকদন্ডী গুনাগরি উচ্চ বিদ্যালয় থেকে ৮ম শ্রেণি পাসের যে সার্টিফিকেট দেয়া হয়েছে তাও ভুয়া বলে স্থানীয়রা জানান।
চাকুরী শুরু থেকে যেখানে কাজ করেছেন সেখানে বিভিন্ন অনিয়ম দুর্নীতি ও অপরাধের সাথে জড়িয়ে পড়ার অভিযোগ রয়েছে। বন বিভাগের কর্মচারী হালিম ইতোমধ্যে তার গ্রামের বাড়ির পূর্ব পাশে ৬ গন্ডা , পশ্চিম গুনাগরী প্রাইমারী স্কুলের পাশে ৮ গন্ডা, বাঁশখালী কলেজের পাশেও বেশ কিছু জমি নিজের নামে ক্রয় করেছেন।এ ছাড়া নামে বেনামে একাধিক দোকান, বাসা বাড়ি, ব্যবসা প্রতিষ্ঠানসহ কয়েক কোটি টাকার অবৈধ সম্পদের তথ্য পাওয়া গেছে। এ বিষয়ে বাঁশখালী রামদাশ মুন্সির হাটের ইজারাদার হাসান কামাল বলেন, হালিম বন বিভাগের চাকুরী করে বলে দাবি করলেও দিনরাত ২৪ ঘন্টা বাঁশখালীতে থাকেন। পুরো বছর জুড়ে বাঁশখালীতে থেকে কিভাবে পটিয়ায় চাকুরী করে ? হালিম বাঁশখালীতে চাঁদাবাজিসহ বিভিন্ন অপরাধের সাথে জড়িত। এলাকার লোকজনকে চাকুরী ছেড়ে দিয়েছে বলে জানালেও নিয়মিত অবৈধভাবে বেতন ভাতা তুলছে বছরের পর বছর।
এ বিষয়ে বন বিভাগের কর্মচারী মো. হালিমের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, আপনারা পারলে আমার চাকুরী খেয়ে ফেলেন। ভুয়া সনদ ও ঘুষ দিয়ে চাকুরী নেয়ার বিষয়ে বলেন এই রকম হাজার হাজার লোক রয়েছে। আমার চাকুরী গেলে তাদেরও যাবে। কর্মস্থলে অনুপস্থিত থেকে বেতন ভাতা তোলার প্রসঙ্গে বলেন, শ্রীমাই বন বিভাগের অফিসটি দুরত্ব হওয়ায় নিয়মিত আসা যাওয়া সমস্যা থাকায় কম যাওয়া হয় বলে স্বীকার করেন।
০১৮৩১ ১৮৬৭৪৪ এই নাম্বার থেকে নুরুল ইসলাম পরিচয়ে এক ব্যাক্তি ফোন করে বলেন আমি ৬ রোজা রেখেছি, গাড়ী একসিডেন্ট করে মরার জন্য বদ দোয়া করছি। প্রথমে হালিমের পক্ষে পরে বিপক্ষে অকথ্য ভাষায় সাংবাদিক ও এই প্রতিবেদককে গালাগালি করে বলেন জনৈক দেলোয়ার ও হাসান কামাল গং রা এসব করছে। এ সংবাদের সাথে ০১৮৩১ ১৮৬৭৪৪ নাম্বার থেকে নুরুল ইসলাম পরিচয়ে কে এই ব্যাক্তি ? কি তার মতলব ? সাংবাদিকদের গালমন্দ করার কারণ ও রহস্য কোথায় ? নুরুল ইসলাম দাবী করে বলেন সংবাদপত্র অফিসে কথা বলার জন্য আবদুল হালিম বলেছে। নুরুল ইসলাম বিষয়ে আবদুল হালিম বলেন, আমি কাউকে এই বিষয়ে কিছু বলেনি বরং নুরুল ইসলাম কোন নাম্বার থেকে কথা বলেছে সেটা জেনে নেন।