কোভিডের দ্বিতীয় ঢেউয়ে বিপর্যস্ত ভারতকে সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে গুগল, ফেসবুক, মাইক্রোসফট, অ্যাপল, অ্যামাজন এর মতো বিশ্বখ্যাত প্রতিষ্ঠানগুলো। অক্সিজেন এবং ভেন্টিলেটর সরবরাহ থেকে শুরু করে স্বাস্থ্য খাতে প্রয়োজনীয় অন্যান্য সরঞ্জামাদি কিংবা প্রযুক্তিগত সেবা- সর্বক্ষেত্রেই সহায়তা করবেন বলে জানিয়েছেন প্রতিষ্ঠানগুলোর প্রধান কর্মকর্তাগণ।
ভারতের সহায়তায় ইতোমধ্যে ১০০ টি ভেন্টিলেটর জোগাড় করে শীঘ্রই তা দেশে আমদানি করা হবে বলে জানিয়েছেন ‘অ্যামাজন ইন্ডিয়া’ কর্তৃপক্ষ। এক্ষেত্রে, আগামী দু সপ্তাহের মধ্যে ভেন্টিলেটর গুলো দেশে এনে, সেগুলোর সর্বোচ্চ ব্যবহার নিশ্চিত করতে ভারতের স্বাস্থ্য এবং পরিবার মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে বলে গত ২৭ এপ্রিল, মঙ্গলবার একটি ব্লগ পোস্টের মাধ্যমে জানায় তাঁরা।
যত শীঘ্রই সম্ভব, সাহায্য গুলো সরকারের কাছে পৌছে দেয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন অ্যামাজন এর কান্ট্রি হেড অমিত আগারওয়াল।
এদিকে দশ মিলিয়ন মার্কিন ডলার দান করছেন জানিয়ে ফেসবুকের প্রধান নির্বাহী মার্ক জুকারবার্গ বলেছেন, তাঁর সংস্থা ভারতে দুর্গতদের সেবায় ইউনিসেফের সঙ্গে মিলে কাজ করবে।
বিশ্ববিখ্যাত প্রতিষ্ঠান অ্যাপল এর সিইও টিম কুকও ভারতীয়দের সেবায় ত্রাণ সহায়তা পাঠাবেন বলে টুইট করেছেন।
তাছাড়া টেক জায়ান্ট গুগল এবং মাইক্রোসফট উভয় কোম্পানীরই প্রধান নির্বাহী ভারতীয় বংশোদ্ভুত। মাতৃভূমির দুর্দিনে উভয়েই এগিয়ে এসেছেন স্বীয় অবস্থান থেকে।
ভারতে দুর্গতদের সেবায় ‘গিভ ইন্ডিয়া’, ইউনিসেফ এবং অন্যান্য সেবা দানকারী সংস্থা সমূহকে ১৩৫ কোটি টাকা বরাদ্দের ঘোষণা দিয়েছেন গুগলের প্রধান নির্বাহী সুন্দর পিচাই।
অন্যদিকে অক্সিজেন ডিভাইস কেনার জন্য ভারত সরকারকে তহবিল দেয়ার ঘোষণা দিয়েছেন মাইক্রোসফট এর প্রধান নির্বাহী সত্য নাদেলা। ভারতের দুর্দিনে এগিয়ে এসেছে মোবাইল কোম্পানী ‘ওপ্পো’ও। ইন্ডিয়ান রেড ক্রস সোসাইটি এবং উত্তর প্রদেশ সরকারকে ৪.৩ কোটি রুপী সমমূল্যের ১০০ টি অক্সিজেনেটর এবং ৫০০ টি শ্বাসযন্ত্র উপহার দিবে। তাছাড়া দিল্লী পুলিশকে দেড় কোটি সমমূল্যের ওপ্পো ব্র্যান্ডের স্বাস্থ্য পর্যবেক্ষণ যন্ত্রও উপহার দিবে বলে জানিয়েছে তারা।
ত্রাণ সহায়তার ঘোষণা দিয়েছে ওপ্পোর সহযোগী ব্র্যান্ড ভিভোও। সরকারী তহবিলে দু কোটি রুপী সহায়তা প্রদানের অঙ্গীকার করেছে তাঁরা। ৮ কোটি রুপি প্রদান করবে ভারতীয় আর্থিক প্রতিষ্ঠান ওয়াজির এক্স।
তাছাড়া ছোট-বড় অনেক কোম্পানী ভারতের সহযোগিতায় এগিয়ে আসছে এবং ত্রাণ বা অর্থ বরাদ্দের ঘোষণা ইতোমধ্যে দিয়েছে। এমন এক সময়ে প্রতিষ্ঠান গুলো ভারতের সাহায্যে এগিয়ে আসছে, যখন কোভিড পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রীতিমতো হিমশিক খেতে হচ্ছে দেশটির।
বিশ্বে করোনা ভাইরাস সংক্রমণের নতুন কেন্দ্র হয়ে উঠেছে ভারত। প্রতিদিনই করোনার সংক্রমণ এবং মৃত্যুতে নতুন রেকর্ড তৈরী হচ্ছে সেখানে। সাম্প্রতিক তথ্য বিশ্লেষণ করলে দেখা যায়, ভারতে করোনায় দৈনিক সাড়ে তিন লক্ষাধিক মানুষ আক্রান্ত এবং প্রায় তিন হাজার মানুষ মৃত্যুমুখে পতিত হচ্ছেন। চারিদিকে বিরাজ করছে থমথমে অবস্থা।
তাই দেরীতে হলেও, প্রতিষ্ঠানগুলোর এগিয়ে আসার বিষয়টিকে স্বাগত জানিয়েছে দেশটির প্রগতিশীল অংশ এবং বোদ্ধাগণ।