1. admin@purbobangla.net : purbobangla :
বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ০৮:১৬ অপরাহ্ন
ব্রেকিং নিউজ :
সন্দ্বীপে পরকীয়ার অভিযোগ তুলে স্ত্রীকে শ্বাসরোধে হত্যা অভিযুক্ত স্বামী গ্রেফতার  চট্টগ্রামে র‌্যাবের নাম ভাঙিয়ে চাঁদাবাজি, গ্রেফতার ৪ চট্টগ্রামের বিভিন্ন মহাসড়কে অবৈধ গাড়ির অরাজকতা বন্ধ করতে আবারো বিআরটিএ’র অভিযান আমি আজ কথা দিচ্ছি  আপনাদের একা রেখে পালিয়ে যাব না, সুখে দুঃখে আপনাদের পাশে থাকব, আমি আপনাদের এই ভালোবাসার প্রতিদান দিতে চাই- ওয়াসিকা চট্টগ্রামের গুরুত্বপূর্ণ সড়কে বিআরটিএ’র সাঁড়াশি অভিযান, জরিমানা অর্ধলাখ মে মাসেও থাকবে তীব্র গরম, তাপমাত্রা ছাড়াতে পারে ৪৪ ডিগ্রি সব স্কুল-কলেজ ৭ দিন বন্ধ ইসরাইলি মন্ত্রীর টুইটকে ঘিরে তোলপাড় সীতাকুণ্ডে ৫টি চোরাই গরু ১টি পিকাপ একটি দেশী অস্ত্রসহ গ্রেফতার ৩ জন বিশ্বের প্রভাবশালীদের তালিকায় আলিয়া

ধোপাজান নদীতে গভীর রাতে পুলিশের অভিযান : ১৪ টি বালি ও পাথরবাহী নৌকা আটক

পূর্ব বাংলা ডেস্ক
  • প্রকাশিত সময়ঃ শনিবার, ১০ এপ্রিল, ২০২১
  • ৪০০ বার পড়া হয়েছে

আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ থেকে 

সুনামগঞ্জ সদর উপজেলার সুরমা ইউনিয়নের ধোপাজান চলতি নদীর মুখে অভিযান চালিয়ে ১৪টি বালি  ও পাথরবাহী ইঞ্জিন নৌকা ও বলগেড আটক করেছে পুলিশ। ৮ এপ্রিল বৃহস্পতিবার দিবাগত ১২ টা থেকে ভোর পর্যন্ত অভিযান চালিয়ে এ নৌকাগুলো আটক করা হয়। ধোপাজান নদীর অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্পের দায়িত্বরত এসআই কানাইলাল চক্রবতৃী ও সঙ্গীয় পুলিশ ফোর্স জীবনের ঝুকি নিয়ে গভীর রাতে এ অভিযান পরিচালনা করেন। এক পর্যায়ে তাদের সাহায্যার্থে এগিয়ে আসে সদর মডেল থানার এসআই মালেক এর নেতৃত্বে আরেক দল পুলিশ।
প্রত্যেক্ষদর্শীরা জানান,বৃহস্পতিবার রাত ১২টার আগে হঠাৎ করে কালবৈশাখী ঝড় তুফান ও বজ্রপাতসহ বৃষ্টি শুরু হওয়ার সুযোগে ধোপাজান চলতি নদীর ভেতরে সীমান্ত সংলগ্ন জিরো পয়েন্ট এলাকা হতে জেলা প্রশাসনের বিধি নিষেধ অমান্য করে চোরাইভাবে অবৈধ পন্থায় বালি পাথর উত্তোলন করে সদর উপজেলার জাহাঙ্গীর নগর ইউনিয়নের কাইয়ারগাঁও,ডলুরা,সুরমা ইউনিয়নের হুরারকান্দা,বালাকান্দা,সাহেব নগর এবং বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সলুকাবাদ ইউনিয়নের জিনারপর,ভাদেরটেক ও মনিপুরিহাটি গ্রামের বালু পাথর ব্যবসায়ীরা মুহুর্তের মধ্যে প্রায় ২৫টি বালু পাথরবাহী নৌকা স্থানীয় পুলিশ ক্যাম্পের বিধি নিষেধ অমান্য করে দ্রুতবেগে ফিল্মি স্টাইলে নদী হতে বের করে সুরমা নদীতে এসে উজানের দিকে নিয়ে যায়। এ সময় দায়িত্বরত পুলিশ দল চরম অসহায় অবস্থায় পড়ে যায় বিপাকে। একদিকে অন্ধকার রাত্রিতে প্রবল কালবৈশাখী ঝড়ের ও শিলাবৃষ্টির মধ্যে সীমিত সংখ্যক পুলিশ সদস্যদের জীবনের নিরাপত্তা অন্যদিকে মাত্র একটি ওয়াটার বুটে দিগবিদিক ছুটাছুটি করতে গিয়ে পলায়নরত মালবাহী নৌকাগুলো আটক করতে দিশেহারা হয়ে পড়ে পুলিশ। অন্যদিকে বুকে বজ্রপাত পড়লে পড়ুক আর পুলিশ যত বাধাই দেয়া হউক না কেন তারপরও বোঝাই করা নিষিদ্ধ মালামাল নিয়ে যে কোন মূল্যে ধোপাজান নদী হতে বের হয়ে সুরমা নদী পাড়ি দিয়ে উজানের দিকে যাবেই এ দৃঢ় ঝুঁকির মধ্যে ঐ বালি পাথরবাহী নৌকাগুলো সকল বাঁধা উপেক্ষা করে বেরিয়ে যায়। ঘটনাটি জানতে পেরে সদর থানার ওসি মোঃ শহীদুর রহমানের নির্দেশে এসআই মালেকের নেতৃত্বে একদল পুলিশ ও সাংবাদিক আল-হেলালের নেতৃত্বে ইব্রাহিমপুর ও সদরগড় গ্রামের একদল যুবক রাতের বেলা ধোপাজান নদীতে পুলিশের সাহায্যার্থে ছুটে যান। এক পর্যায়ে সকলের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় প্রায় ১১টি নৌকা আটক করা হয়। আটককৃত নৌকাগুলো বর্তমানে সুনামগঞ্জ শহর পুলিশ ফাড়ির সামনে সুরমা নদীতে সদর মডেল থানা পুলিশের হেফাজতে জব্দ রাখা হয়েছে। এগুলো হচ্ছে ফজলু মিয়ার মালিকানাধীন এমপি অপূর্ব নৌপরিবহন,তানহা এন্টারপ্রাইজ,জুবেল এন্টারপ্রাইজ,কাইয়ারগাঁও গ্রামের ফারুক এর মালিকানাধীন জিহাদ এন্টারপ্রাইজ-২, রতারগাঁওয়ের মোশাররফ মিয়ার মালিকানাধীন ফরহাদ ট্রান্সপোর্ট ক্যারিয়ার-১,ডলুরা গ্রামের মনফর আলীর মালিকানাধীন আরাফাত এন্ড রিফাত নৌ পরিবহন,জিনারপুরের সোহেল মিয়ার মালিকানাধীন ফয়সল নৌ-পরিবহন ৪,প্রোপাইটর আমির আলির মালিকানাধীন আশিক এন্টারপ্রাইজ,ডলুরা গ্রামের আফসর উদ্দিন ও মোজাম্মেল হকের মালিকানাধীন মায়ের দোয়া এন্টারপ্রাইজ,বীর মুক্তিযোদ্ধা নাজিম উদ্দিনের মালিকানাধীন ভাই ভাই নৌ পরিবহন-২,বালাকান্দার ময়না মিয়ার মালিকানাধীন লিয়ন এন্ড নিহান নৌ পরিবহন,ডলুরা গ্রামের শহীদ মিয়ার মালিকানাধীন শুভ নৌ পরিবহন-৩ ও মালিকবিহীন বিসমিল্লাহ-১ নৌ পরিবহন।

শুক্রবার বিকেলে শহর পুলিশ ফাড়ির সামনে সুরমা নদীতে গিয়ে ১৪ টি মালবাহী অবৈধ নৌ-পরিবহন দেখতে পাওয়া যায়। ৭ এপ্রিল বুধবার ধোপাজান নদীতে পুলিশের হাতে আটক ছিল ফরহাদ ট্রান্সপোর্ট ক্যারিয়ার ও জিনারপুরের ফয়ছলের মালিকানাধীন হক নৌ পরিবহন নামের আরো ৩টি বালি পাথরবাহী নৌকা,কাইয়ারগাঁও গ্রামের হযরত আলী (মোবাইল-০১৭৪৯-৩৬১২৫৯) পরিচালিত একটি বালিপাথরবাহী নৌকা, জয়নগর বাজারের মুজিবুর রহমান ও সাচনা রামনগরের আমির হোসেন (মোবাইল ০১৭৩৬-৩৮৯০৯৭) এবং তাদের সুকানী (চালক) কবির মিয়ার মালিকানাধীন (০১৭৪৯-৩১৪৭২৪) মেসার্স হৃদয় এন্টারপ্রাইজ,ভাদেরটেক এর তৈয়বুর রহমান বাবুল,হুরারকান্দার রফিকুল এর নেতৃত্বে প্রায় ১২টি অবৈধ মালবাহী নৌকা পুলিশের বাধা উপেক্ষা করে ঐ রাতে ধোপাজান নদী হতে বের হয়ে যায়।
এসআই কানাইলাল চক্রবর্তী নৌকা আটকের সত্যতা স্বীকার করে বলেন,বৃহস্পতিবার রাতে আমরা জীবনের ঝুকি নিয়ে ১১টি বালি পাথরবাহী নৌকা আটক করেছি। এর আগের ৩টিসহ মোট ১৪টি নৌকা বর্তমানে থানা পুলিশের হাতে জব্দ আছে। এদিকে পালিয়ে যাওয়া বালি পাথরবাহী নৌকাগুলো যেকোন মূল্যে আটক করা হবে বলে চ্যালেঞ্জ করেছেন ওসি মোঃ শহীদুর রহমান। তিনি বলেন,যেসব নৌকা পালিয়ে গেছে সেগুলো আমরা আটক করার চেষ্টা করবো। ইতিমধ্যে আটককৃত বালি পাথরবাহী নৌকাগুলো জেলা ও উপজেলা প্রশাসন এবং জেলা পুলিশ সুপার মহোদয়ের সিদ্বান্ত সাপেক্ষে আইনানুগ ব্যবস্থা গ্রহন করা হবে।
অন্যদিকে টুকেরঘাট বাজার নৌ পুলিশ ফাড়ির এসআই রকিবুল ইসলামের নেতৃত্বে আরেকদল পুলিশ অবৈধ বালিপাথর পরিবহনের দায়ে আরো ৩টি নৌকা আটক করেন। আটককৃত নৌকার মালিক চালকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে তিনি দায়ের করেছেন বালু মহাল আইন ২০১০ তৎসহ বাংলাদেশ দন্ডবিধি আইনের ৪৩১ ধারায় মামলা নং ৬ তাং ৭/৪/২১ ইং দায়ের করেছেন। এসআই রকিবুল ইসলাম জানান,ঐ মামলায় এজাহার নামীয় ৭ জনের মধ্যে ৩ জনকে গ্রেফতার করা হয়েছে।
এদিকে ধোপাজান নদীতীরের স্থানীয় বাসিন্দারা বলেন,রাতের আধারে চোরাই ব্যবসায়ীরা অবৈধভাবে বালি পাথর উত্তোলন করে এবং বড় বড় বলগেড ও ইঞ্জিন নৌকায় বালি পাথর বহন করে এলাকার প্রাকৃতিক পরিবেশ বিনষ্ট ও নদী ভাঙ্গন অব্যাহত রেখেছে। আটককৃত এসব নৌকাগুলো একাধিকবার আটক এবং মোবাইল কোর্টের আওতায় জরিমানা করা হলেও বন্ধ হচ্ছেনা অবৈধ বালি পাথর উত্তোলন। তাই বারংবারের অভিযানে আটককৃত নৌকাগুলোকে আইনের আওতায় নিয়ে সর্বোচ্চ দন্ড নিশ্চিত করার জন্য এলাককাবাসী জেলা প্রশাসনের কঠোর হস্তক্ষেপ কামনা করেছেন। বিষয়টি ভেবে দেখা হবে বলে নিশ্চিত করেছেন সুনামগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোঃ জাহাঙ্গীর হোসেন।

শেয়ার করুন-

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

More News Of This Category
© All rights reserved © 2021 purbobangla