আল-হেলাল,সুনামগঞ্জ
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে হেফাজতে ইসলামের যুগ্ম মহাসচিব মামুনুল হককে নিয়ে কটুক্তির অভিযোগে সুনামগঞ্জের শাল্লায় ঝুমন দাস আপন নামের এক যুবককে আটক করেছে পুলিশ। কটুক্তির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের হবিবপুর নোয়াগাঁও গ্রামে হিন্দু স¤প্রদায়ের বেশ কিছু বাড়িঘর ভাংচুর করেছে তৌহিদী জনতা ও হেফাজতে ইসলামের নামে একশ্রেণির দুর্বৃত্তরা। ঘটনাটি জানতে পেরে র্যাব এর মহাপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন ও জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিপিএম ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন। তাদের নির্দেশে ঐ এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
হবিবপুর ইউনিয়নের চেয়ারম্যান বিবেকানন্দ মজুমদার বকুল বলেন, গ্রামের বেশ কিছু বাড়ি ঘরে হামলার ঘটনা ঘটেছে। পুলিশ সুপার ঘটনাস্থলে অবস্থান করছেন। শাল্লা থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা নাজমুল হক জানান, ফেইসবুকে হেফাজত ইসলামের কেন্দ্রীয় নেতা মামুনুল হককে নিয়ে বাজে মন্তব্য করে উপজেলার হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের গোপেন্দ্র দাসের পুত্র ঝুমন দাস আপন। বিষয়টি স্থানীয়ভাবে ভাইরাল হলে পুলিশ জনতার সহযোগিতায় ১৬ মার্চ মঙ্গলবার রাতেই শাসখাই বাজার থেকে ঝুমন দাসকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। কটুক্তির ঘটনাকে কেন্দ্র করে বুধবার সকালে একদল দুর্বৃত্ত ধর্মীয় উন্মাদনা সৃষ্টি করে হামলা চালিয়ে নোয়াগাঁও গ্রামের বেশকিছু বাড়িঘর ভাংচুর করে। বিষয়টি স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় অবগত হওয়ার সাথে সাথেই উগ্রবাদীদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে।
নামপ্রকাশ না করার শর্তে হেফাজতে ইসলামের স্থানীয় নেতাকর্মী সমর্থকরা বলেন,কটুক্তিকারী ঝুমন দাস আপন এর হবিবপুর ইউনিয়নের নোয়াগাঁও গ্রামের আশেপাশের বিক্ষুব্ধ মুসলিম জনতা বুধবার ভোরের আলো ফুটতেই দলে দলে জমায়েত হতে থাকে। লাঠিসোঁটা উঁচিয়ে শ্লোগানে শ্লোগানে প্রকম্পিত হয়ে ওঠে গ্রামের শান্ত মেঠোপথ। আতঙ্ক ছড়িয়ে পড়ে নোয়াগাঁও গ্রামের আশপাশ এলাকায়।
প্রত্যেক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন শাল্লা উপজেলা চেয়ারম্যান,নির্বাহী কর্মকর্তা,থানার ওসি ছুটে না আসলে বড় ধরনের কিছু ঘটতে পারতো।
এ ব্যাপারে শাল্লা উপজেলা চেয়ারম্যান চৌধুরী আল আমিন চৌধুরী বলেন,বুধবার সকালে স্থানীয় মুসল্লীয়ানরা বিক্ষুব্ধ হয়ে নোয়াগাঁও গ্রামে মিছিল সহকারে হামলা ও ভাংচুর চালানোর খবর পেয়ে আমরা দ্রæত ঘটনাস্থলে পৌছে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছি। শাল্লার সম্প্রীতির বন্ধনকে বিনষ্ট করতে কাউকে সুযোগ দিব না।
সুনামগঞ্জ জেলা পুলিশ সুপার মিজানুর রহমান বিপিএম বলেন,নোয়াগাঁও গ্রামে হামলা ও ভাংচুরের ঘটনায় শাল্লা থানায় আজ বৃহস্পতিবার সকালে মামলা দায়ের করা হয়েছে। আমরা আসামীদের গ্রেফতারের চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছি এবং ঘটনাস্থলে অস্থায়ী পুলিশ ক্যাম্প বসানো হয়েছে।